পুরসভা হাতছাড়া হতেই তৃণমূলের অন্দরে ‘বিদ্রোহ’
পুরপ্রধান নির্বাচন আগেই হয়ে গিয়েছিল। এ বার খড়্গপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধানও ঠিক হয়ে গেল। নতুন উপ-পুরপ্রধান হচ্ছেন কংগ্রেসের চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। আজ, মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি এই দায়িত্ব নেবেন। রবিবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের শহর কমিটির বৈঠক হয়। শহর কংগ্রেসের সভাপতি অমল দাস, পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ দলের কাউন্সিলররা, নির্দল কাউন্সিলর সত্যদে শর্মা সর্বসম্মতিক্রমে নতুন উপ-পুরপ্রধানের নাম স্থির করেন। অমলবাবু বলেন, “মঙ্গলবারই দায়িত্ব নেবেন চিত্তরঞ্জন মণ্ডল।”
পুরপ্রধান পারিষদের (সিআইসি) পদগুলোয় কারা বসবেন, কে কোন দফতরের দায়িত্ব পাবেন, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত অবশ্য হয়নি। পূর্ত, জল, কর, কনজারভেন্সি-সহ খড়্গপুর পুরসভায় মোট ৬টি পুরপ্রধান পারিষদের পদ রয়েছে। রয়েছে আরও দু’টি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পদ। এই পদগুলো কারা পাবেন, তা ঠিক করতে ফের শহর কংগ্রেসের বৈঠক হবে। ওই বৈঠক হতে পারে আগামী সপ্তাহে। অমলবাবু বলেন, “পারিষদের পদগুলোয় কারা বসবেন, তা নিয়ে রবিবারের সভায় কোনও আলোচনা হয়নি। পরবর্তীকালে আলোচনার প্রেক্ষিতেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
এ দিকে, পুরসভা হাতছাড়া হতেই তৃণমূলের আন্দরে ‘বিদ্রোহ’ শুরু হয়েছে। দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর অপসারণের দাবি তুলেছেন রেলশহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। তাঁর অভিযোগ, “শহর সভাপতির সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাত রয়েছে। ওই পদে পরিবর্তন আনা জরুরি! না হলে আগামী দিনে খড়্গপুর শহরে তৃণমূল অস্তিত্ত্ব সঙ্কটে পড়বে!” খোদ প্রাক্তন পুরপ্রধান দলের শহর সভাপতিকে নিশানা করায় রেলশহরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। বিড়ম্বনায় পড়েছেন শাসকদলের জেলা নেতৃত্বও। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির এক সদস্যের কথায়, “এখনই রাশ টানা না গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। রাজ্য নেতৃত্ব সব জানেন। শেষ সিদ্ধান্ত তাঁরাই নেবেন!” যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দেবাশিসবাবু।
জহরবাবুর সঙ্গে দেবাশিসের বিরোধ নতুন নয়। এক সময় জহরবাবুই ছিলেন তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি। পরে ওই পদে বসেন হেমা চৌবে। হেমাদেবীর পর দায়িত্বে আসেন দেবাশিস চৌধুরী। ২০১০ সালের পুর-নির্বাচনে জিতে রেলশহরে পুরবোর্ড দখল করে তৃণমূল। পুরপ্রধান হন জহরবাবু। ওই নির্বাচনে দেবাশিস হেরে যান। উপ-পুরপ্রধান হন তাঁর ঘনিষ্ঠ তুষার চৌধুরী। গত বছর ১৮ জুন পুরবোর্ডের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক কর্মসূচি করে শহর যুব তৃণমূল। সেখানেও প্রকাশ্যে আসে বিরোধ। দলের ১৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে জহরলাল পাল-সহ মাত্র
৭ জন সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন। আসেননি তুষার চৌধুরী-সহ বাকি ৮ জন কাউন্সিলর।
শাসকদলের এই বিরোধের মধ্যেই খড়্গপুর পুরসভা নিয়ে জট পাকে। অবশেষে সেই জট কেটেছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৫ অগস্ট খড়্গপুরে পুরপ্রধান নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে বিরোধ শুরু হয়। শেষমেশ হস্তক্ষেপ করতে হয় রাজ্য নেতৃত্বকে। দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে কলকাতার তৃণমূল ভবনে এক বৈঠক হয়। প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে ভোটাভুটি হয়। উপস্থিত ১৪ জন কাউন্সিলর তাঁদের মত জানান। পরে দেখা যায়, ১০টি ভোট গিয়েছে তুষারবাবুর পক্ষে। ৩টি ভোট জহরবাবুর পক্ষে। বাকি একজন কাউন্সিলর জানিয়ে দেন, এ ক্ষেত্রে তাঁর কোনও মত নেই। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তিনি সেটাই মেনে নেবেন।
এ বার পুরসভার ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার পর খোদ প্রাক্তন পুরপ্রধান শহর সভাপতির অপসারণের দাবি তোলায় শাসক দলের অন্দরেই শোরগোল পড়েছে। বিদ্রোহ সামাল দিতে রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেন কি না, সেটাই দেখার।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.