নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
গত সপ্তাহেই বিনা লাইসেন্সে চলতে থাকা ঠান্ডা পানীয়ের দোকানগুলির বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে সেগুলি বন্ধ করে দিয়েছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার ৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান নিখিল সাহানি। অথচ সেই নির্দেশের পরোয়া না করে ৩ দিন পর থেকেই ফের সেগুলি কারবার চালু করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, কোনও রকম লাইসেন্স ছাড়াই শহর জুড়েই রমরমিয়ে চলছে ঠান্ডা পানীয়ের ওই দোকানগুলি। পুরসভা থেকে কয়েকটি দোকানের মালিক ঠান্ডা পানীয় বিক্রির জন্য আবেদন জমা দিলেও তারা মূলত সোডা বিক্রি করছে। পুরসভা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এ ধরনের দোকানও রয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কোনও রকম ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
শনিবার ৩ নম্বর বরো এলাকায় থাকা ওই সমস্ত দোকানগুলিতে ঘুরে তাদের ট্রেড লাইসেন্স দেখতে চান তিনি। কিন্তু কোন দোকানের কর্মীরাই সঠিক কাগজ দেখাতে না পারায় তিনি দোকানগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দেন। গত শনিবার অভিযান চালানোর পর সোমবার পুর কমিশনারকেও বিষয়টি জানান হয়েছে। তার পরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “আপাতত দোকানগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নোটিশ তৈরি করা হয়েছে। সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি জানান, পানীয়ের নমুনা কলকাতায় নির্দিষ্ট জায়গায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সব ঠিক থাকলে তবেই ফুড লাইসেন্স এবং ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ভাবনা চিন্তা করবেন। পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান বলেন, “বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। শীঘ্রই পরীক্ষাগারে ওই পানীয়ের নমুনা পাঠানো হচ্ছে।”
৩ নম্বর বরো এলাকার কয়েকটি দোকানে অভিযান চালানো এবং সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে বলা হলেও শহরের অন্যান্য জায়গায় ওই পানীয়ের দোকান রমরমিয়ে চলছে। অভিযানে সামিল পুরকর্মীদের একাংশ জানান, চিনি আর জলের সঙ্গে বিভিন্ন স্বাদের গন্ধ যুক্ত পাউডার মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে পানীয়। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় খোলা বালতিতে যেখানে নোংরা পড়ে রয়েছে সেই জল দিয়েই তৈরি হচ্ছে। তার পরেও পুরসভা ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চিকিৎসকদের অনেকই বাজার চলতি এই ‘সোডা’ না খাওয়ার কথা বলেছিলেন। চিকিৎসক সুকমল মিত্র বলেন, “স্বাস্থ্যের পক্ষে ওই পানীয় ক্ষতিকর। হাতিমোড় এলাকায় থাকা কয়েকটি দোকান বন্ধ করা হলেও সেগুলিও ফের চালু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ৩ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান নিখিল সাহানির অভিযোগ, এ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত পানীয় থেকে যে কোন ধরনের রোগ হতে পারে। অথচ পুর কর্তৃপক্ষের নজর নেই। তাঁর দাবি, “বিষয়টি বিভাগীয় মেয়র পারিষদ এবং পুর কমিশনারের দেখা উচিত। অথচ তারা দেখছেন না। বিষয়টি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকেও জানিয়েছি।”
সম্প্রতি মেয়র এবং ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহার সঙ্গে দেখা করেন ওই সমস্ত কয়েকটি দোকানের মালিক। বিভাগীয় মেয়র পারিষদ বলেন, “আজ অনেক দোকানের মালিকেরা এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিছু নমুনা নেওয়া হয়েছে। তা পরীক্ষা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
|