|
|
|
|
|
|
|
|
আমার বাবা ২০০৫-এর নভেম্বরে এবং মা ২০০৯-এর ডিসেম্বরে মারা গিয়েছেন। আমরা তিন বোন ও তিন ভাই। বোনেরা সবাই বিবাহিত। বাবা-মা মারা যাওয়ার সময়ে টাকা-পয়সা, গয়না ও বাসনপত্রের জন্য কোনও রকম উইল বা দানপত্র করে যাননি। ফলে, বর্তমানে ভাইরা বোনেদের ওই সম্পত্তির কোনও রকম ভাগ দিতে চাইছে না। তাই আমার প্রশ্ন
১) বোনেরা কি সম্পত্তির ভাগ পাওয়ার অধিকারী?
২) ভাগ না-পেলে তার জন্য কী আইনি ব্যবস্থা আছে?
কনক ভাদুড়ী
১) আপনার প্রথম প্রশ্নে উত্তরে জানাই, বর্তমান উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তাঁদের নামাঙ্কিত সম্পত্তি উপর ছেলে ও মেয়েদের সমান অধিকার। কাজেই আইনি ভাবে বোনেরা অবশ্যই ওই ভাগ পাওয়ার অধিকারী।
২) বোনেদের যদি ভাগ না-দিয়ে বঞ্চিত করা হয়, তবে ‘সাকসেশন সার্টিফিকেট’ চেয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে টাকা-পয়সা, গয়না ইত্যাদির সমান ভাগ অবশ্যই পাবেন।
আসলে উইল বা দানপত্র করে বাবা-মা কাউকে সম্পত্তি দিয়ে গেলে সেটা মানতেই হত। কিন্তু এখানে যখন তাঁরা কোনও রকম উইল বা দানপত্র কিছুই করে যাননি, তখন ভাই ও বোনেরা প্রত্যেকেই সমান ভাগ পাবেন। ভাইরা ভাগ দিতে না-চাইলে বোনেদের আদালতের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
গত ২০০০ সালে মা তাঁর ছেলেকে সম্পত্তি দানপত্র করে দিয়েছিলেন। কোর্টে সেটির রেজিস্ট্রি এবং মিউটেশনও করা হয়েছে। পরে ২০১১ সালে ওই একই সম্পত্তি মা উইল করে তাঁর মেয়েকে দিতে পারেন কি?
চন্দ্রিমা পোদ্দার
একবারেই না। একই সম্পত্তি এ ভাবে দু’বার দেওয়া যায় না। একবার উইল করে কাউকে সম্পত্তি দেওয়া হয়ে গেলেও, পরে যত বার ইচ্ছা তা প্রত্যাহার কিংবা বাতিল করে ফের নতুন উইল তৈরি করতে পারেন সম্পত্তিদাতা। এটি কার্যকর হয় তাঁর মৃত্যুর পর। কিন্তু রেজিস্টার্ড দানপত্র সম্পাদন করার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়। এবং সম্পত্তি হস্তান্তরিত হয়ে যায়।
অবশ্য তাঁকে দিয়ে জোর করে দানপত্র করানো হয়েছে, এই অভিযোগে মা আদালতে যেতে পারতেন। দানপত্র কার্যকর হওয়া আটকানোর সেটাই একমাত্র উপায় হলেও হতে পারত। কিন্তু সেই যুক্তি প্রতিষ্ঠার জন্যও এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ১১ বছর আগে দানপত্র করা হয়েছিল। তাই আগে আদালতে না-গিয়ে, এত দিন পর এই অভিযোগ আনলে সেটা আইনের যুক্তিতে টেকানো কিন্তু মুশকিল হবে।
(আইনি পরামর্শ: জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়)
আমি ৪ লক্ষ টাকা শেয়ারে লগ্নি করতে চাই। বর্তমান দরে কোন কোন সংস্থার শেয়ার কিনলে লাভের মুখ দেখব সেই বিষয় পরামর্শ দিলে খুব ভাল হয়।
জহর লাল রায়, রাসেল স্ট্রিট
এই পাতায় সংস্থা-নির্দিষ্ট কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে ভাল শেয়ার বেছে নেওয়ার উপায় বলে দিতে পারি আপনাকে।
শেয়ার বাজারে ৪ লক্ষ টাকা লগ্নি করতে হলে অন্তত ১০-১২টি সংস্থা বেছে নিন চার-পাঁচটি শিল্প ক্ষেত্র থেকে। দেখবেন যেন সংস্থাগুলির শেয়ার পিছু আয় (ইপিএস) সন্তোষজনক হয়। সংস্থার নিট লাভ করার সম্ভাবনা কতটা, সেটাই যাচাই করা হয় এর মাধ্যমে। শেয়ার পিছু আয় হিসাব করার জন্য প্রথমে সংস্থার মোট আয় থেকে লগ্নিকারীদের দেওয়া ডিভিডেন্ড বাদ দেওয়া হয়। তার পর সেটিকে বাজারে সংস্থার মোট শেয়ার সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। এর থেকে বোঝা যায় সংস্থার মুনাফার কতটা অংশ প্রতিটি শেয়ারে বরাদ্দ হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, সংস্থার প্রাইস টু আর্নিং রেশিও অর্থাত্ পি/ই রেশিও দেখবেন। বাজারে কোনও সংস্থার শেয়ারের দামকে শেয়ার পিছু আয় দিয়ে ভাগ করে এটা হিসাব করা হয়। এর থেকে বোঝা যায় সংস্থা কতটা দামি। এ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে সংস্থাটি যে শিল্পের অন্তর্ভুক্ত, তার পি/ই রেশিও-ও দেখতে হবে। এ বার দু’টির তুলনা করুন। কোম্পানির পি/ই যদি ওই শিল্পের পি/ই-র থেকে কম হয়, তা হলে বাজারের দামে তা কেনার যোগ্য বলে ধরা উচিত।
একই ভাবে যাচাই করুন সংস্থার প্রাইস টু বুক ভ্যালু। কোনও সংস্থার শেয়ার কেনার অর্থ তার অংশীদার হওয়া। প্রাইস টু বুক ভ্যালু রেশিও হল, কোনও কারণে সংস্থাকে পাততাড়ি গুটোতে হলে, লগ্নিকারী তাঁর অংশীদারির সাপেক্ষে কত টাকা হাতে পাবেন, তার আনুপাতিক পরিমাপ। বুক ভ্যালু বলতে বোঝায় শেয়ার পিছু সংস্থার সম্পদ, যা ব্যালান্স শিটে দেখানো থাকে। দেখা হয়, সংস্থাটির আজকে যা শেয়ার দর, তা তার নিট সম্পদের অনুপাতে কতটা। এই রেশিও বিভিন্ন শিল্পের ক্ষেত্রে আলাদা হয়। তাই এ ক্ষেত্রেও সংস্থা যে-শিল্পের অন্তর্ভুক্ত, তার প্রাইস টু বুক ভ্যালু রেশিও দেখুন। বলা হয়, শিল্পের থেকে সংস্থার রেশিও কম হলেই ভাল।
এই সমস্ত তথ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক কালের তথ্য ও ব্যবসার ৫ বছরের ইতিহাস দেখুন। শেয়ার কিনতে বাজারের পড়তি সময়ের সুযোগ নেবেন। লগ্নি করবেন দীর্ঘমেয়াদে। বর্তমানে স্বল্পমেয়াদি লগ্নিতে লাভের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। |
(পরামর্শ: দেকো সিকিউরিটিজ-এর ডিরেক্টর অদিতি নন্দী) |
|
|
|
|
|