|
|
|
|
খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে সনিয়াই প্রথম মুখ খুলুন সংসদে, চাইছে কংগ্রেস
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
শেষ কবে সংসদে মুখ খুলেছিলেন সনিয়া গাঁধী, কংগ্রেসের বহু সাংসদই হয়তো তার জবাব দিতে পারবেন না! কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্বই চাইছেন, কাল অন্তত সংসদে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে বিতর্কে অংশ নিন দলের সভানেত্রী। কারণ মানুষের খাদ্যের অধিকারকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার ষোলো আনা কৃতিত্ব ঘরে তোলার ক্ষেত্রে সনিয়াই সেরা মুখ দলে। এক দশক আগে শিমলায় দলের চিন্তন মন্থন শিবিরে তিনিই প্রথম খাদ্য সুরক্ষাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই সনিয়াই এ বার খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে সংসদের বিতর্কে শাসক পক্ষের প্রথম বক্তা হলে, তাঁর রাজনৈতিক প্রয়াসের একটি বৃত্ত পূর্ণ হবে বলে মনে করছেন দিগ্বিজয় সিংহরা। রাহুল গাঁধীও কাল এ নিয়ে মুখ খুলতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে দলের তরফে এখনও কোনও ঘোষণা না-করা হলেও এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী কাল সংসদ যদি মসৃণ ও শান্ত ভাবে চলে তবেই একমাত্র খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে বলতে উঠতে পারেন সনিয়া।
দিগ্বিজয় আজ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “শুধু শিমলায় প্রথম প্রস্তাব দেওয়া নয়, সনিয়ার নেতৃত্বেই জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ একাধিক পরামর্শ দিয়েছিল সরকারকে। যাতে প্রস্তাবিত খাদ্য সুরক্ষা নীতি যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত হয়। সেই সব সুপারিশের অধিকাংশই কেন্দ্র মেনে নিয়েছে।” প্রথম ইউপিএ জমানায় ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের জন্যও ঠিক একই ভাবে সনিয়াকে পুরো কৃতিত্ব দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। যদিও সে বার সংসদে বিতর্কে অংশ নেননি সনিয়া।
কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, সনিয়া কাল সংসদে খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে বললে পরশু স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায়, এই প্রকল্পকে সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। জোর পাবে খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে কংগ্রেসের প্রচার।
তবে খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে কৃতিত্ব নেওয়ার ব্যাপারে একেবারে হাত গুটিয়ে থাকতে নারাজ বিজেপি-ও। প্রস্তাবিত বিলে সমর্থনের আশ্বাস দিলেও তারা এতে দু’টি সংশোধন প্রস্তাব আনার কথা বলছে। প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, খরা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় খাদ্য জোগানো সম্ভব না হলে, গোড়ায় রাজ্যকেই আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিজেপি-র বক্তব্য, এতে রাজ্যগুলি সমস্যায় পড়তে পারে। রাজ্যগুলির উপরে কেন্দ্র এই নীতি একতরফা ভাবে চাপিয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলছেন নরেন্দ্র মোদী। এ বিষয়ে অ-কংগ্রেসি রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একজোট করার লক্ষ্যে তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকার দাবি তুলেছেন। এ নিয়ে তিনি চিঠিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁর ওই দাবি এককথায় উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব সুপারিশ মেনে নিয়েই তৈরি হয়েছে ওই বিল।
মুখপাত্র সন্দীপ দীক্ষিতের পাল্টা
প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক তিন বার চিঠি পাঠিয়েছিল। মোদী তখন কেন চিঠির জবাব দেননি?”
কংগ্রেসের একাধিক নেতার মতে, খাদ্য সুরক্ষা বিলের বিরোধিতা করা রাজনৈতিক ভাবে সম্ভব নয়, অথচ এই আইনটি হলে লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকে রোখা শক্ত হবে। এই উদ্বেগ থেকেই বিরোধী দল বিজেপি, সরকারের সমর্থক সমাজবাদী পার্টি, এমনকী ইউপিএ শরিক এনসিপি-ও এখন সংশোধনীর কথা বলছে।
বিলটি নিয়ে আজই আলোচনা হওয়ার কথা ছিল সংসদে। কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশের চার তেলুগু দেশম সদস্যের চিৎকার ও স্লোগানে বার বার সভা মুলতবি হয়। ওই চার জনকে তাই কালকের জন্য সাসপেন্ড করে বিলটি নিয়ে আলোচনার পথ মসৃণ করা হতে পারে। এবং কালই তা লোকসভায় পাশ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। |
পুরনো খবর: খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প সময়ে চালুর ব্যাপারে বাধা কংগ্রেসি রাজ্যগুলিই
|
|
|
|
|
|