ঝাড়খণ্ডেও লুঠ হচ্ছে নদীর চর, পাচার বাংলাদেশে
ল একটু কমলেই নদীর চরে হাজির বালি-মাফিয়ারা। আইনকে ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে লরি ভরে চরের বালি লুঠ শুরু তাদের।
ঝাড়খণ্ডের জেলায় জেলায় ছবিটা একইরকম। জামশেদপুরের সুর্বণরেখা, লোহারডাগার কোয়েল, ধানবাদের বরাকর—এ ভাবেই প্রকাশ্যে দাপট চলছে দুষ্কৃতীদের। বালি পাচার হচ্ছে রাজ্যের নানা প্রান্তে, পড়শি রাজ্যে। কখনও সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশেও।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় নদী থেকে বালি উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সু্প্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র ছাড়া কেউ-ই ওই কাজ করতে পারবে না। নির্দেশের কথা জানিয়ে ঝাড়খণ্ডের জেলাগুলির ডেপুটি কমিশনার, এসপিকে চিঠি দিয়েছে পর্ষদ। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি।
পর্ষদ সূত্রের খবর, আইন অনুযায়ী, নদীর তীরে নির্দিষ্ট বালিঘাট ছাড়া অন্য জায়গা থেকে বালি তোলা অবৈধ। কিন্তু প্রতি দিন পূর্ব সিংভূমের সুবর্ণরেখা, খরকাই নদী থেকে বালি তোলা হচ্ছে। বালি-মাফিয়াদের ‘স্বর্গরাজ্য’ হয়ে উঠেছে বিষ্টুপুর, সাকচি, সীতারামডেরা, কদমা।
পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানার কাছে বরাকর নদী।
অবাধে চলছে বালি খাদান। মঙ্গলবার চন্দন পালের তোলা ছবি।
ছবিটা একরকম পশ্চিম সিংভূমেও। পর্ষদ জানিয়েছে, কুজু নদী থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০টি ট্রাক বোঝাই বালি তোলা হচ্ছে। লোহারডাগার কোয়েল, শঙ্খ নদীর তীরে প্রতিদিন দাঁড়াচ্ছে দেড়শো থেকে দু’শো ট্র্যাকটর। ধানবাদের টুণ্ডিতে দামোদর বা বরাকর নদীতেও প্রতিদিন একশো থেকে দু’শো ট্র্যাকটর বালি উঠছে।
নদী-সংলগ্ন এলাকার সুরক্ষার কারণে চর থেকে বালি তোলার জায়গা নির্দিষ্ট করেছে প্রশাসন। সে গুলি ‘বালিঘাট’ বলে পরিচিত। বালি তোলার জন্য ওইসব ঘাটগুলির ‘টেণ্ডার’ দেওয়া হয়। কিন্তু অবৈধ বালির উত্তোলনের জেরে সেই রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সরকারি সূত্রে খবর, বালি মাফিয়াদের ‘দৌরাত্ম্যে’ টেণ্ডারেও লাভ হচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেণ্ডারের বরাত পাচ্ছে দুষ্কৃতীরাই। ব্যবসায়িক বিবাদের জেরে হচ্ছে খুনও। নদী থেকে যতটা বালি তোলা হচ্ছে, অনুপাতে তত রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেকটা বেশি দামে বালি বিক্রি করে ওই মাফিয়ারা।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকুড় জেলায় একশো বর্গফুট বালি তোলার খরচ ৯১ টাকা। কিন্তু তা বিক্রি হয় বেশি দামে। মেলে না রসিদও।
আইন ভেঙে নদীর অন্য জায়গায় থেকেও বালি তোলে টেন্ডার-প্রাপ্ত দুষ্কৃতীরাপ্রতি গাড়ি বালি দেড় থেকে দু’ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গিরিডিতে বছর দু’য়েক বালিঘাটের টেণ্ডার হয়নি। সেখানে বেআইনিভাবেই নদী থেকে বালি উঠছে। সাঁওতাল পরগনার পাকুড় কিংবা সাহেবগঞ্জ জেলাতেও নির্বিঘ্নে ‘ব্যবসা’ চালাচ্ছে বালি-মাফিয়ারা। ওই দুই জেলাতেই রয়েছে গঙ্গা। ওই নদীর চরের বালির গুণগত মান অন্য নদীর তুলনায় ভালো। সাহেবগঞ্জের রাজমহলে গঙ্গা থেকে তোলা বালি পশ্চিমবঙ্গের ফরাক্কা হয়ে মিঠুপুর দিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশেও পাচার হচ্ছে।
অভিযোগ উঠছে, পুলিশ-প্রশাসনের ঢিলেঢালা মনোভাবেই ওই দুষ্কৃতীদের সাহস বেড়ে চলেছে।
রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমারের কথায়, “অবৈধভাবে বালি তোলার কোনও অভিযোগ পুলিশের কাছে আসেনি।” খনন দফতরের প্রধান সচিব সত্যেন্দ্র সিংহের বক্তব্য, “গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া কিছু আমাদের করার নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.