খয়রাশোল-কাণ্ড
এমন পরিস্থিতি হবে ভাবতেই পারিনি: অনুব্রত
নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এমনটা অপেক্ষা করছিল, ভাবতেই পারেননি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার বোলপুরে তিনি বলেন, “নিহত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং এই পরিস্থিতিতে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এমন পরিস্থিতি হবে ভাবতে পারিনি।”
এলাকার দাপুটে নিহত তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষকে শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সিউড়ি এবং খয়রাশোলে ক্ষোভ বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আগামী দিনে যাতে এহেন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিয়ে মঙ্গলবার ঘণ্টা দু’য়েক ‘রুদ্ধ দ্বার’ বৈঠক হয় বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে। শিল্পমন্ত্রী না থাকলেও ওই দিনের বিষয় নিয়ে বুধবারও তিন চার বার বৈঠক হয় বোলপুরে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা নেতৃত্বকে বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে এক রকমের ‘সতর্কও’ করেছেন শিল্পমন্ত্রী। প্রয়োজনে ব্লক নেতৃত্বকে জরুরি তলব করে এর বিহিত করার নির্দেশও দেন তিনি।
অশোক ঘোষ খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ লোকেরা বুধবার পাঁচড়ায় তৃণমূলের এই পার্টি অফিস ভেঙে দেন।
এর আগে মঙ্গলবার একটি পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন লোকজন। —নিজস্ব চিত্র
ওই বৈঠকে দলের জেলা সভাপতি, সহ-সভাপতি, জেলা সম্পাদক, লাভপুরের বিধায়ক এবং অনুব্রত বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরারাও উপস্থিত ছিলেন। বুধবার জেলার বেশ কিছু এলাকার নেতা কর্মী এবং দলের যুব নেতৃত্বকে নিয়ে মঙ্গলবারের ঘটনার একপ্রস্থ চুলচেরা বিশ্লেষণ হল বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে। দলীয় সূত্রে খবর, পুলিশের পাশাপাশি দলীয় স্তরে গোটা ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। জানানো হচ্ছে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। এও শোনা যাচ্ছে, জেলার সমস্ত ব্লক সভাপতিদের নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গেও খুব শীঘ্রই এক জরুরি বৈঠকের ভাবনা করছে জেলা নেতৃত্ব। দলের একাধিক নেতা এবং কর্মীর দাবি, “দলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ, ‘লাল সেলাম’ স্লোগান, এমনকী আক্রান্তের চেষ্টা, অন্তত অনুব্রত বিরোধী গোষ্ঠীর দলীয় কর্মী সমর্থকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নয় এটি। নিহত নেতা অশোক ঘোষকে সামনে রেখে এটি একটি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।” জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি মুখে না নিলেও, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও বুধবারের কয়েক দফা বৈঠকে জেলা সভাপতি অনুব্রতবাবু কিন্তু গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে দলের মহাসচিব এবং তাঁকে হেনস্থা করার বিষয়ে সিল মোহর লাগিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
তবে মঙ্গলবারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ অনুব্রতবাবু ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বুধবার অবশ্য রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে দলের জেলা সভাপতি বলেন, “আগেও বলেছি আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তবে মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা ন্যক্কারজনক। সিপিএম, কংগ্রেস এটা চক্রান্ত করে করিয়েছে। বামদুর্গে ধস নামায় ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সিপিএম চক্রান্ত করে এটা করেছে। তাতে সঙ্গ দিয়েছে কংগ্রেসই। এলাকায় আমাদের একের পর এক নেতা-কর্মীকে খুন করা হচ্ছে। ওরা ষড়যন্ত্র করে এমনটা করেছে।” দলের সহ-সভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “মঙ্গলবার গোটা ঘটনার সাক্ষী দলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবু। তিনি সমস্ত বিষয়টা দেখেছেন। দলীয় স্তরে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.