দু’টি আলাদা মামলায় শাস্তি পেয়েছে দুই আসামি। দীর্ঘদিন জেল খাটার পরে প্যারলে মুক্তি পেয়ে তারা না-ফেরায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিতর্ক এতই তীব্র হয়েছে যে, কারা দফতরের আইজি রণবীর কুমার নির্দেশ দিয়েছেন, ওই দুই আসামি না-ফেরা পর্যন্ত অন্য কোনও বন্দিকেই আর প্যারলে ছাড়া যাবে না।
ওই দুই বন্দির মধ্যে আছে খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলায় দণ্ডিত সাহাবুদ্দিন সৌকত ওরফে সৌকত আলি। খাদিম-কর্তা পার্থসারথি রায়বর্মনকে অপহরণের মামলায় মূল আসামি আফতার আনসারি এবং অন্য তিন জনের সঙ্গে সৌকতকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। দিন পাঁচেক আগে আলিপুর জেল থেকে প্যারলে মুক্তি পায় সে। চলে যায় তার হরিয়ানার বাড়িতে। কিন্তু তার পর থেকে ওই আসামির খোঁজ মিলছে না বলে অভিযোগ। তার মতো জঙ্গি বন্দিকে কেন প্যারলে ছাড়া হল, বিতর্ক চলছে তা নিয়েই।
বিতর্ক চলছে অন্য একটি মামলায় দণ্ডিত পারভেজ আলমকে প্যারলে ছাড়া নিয়েও। তার বাড়ি দক্ষিণ ভারতে। প্যারলে মুক্তি পেয়ে সে বাড়িতেই গিয়েছে বলে খবর। কিন্তু তারও খোঁজ মিলছে না। ফলে তাকে প্যারলে ছাড়ার সিদ্ধান্তও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জোড়া বিতর্ক জোরদার হয়ে ওঠায় মঙ্গলবার আলিপুর জেলের সুপারের সঙ্গে কথা বলেন আইজি (কারা)। তার পরেই তিনি প্যারলে বন্দি-মুক্তি স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
প্রয়োজনীয় সতর্কতা ছাড়াই দু’জন দুর্ধর্ষ আসামিকে এ ভাবে প্যারলে মুক্তি দেওয়া হল কেন?
জেলকর্তাদের ব্যাখ্যা, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জেলের রেকর্ড ভাল হলে ১২ বছর জেল খাটার পরে রক্ষী ছাড়াই তাদের প্যারলে ছাড়া যেতে পারে। সেই রীতি মেনে ওই দুই আসামিকে রক্ষী ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসটিএফের প্রশ্ন, সৌকতের গায়ে তো জঙ্গি তকমা সেঁটে বসে গিয়েছে। তা হলে তাকে প্যারলে ছাড়া হল কেন? কয়েক দিন বাইরে থাকার সুযোগ পেলে তো সে ফের কোনও নাশকতার ছক কষতে পারে। এসটিএফ-কর্তারা ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে রাজ্যের কারা দফতরের কাছে অভিযোগ করেছেন।
প্রশ্ন ও বিতর্কের মধ্যেই আলিপুর জেলের কর্তাদের একাংশের দাবি, ওই দুই বন্দিকে প্যারলে ছাড়া হলেও তারা এখন কোথায় আছে, তার খুঁটিনাটি তাঁদের জানা আছে। তাদের ফিরে আসা নিয়েও কোনও সমস্যা নেই। |