নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন নিহত গোর্খা লিগ নেতা মদন তামাং-এর ছেলে সংযোগ তামাং। রবিবার রাতে শিলিগুড়ি লাগোয়া মেথিবাড়িতে তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতিতে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। উত্তররবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। বিষয়টি অস্বস্তিতে পড়েছেন গোর্খা লিগ নেতারা। বিষয়টি তাঁর কিছুই জানা ছিল না বলে দাবি করেছেন গোর্খা লিগের সভানেত্রী তথা নিহত মদন তামাঙের স্ত্রী ভারতী তামাঙের। তিনি বলেন, “আমি কিছুই জানি না। উনি আমাকে এ ব্যাপারে কিছু বলেননি। আর প্রতিটি মানুষের রাজনৈতিক দল করা বা নিজের মত প্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু বলছি না।”
|
গৌতম দেবের সঙ্গে সংযোগ তামাং।—নিজস্ব চিত্র। |
দার্জিলিং পাহাড়ে মোর্চা বিরোধী দল হিসাবেই গোর্খা লিগ পরিচিত। খুন হওয়ার আগে অবধি পাহাড়ের রাজনীতিতে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন মদন তামাং। বর্তমান পাহাড়ের পরিস্থিতি তাঁর ছেলের তৃণমূলে যোগ দেওয়াটা যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পাহাড়ের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি বলেন, “সংযোগ তামাং কোনও দিনই গোর্খা লিগের সদস্য হননি। সক্রিয় রাজনীতিও করেননি। উনি কোথায় কেন গেলেন বলতে পারব না। সবাই নিজস্ব স্বাধীনতা রয়েছে।” সংযোগ তামাঙের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সংযোগ তামাং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই তৃণমূলের যোগ দিচ্ছেন। ওঁর জন্য তৃণমূল শক্তিশালী হবে।” আর সংযোগ তামাং বলেছেন, “পাহাড়ে গণতন্ত্র ফেরাতে পারে একমাত্র তৃণমূল। বাবাই সেই চেষ্টা করেছিলেন। তাই এই দলে যোগ দিলাম। তৃণমূল পরিচালিত সরকারের মাধ্যমেই পাহাড়ের উন্নয়ন সম্ভব।” তিনি জানান, আলাদা রাজ্যের দাবিতে পাহাড়ে বর্তমানে যে আন্দোলন হচ্ছে তা সঠিক সময়ে হচ্ছে না। আমাদের উচিত এখন উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া। বিভিন্ন দিক থেকে পাহাড় পিছিয়ে।
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১০ সালের ২১ মে দার্জিলিঙের ক্লাব সাইড রোডে দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের সভার তদারকি করার সময় প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন মদন তামাং। তার পর থেকে দলের দায়িত্ব সামলান ভারতী দেবী। তিনি দার্জিলিঙে থাকলেও সংযোগবাবু বাবা’র মৃত্যুর শিলিগুড়ির উত্তরায়ণ উপনগরীতেই বেশিরভাগ সময় থাকেন। গোর্খা লিগের একাংশ নেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মদন তামাঙের খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে দল আইনি লড়াই করছে। সেখানে সংযোগ তৃণমূলে যোগ দিয়ে খুনের মামলাটি নিয়ে বেশি করে তদ্বির করতে পারবেন বলে মনে হয়। এদিকে, পুরো বিষয়টিকে রাজ্য সরকারের কৌশল বলে মনে করছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় তামাং বলেন, ‘‘পাহাড়ের আন্দোলনকে দুর্বল করতে রাজ্য নানা কৌশল নিচ্ছে। সংযোগ তামাংকে নিজেদের দিকে টেনে পাহাড়ে নানা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল। তবে তাতে কোনও প্রভাব পড়বে না।” |