বোর্ড মিটিং-এ অনুমোদন না করিয়ে শুধুমাত্র মেয়র পারিষদ-এর বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েই শহরের বিভিন্ন পার্কিং জোনগুলির লিজের মেয়াদ অবৈধ ভাবে পুর কর্তৃপক্ষ বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ঘটনা। এ ব্যাপারে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম। গত বছর দরপত্র ডেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পার্কিং জোন ‘লিজ’ দিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। এক বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল মোট ১৩টি জোন। যার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ৩১ জুলাই। তবে নতুন করে টেন্ডার না-ডেকে ফের তিন মাসের জন্য মেয়াদ বাড়ান হয়েছে বলে অভিযোগ। জোন গুলি যাদের দায়িত্বে ছিল আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁরাই চালাবেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পুরবোর্ড নিজেদের ইচ্ছে মতো চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বামেরা। অভিযোগ মানতে নারাজ পার্কিং এর দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ শিখা রায়। তিনি বলেন, “মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ এখনই টেন্ডার করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ৩ মাস সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কী করার আছে?” তাঁর যুক্তি, মেয়াদ বৃদ্ধি না করলে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা টাকা তুলবে অথচ তা পুরসভা পাবে না।
পুরসভায় সমস্ত কাজই বেআইনি ভাবে চলছে বলে সরব হয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পূর্ত বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল। তিনি বলেন, “যারা বোর্ড মিটিং করতে পারেন না তাঁরা কী করে অন্য কাজ করবেন। এভাবে বোর্ড মিটিং ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। বেআইনি ভাবে তা করা হচ্ছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, এই পুর বোর্ড দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। শহরে রোজই প্রায় ৮ থেকে ১০ টি অবৈধ বিল্ডিং এর কাজ চলছে। সে দিকে কোনও নজর নেই কারও। পুরসভার আধিকারিকদের একাংশই জানান, মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নিয়ম মতো টেন্ডার ডেকে নতুন করে লিজ দিতে হবে। বোর্ড মিটিংয়ে তা পাশ করাতে হবে। অন্য দিকে নকল রসিদ বানিয়ে টাকা তোলা, বেশি টাকা তোলার মতো বিভিন্ন অভিযোগ পার্কিং নিয়ে প্রায়ই উঠছে। বিরোধীদের অভিযোগ, পার্কিং নয় এমন জায়গাতেও অবাধে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। সে সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টে মেয়াদ বাড়িয়ে নিজেদের লোকেদের সুবিধে করে দেওয়া হচেছ। ইতিমধ্যে পুরসভার নিয়ম না মেনে পার্কিংয়ের জন্য বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগে ৮ নম্বর জোনের পার্কিং ব্যবস্থার বরাত নিয়ে মামলা চলছে। ৭ নম্বর জোনেও সমস্যা রয়েছে। নুরুলবাবু বলেন, “যে ভাবে কাজকর্ম চলছে তার পুরোটাই বেআইনি। কিন্তু কাকে অভিযোগ জানাব? জানানোর মতো কেউই তো নেই পুরসভায়।” |