|
|
|
|
চেস্টার-লে-স্ট্রিটে লজ্জার আত্মসমর্পণ |
ব্রড-বিস্ফোরণে ছাই অস্ট্রেলিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মহানাটকীয় পট পরিবর্তন বললেও বোধহয় কম বলা হয়!
হাতে পড়ে ন’উইকেট, দরকার দেড়শো মতো রান, আসবেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্বয়ং নিজে এতগুলো পয়মন্ত ব্যাপারস্যাপার দেখলে যে কোনও অস্ট্রেলিয়া সমর্থকেরই আশাবাদে আছন্ন থাকার কথা। অ্যাসেজ পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন শেষ বটে, কিন্তু সিরিজে পাল্টা দেওয়ার প্রথম ধাপটা তো অন্তত শুরু করা যাবে। এত ভাল জয়ের মঞ্চ তো গোটা অ্যাসেজে পায়নি মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু পরবর্তী একুশ ওভারে ম্যাচটা যে সম্পূর্ণ ঘুরে গিয়ে অজি-সমর্থকদের আশাকে যন্ত্রণায় পাল্টে দেবে, বোঝা যায়নি।
|
স্টুয়ার্ট ব্রড:
১৮.৩-৩-৫০-৬ |
ব্রডের অন্যতম শিকার ক্লার্ক।
সোমবার। ছবি: এএফপি |
|
“আমি তো আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি টিমটাকে দেখে।
এ ভাবে অস্ট্রেলিয়া হারতে পারে, সত্যিই ভাবতে পারিনি।” — শেন ওয়ার্ন |
|
চেস্টার-লে-স্ট্রিট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৯ তাড়া করতে নেমে মাত্র ২২৪ রানে শেষ হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ১৪৭-১ থেকে! একটা সময় অস্ট্রেলীয় ওপেনিং জুটিতে ভাঙন ধরাতে কালঘাম ছুটছিল ইংরেজ বোলারদের। অথচ দিনের শেষে স্টুয়ার্ট ব্রডের নামের পাশে ছ-ছ’টা উইকেট! ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য হারের বদলে টেস্ট শেষ মাত্র চার দিনে! জয়ী টিমের নাম আশ্চর্য শোনালেও ইংল্যান্ড। এবং অ্যালেস্টার কুক শুধু যে চতুর্থ টেস্ট জিতে সিরিজটাও পকেটে পুরে ফেললেন তা নয়, একই সঙ্গে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের বর্তমান কদর্য চেহারাকেও বার করে আনলেন ক্রিকেট-বিশ্বের সামনে। আরও এক বার।
ক্লার্কের মুখের দিকেও তাকানো যাচ্ছে না। টেস্ট শেষে ব্রিটিশ সিংহরা যখন তীব্র উল্লাসে মত্ত, টিভি ক্যামেরা আচমকাই ধরল ক্লার্কের মুখ। ধ্বস্ত, অবসন্ন একটা চেহারা। যেন টেস্ট শেষ হওয়ার পরেও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না, এ ভাবেও কপাল পুড়তে পারে! কমেন্ট্রি বক্সে বসে শেন ওয়ার্ন ততক্ষণে তুলোধোনা শুরু করে দিয়েছেন। উত্তেজিত ভাবে বলে ফেলেছেন, “আমি তো আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি টিমটাকে দেখে। এ ভাবে অস্ট্রেলিয়া হারতে পারে, সত্যিই ভাবতে পারিনি।” |
হ্যারিস: ৭-১১৭ |
ক্লার্ক (২১) বোল্ড হওয়ার পরপরই অস্ট্রেলিয়ার শেষের শুরু। রজার্স, খোয়াজা, ওয়ার্নার আউট হওয়ার পরেও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ থেকে সম্পূর্ণ মুছে যায়নি। কিন্তু ব্রডের বলে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক বোল্ড হওয়ার পর ভাঙন আর রোখা যায়নি। একটা সময় মাত্র তেরো রানের মধ্যে উড়ে যায় পাঁচ উইকেট! ব্রড-বিস্ফোরণে। একটা সময় মাত্র চার রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ব্রড। শেষ পর্যন্ত তাঁর বোলিং হিসেব: ১৮.৩-৩-৫০-৬! রজার্সের (৪৯) আরও একটা লড়াকু ইনিংস কিংবা ওয়ার্নারের (৭১) যুদ্ধের সলিলসমাধি ঘটিয়ে।
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে এসে ক্লার্ক বলছিলেন, “খুব খারাপ ব্যাটিংয়ের জন্য হেরে গেলাম। বিশেষ করে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা। তবু বলব, আমরা একেবারে জঘন্য খেলিনি। হ্যারিস, রজার্স সত্যিই ভাল খেলেছে। এই টেস্টটা থেকে আমরা শিখলামও অনেক কিছু।”
ক্লার্ক বলে গেলেন বটে, কিন্তু প্রশ্ন উঠছে আর শিখে কী লাভ? সিরিজে তো মাত্র একটা টেস্ট পড়ে। যদি সেটা জিতে সম্মানটুকু বাঁচানো যায়, যথেষ্ট হবে।
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড ২৩৮ ও ৩৩০ (বেল ১১৩, ব্রেসনান ৪৫, হ্যারিস ৭-১১৭)।
অস্ট্রেলিয়া ২৭০ ও ২২৪ (ওয়ার্নার ৭১, রজার্স ৪৯, ক্লার্ক ২১, ব্রড ৬-৫০)।
|
পুরনো খবর: দুরন্ত হ্যারিসকে আটকালেন বেল |
|
|
|
|
|