|
|
|
|
মোদীর উল্টো পথে হেঁটে মমতাকে আক্রমণ বরুণের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
লোকসভা নির্বাচনের পরে কেন্দ্রে সরকার গড়ার জন্য তৃণমূলের সাহায্য দরকার হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই এখন তৃণমূল সম্পর্কে নরম অবস্থান নিয়ে চলার পক্ষপাতী বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অথচ তাঁদেরই প্রতিনিধি বরুণ গাঁধী সোমবার কলকাতায় এসে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র পর্যবেক্ষক হওয়ার পর এ বারই প্রথম কলকাতা সফর বরুণের। এবং প্রথম এসেই বিজেপি কর্মীদের হেনস্থার ‘বদলা’ নেবেন বলে বরুণ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতাকে।
কালীঘাটের মন্দিরে এ দিন সকালে পুজো দেওয়ার পরে মহাজাতি সদনে বিজেপি-র কার্যকর্তা সম্মেলনে মমতার উদ্দেশে বরুণ বলেন, “উন্নাসিকতা কমান। অহঙ্কার ত্যাগ করুন। বিজেপি-র সময় আসছে। এখন বিজেপি কর্মীদের যত খুশি হেনস্থা করতে পারেন! কিন্তু ছ’মাস পরে আমরা কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে একটা একটা করে বদলা নেব!” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “যখন কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিল না, তখন অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণী তাঁকে দয়া করে মন্ত্রী করেছিলেন!” |
|
কালীঘাট মন্দিরে বরুণ গাঁধী। সোমবার। সুমন বল্লভের তোলা ছবি। |
বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ এবং গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী তথা লোকসভা ভোটে দলের প্রচারের মুখ নরেন্দ্র মোদী কিছু দিন আগে কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের কারও মুখেই মমতার এত কড়া সমালোচনা শোনা যায়নি। বস্তুত, আগামী লোকসভা ভোটের স্বার্থে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের বিরাগভাজন হওয়ার ঝুঁকি নিতে চান না। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব মমতা এবং সিপিএম দু’ পক্ষকেই সমান আক্রমণ করে চলার পক্ষপাতী। বরুণ এ দিন রাজনাথ বা মোদীর পথে না হেঁটে রাজ্য বিজেপি-র আকাঙ্ক্ষাই পূরণ করেছেন। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের ব্যাখ্যা, “এ রাজ্যে দলের শক্তি বাড়াতে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস সকলের সম্পর্কেই আক্রমণাত্মক হওয়াটা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। সে জন্যই বরুণ গাঁধী মমতা সম্পর্কে কড়া মন্তব্য করেছেন।”
রাজ্যে দলীয় সংগঠন মজবুত করার দাওয়াইও দিয়েছেন বরুণ। তাঁর পরামর্শ শুধু মমতা এবং বামপন্থীদের বিরোধিতা করার নেতিবাচক রাজনীতিতে আটকে থাকলে চলবে না। বাংলার উন্নতি, শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ইত্যাদির লক্ষ্যে বিজেপি-র ইতিবাচক কর্মসূচি প্রচার করতে হবে। জনসংযোগের জন্য কর্মীদের বন্যাত্রাণে ঝাঁপিয়ে পড়া বা অত্যাচারিত কৃষকের স্বার্থে রুখে দাঁড়ানোর পরামর্শও দেন বরুণ। তাঁর আরও নির্দেশ ১৫টি সম্ভাবনাময় আসন বেছে লোকসভা নির্বাচনের জন্য পরিশ্রম করুন কর্মীরা। তার মধ্যে আরও নির্দিষ্ট ভাবে ৫-৬টি আসনে বেশি মনোযোগ দিন। বিজেপি-র যে সব পুরনো কর্মী দুর্দশাগ্রস্ত, ছেলের চাকরি, মেয়ের বিয়ে ইত্যাদি পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত, দল কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে তাঁদের ‘দেখা’র জন্য তিনি রাজনাথকে অনুরোধ করেছেন বলে বরুণ জানান। পরে রাজ্যে এসে বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষত গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে
সম্পর্ক তৈরি করবেন বলেও জানান বরুণ। বিকেলে রাহুলবাবু, দলের অন্যান্য পদাধিকারী এবং প্রাক্তন সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন পর্যবেক্ষক বরুণ।
|
পুরনো খবর: নাম না-করেই মমতার জন্য বার্তা দিলেন কৌশলী মোদী |
|
|
|
|
|