অনালোকিত স্কুলঘরেই শিক্ষার
আলো খুঁজে চলেছে পড়ুয়ারা
প্রায় ১৬০ জনের উপরে ছাত্রছাত্রী পড়ে হাট বাউড়িয়া প্রাথমিক স্কুলে। শিক্ষক রয়েছেন পাঁচ জন। দোতলা স্কুলটিতে রয়েছে পাঁচটি ক্লাসঘরও। প্রায় ৩ শতক জমির উপরে ১৯৮৪ সাল থেকে চলছে স্কুলটি। প্রথম থেকেই নিজস্ব বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না স্কুলটিতে। তবে সে সময়ে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা কম থাকায় কোনওমতে চালিয়ে নিতেন শিক্ষকেরা। কিন্তু পরবর্তীকালে স্কুলে ছাত্রছাত্রী বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সমস্যাও। এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি। গরমে ক্লাসের মধ্যে শিশুরা গলদঘর্ম হচ্ছে। একতলার তিনটি ঘরে আলোবাতাস দুই-ই কম। দিনের বেলাতেও অনেক সময়ে মোমবাতি জ্বেলে রাখতে হয়। তবে দোতলার ঘরে আলো-বাতাস তুলনায় বেশি।
সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এই স্কুলটি উলুবেড়িয়া পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প, মিড-ডে মিল প্রকল্প-সহ সমস্ত অনুদান পান তাঁরা। স্কুলের দৈনিক উপস্থিতির হারও খুব একটা কম নয়। বেশিরভাগই আশেপাশের শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়তে আসে এখানে। স্কুলেরই একজন শিক্ষক পার্থ পাল বলেন, “অন্ধকারে শিশুরা ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পারে না। এত কম বয়স থেকেই যদি ওদের অন্ধকারে পড়াশোনা করতে হয়, তা হলে ওদের দৃষ্টিশক্তিরও ক্ষতি হবে। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রতিদিনই অন্ধকারেই ক্লাস নিতে হয় আমাদের।”
উজ্জ্বল ভবিষ্যতের অপেক্ষায়। ছবি তুলেছেন সুব্রত জানা।
মোমবাতির খরচ জোগায় স্কুল। কিন্তু স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার ব্যাপারে কতটা উদ্যোগী তাঁরা? প্রধান শিক্ষক শ্রীমন্ত মণ্ডল বলেন, “বছর দু’য়েক আগে এলাকার সমস্ত প্রাথমিক স্কুলগুলিকে মহকুমাশাসকের দফতরে ডাকা হয়েছিল। সে সময়ে এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলাও হয়েছিল। তারপর আমাদের স্কুলের ক্ষেত্রে আর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি।” অন্য দিকে, রেশমা বিবি নামে এক অভিভাবক বলেন, “আমরা প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন করেছিলাম। বলেছিলাম, সকলে মিলে চাঁদা তুলে মাসিক বিদ্যুতের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করব। শিক্ষকদেরও এগিয়ে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু কিছুই হল না।”
কী বলছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুকুমার ঘোষ? তিনি বলেন, “স্কুলের বিদ্যুদয়ন পুরসভার এক্তিয়ারে পড়ে না। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছিল স্কুলের ফান্ড থেকে টাকার ব্যবস্থা করে সিইএসসিতে দরখাস্ত করতে। কিন্তু তিনি তা করেননি।” নিজের থেকে খরচ করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে স্কুলের আর্থিক সমস্যা আছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
পুরসভার বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক সুরজিৎ দাস বলেন, “প্রাথমিক স্কুলের বিষয় দেখে স্কুল শিক্ষা দফতর। তবু মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা স্কুলগুলিকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে যে এককালীন টাকা লাগে, সেটা দিয়ে সংযোগ নেওয়ার পরে আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা সেই টাকা স্কুলের ফান্ডে দিয়ে দেব। কিছু স্কুল এই ভাবে সংযোগ নিয়েছে। কিন্তু ওই স্কুল ব্যবস্থা নেয়নি।”
বিষয়টিকে নিয়ে হাওড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মালবিকা চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি ওই স্কুলে অবর শিক্ষা পরিদর্শককে পাঠাব। তিনি দেখে যা রিপোর্ট দেওয়ার দেবেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.