নিজেদের সিআইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার চেষ্টার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হল। মঙ্গলবার বিকালে রায়গঞ্জ থানার মহারাজাহাট এলাকা থেকে পুলিশ তাদের ধরেছে। ধৃতদের নাম, বিশ্বজিত্ পাল, অভিজিত্ পাল ও প্রদ্যোত চক্রবর্তী। বিশ্বজিত্ ও অভিজিত্ দুই ভাই। বাড়ি রায়গঞ্জের দেবীনগর কালীবাড়িতে। প্রদ্যোতের বাড়ি মহারাজহাট এলাকায়। ধৃতদের থেকে অশোকস্তম্ভ দেওয়া সিআইডির তিনটি নকল রাবার স্ট্যাম্প, একটি খেলনা নাইন এমএম পিস্তল, একটি ল্যাপটপ, ৩টি মোবাইল ও তিন জোড়া রবারের গ্লাভস উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিশ্বজিত্ ২০১১-এ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাশ করেছেন। তার ভাই অভিজিত্ বুনিয়াদপুরে একটি বেসরকারি কলেজে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র। প্রদ্যোত ২০১২ সালে মেঘালয়ের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোলে স্নাতক। বর্তমানে গৃহশিক্ষকতা করেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ভয় দেখানো ও প্রতারণার অভিযোগের মামলা শুরু করেছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, “তিন জন সিআইডিতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মহারাজাহাটের দুই যুবকের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশ জানাচ্ছে, স্কুল ও কলেজে প্রদ্যোত ও বিশ্বজিত্ সহপাঠী ছিলেন। প্রদ্যোতের সঙ্গে দেখা করার জন্য বিশ্বজিত্ মহারাজাহাট এলাকায় যেতেন। সেইসূত্রেই বিশ্বজিতের সঙ্গে কয়েক মাস আগে মহারাজাহাট এলাকার বাসিন্দা বাবাই দাস ও জয়ন্ত সিংহ নামে দুই বেকার যুবকের পরিচয় হয়। বিশ্বজিত্ ও প্রদ্যোত নিজেদের সিআইডি অফিসার বলে পরিচয় দেন। এমনকী, উদ্ধার হওয়ায় বিভিন্ন জিনিস পত্র দেখিয়ে তাদের প্রভাবিত করেন বলে অভিযোগ। এর পরে সিআইডি’র অফিসারের চাকরি দেওয়ার কথা বলে দু’জনের কাছে টাকা দাবি করেন। একটি নকল নিয়োগপত্র তৈরি করে দুই জনকে দিতে গিয়ে তিন জন ধরা পড়ে যান। জয়ন্তবাবু বলেন, “আমি ও বাবাইবাবু আগেই পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ওদের ছক বুঝে যাই। কিছু লোককে বিষয়টি বলা ছিল। এ দিন নিয়োগপত্র দিতে এলেই ওদের ধরা হয়।” থানার লক-আপে দাঁড়িয়ে বিশ্বজিত্ বলেন, “আমরা শিক্ষিত বেকার। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা খুলে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেছিলাম। বাবাইবাবু ও জয়ন্তবাবুকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিই। টাকা চাইনি।” তবে অভিজিত্ এবং প্রদ্যোতের দাবি, টাকার টোপ দেখিয়ে বিশ্বজিত্ তাঁদের ফাঁসিয়েছে। |