অমল-ফালোপাকে মিলিয়ে দিল প্রয়াত সচিবের জন্মদিন
য়দানে তিনি আবেগ আর উষ্ণতার মিশেলে তৈরি ব্যক্তিত্ব। লাল-হলুদের সেই দাপুটে ক্লাব সচিব প্রয়াত দীপক (পল্টু) দাসের চুয়াত্তরতম জন্মদিবসে আবেগ, উষ্ণতা, প্রথা ভাঙার সব ছবিই যে মিলে গেল এক বিন্দুতে। সকাল থেকে সন্ধ্যা— ইস্টবেঙ্গল ক্রীড়াদিবস জুড়ে মুঠো মুঠো স্মৃতির কোলাজ।
ষোলো বছর আগে যাঁর ডায়মন্ড সিস্টেম অহি-নকুল সম্পর্ক তৈরি করেছিল মোহন-ইস্ট সমর্থকদের মধ্যে, সেই প্রাক্তন জাতীয় কোচ অমল দত্ত পুরো অনুষ্ঠানই দেখলেন লাল-হলুদ বেলুন হাতে পা নাচাতে নাচাতে। পাশে বর্তমান ইস্টবেঙ্গল কোচ মার্কোস ফালোপা। কানে-কানে দু’জনের কথাও হল অনেক। বাড়ি যাওয়ার পথে ফালোপা বলে গেলেন, “ফুটবলটা বেশ বোঝেন। ওঁকে আসতে বলেছি দলের অনুশীলনে।” যা শুনে ঠোঁটকাটা অমল চেনা মেজাজেই বললেন, “ও ডাকলেই আসতে হবে নাকি? আমি কারও অনুশীলনে যাই না। কেন যাব?” পরক্ষণেই তাঁর উল্টো সুর, “লোকটা কিন্তু ভদ্র।”

আড্ডায় ফালোপা-অমল।
অমল দত্ত যখন চেনা মেজাজে, তখন এ বছরই শুরু হওয়া মরণোত্তর পল্টু দাস স্মৃতি পুরস্কার দিচ্ছেন ক্রীড়ামন্ত্রী। যিনি পেলেন তিনি আবার পঁচাত্তরে মোহনবাগানকে পাঁচ গোল দেওয়া ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক অশোকলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রী শিখা দেবীর গলাতেও আবেগ। “ছিয়াত্তরে দার্জিলিং গোল্ড কাপ জয়ের পর পায়ে চোট থাকায় বোকারোতে প্রীতি ম্যাচ খেলতে যাননি। ক্লাব ওঁকে শো-কজ করেছিল। সেই দুঃখে উনি ক্লাবে আসা বন্ধ করে দেন। পল্টুবাবুই সচিব হয়ে ফোন করে ওঁকে ক্লাবে ফিরিয়ে আনেন।”
ক্রীড়া দিবস উপলক্ষে এ দিন রক্তদান, আর্টিস্ট ফোরাম বনাম প্রাক্তন ফুটবলারদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ তো ছিলই। সম্মানিত হলেন দুই দাবাড়ু দীপ্তায়ন ঘোষ, সায়ন্তন দাস এবং দুই এভারেস্ট জয়ী ছন্দা গায়েন এবং উজ্জ্বল রায়। বস্ত্র এবং সাম্মানিক অর্থ দেওয়া হল মালিদেরও। ফুটবলে ডোপিং প্রতিরোধ নিয়ে অধ্যাপক চিকিৎসক সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের পল্টু দাস স্মারক বক্তৃতার সঙ্গেই প্রথম থেকে পঞ্চম ডিভিশনের সেরা পাঁচ ফুটবলার কিটস পেলেন ক্লাবের তরফে।

প্রয়াত অশোকলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরণোত্তর স্মারক নিয়ে তাঁর স্ত্রী।
সব দেখে বারো দিন আগে ইস্টবেঙ্গল দিবসে সম্মানিত অবনী বসুর প্রতিক্রিয়া, “সংগঠক নয়, পল্টু তো সমাজসেবকও।” উত্তরাখণ্ডে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিধ্বস্ত মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পঁচিশ হাজার টাকা ক্লাবের তরফে পাঠিয়ে সেই রীতিও বহাল রাখলেন প্রয়াত পল্টু দাসের কন্যা সুবর্ণা ও তাঁর স্বামী।
সশরীরে না থাকলেও পল্টু দাসের স্পোর্টসম্যান স্পিরিট ছুঁয়ে গেল ময়দান।

প্রথম জ্ঞানেন্দ্র
প্রথম বাঙালি হিসেবে ফুটবলে শট মেরেছিলেন নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী। আর মোহনবাগান ফ্যান ক্লাব ‘মোহনবাগান গর্ব’-র আবিষ্কার মহমেডানে খেলা মহম্মদ সেলিম নন। তাঁরও আগে প্রথম ভারতীয় ফুটবলার যিনি বিদেশে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি হলেন জ্ঞানেন্দ্র কৃষ্ণ দেব। শোভাবাজার রাজবাড়ি পরিবারের এই সদস্য গত শতকের একের দশকে মোহনবাগানে খেলতেন। তার পর ১৯১৭-১৮ সালে সানফ্রান্সিসকোয় অলিম্পিক ক্লাবে খেলেছেন। ওই সময় বার্কলেতে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় পড়াশোনার জন্য গিয়েছিলেন তিনি। আর সেলিম তিরিশের দশকে গিয়েছিলেন স্কটিশ ক্লাব সেলটিকে খেলতে। এত দিন সেটাই ছিল এ দেশে থেকে কোনও ফুটবলারের প্রথম বিদেশে খেলতে যাওয়ার নজির। ‘নতুন আবিষ্কার’ উপলক্ষ্যে ১৫ অগস্ট শোভাবাজার রাজবাড়িতে জ্ঞানেন্দ্র কৃষ্ণ দেবের উপর একটি অনুষ্ঠান সকাল এগারোটায় হবে মোহনবাগান গর্ব-র উদ্যোগে। উপস্থিত থাকবেন সুব্রত ভট্টাচার্য, অমল সেন প্রমুখ।

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.