নিজের বইয়ে বিস্ফোরক স্টিভ
বুকিদের নতুন অস্ত্র ‘ব্র্যাকেট ফিক্সিং’
স্পট ফিক্সিং তো ছিলই। এ বার ম্যাচ গড়াপেটায় বুকিদের হাতে নতুন অস্ত্র হিসাবে উঠে এসেছে ব্র্যাকেট ফিক্সিং। এই ব্র্যাকেট ফিক্সিংয়ের কথাই তাঁর নতুন বইয়ে তুলে ধরেছেন স্টিভ ওয়।
ব্র্যাকেট ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া ইতিমধ্যেই কিন্তু ক্রিকেটে পড়তে শুরু করেছে। উঠে এসেছে সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ান ডে সিরিজ। মিডিয়ার অভিযোগ ছিল, যেখানে নাকি বুকিরা এই অস্ত্রই ব্যবহার করেছিল ম্যাচ গড়াপেটা করতে।
তাঁর নতুন বই ‘দ্য মিনিং অব লাক’-এ স্টিভ লিখেছেন যে, বেটিং কেলেঙ্কারিই ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। কারণ, সেগুলো খেলাটার সততা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতি আস্থায় ধাক্কা দেয়। গড়াপেটা প্রসঙ্গে স্টিভ টেনে এনেছেন ব্র্যাকেট ফিক্সিংয়ের কথা।
কী এই ব্র্যাকেট ফিক্সিং? এই ধরনের গড়াপেটায় কাজে লাগানো হয় পঞ্চাশ বা কুড়ি ওভারের ম্যাচের ছোট ছোট ব্র্যাকেট বা অংশকে। ম্যাচের যে কোনও পাঁচ ওভারের ব্র্যাকেটে যেমন দুর্নীতিগ্রস্ত প্লেয়াররা পূর্বনির্ধারিত রান তোলেন। যাতে জুয়াড়িদের বড় অঙ্ক লাভ হয়। কখনও অস্বাভাবিক কম রান ওঠে, কখনও খুব বেশি। সাধারণত ফিল্ডিং সাইড গড়াপেটায় জড়িয়ে থাকলে, পাঁচ ওভারের ব্র্যাকেটে খুব বেশি রান ওঠে। আবার ব্যাটিং সাইড গড়াপেটা করলে, রান ওঠাটা খুব কমে যায়। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা, অধিনায়কদের একবার বুকিরা দলে টেনে আনতে পারলে, ব্র্যাকেট ফিক্সিং করার কাজটা খুব সহজ হয়ে যায়। যে আশঙ্কার কথাই তাঁর বইয়ে তুলে ধরেছেন স্টিভ।
স্টিভের বক্তব্যের জেরে উঠে আসছে গত মাসের পাক-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের কথা। পাকিস্তানের ৩-১ জেতা যে সিরিজ ঘিরে গড়াপেটার সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল মিডিয়ায়। এমনও দাবি করা হয়েছিল যে, আইসিসি দুর্নীতিদমন শাখার অফিসাররাও নাকি কয়েকটা ম্যাচের উপর নজর রেখেছেন। ওই সিরিজে সন্দেহজনক ভাবে বেশ কয়েক বার পাঁচ ওভারের ব্র্যাকেটে কোনও রানই প্রায় ওঠেনি। আবার অনেক সময় এক ওভারেই রানের বন্যা বয়ে গিয়েছে।
সন্দেহের কেন্দ্রে ছিল পঞ্চম ওয়ান ডে। যে ম্যাচে ক্যারিবিয়ান ইনিংসের ২৯-৩৪ ওভারে ওঠে মাত্র ২ রান। অথচ তার পরের ওভারেই ১৬ রান ওঠে। সে সময় ক্রিজে ছিলেন ক্রিস গেইল এবং মার্লন স্যামুয়েলস। এই স্যামুয়েলসকে আবার ২০১০-এ টিমের গোপন তথ্য পাচার করার জন্য দু’বছর নির্বাসিত করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড। সব মিলিয়ে গড়াপেটার সন্দেহ তীব্র হলেও আইসিসি-র পক্ষ থেকে তখন সরকারি ভাবে কিছু বলা হয়নি। পাক বোর্ড অবশ্য তড়িঘড়ি জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা ঘটনাটা নিয়ে তদন্ত করবে। শেষমেশ তদন্ত হলেও তার ফলাফল এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
স্টিভের বক্তব্য, ব্র্যাকেট ফিক্সিংয়ের রোগ গত কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটে ছড়িয়ে যাচ্ছে। ২০১০-এ পারথে এমসিসি-র ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির বৈঠকেই তিনি প্রথম এই বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তখনই তিনি লাই ডিটেক্টর টেস্ট ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাতে অভিযুক্ত ক্রিকেটারের বয়ানের সত্যতা নিয়ে নিঃসন্দেহ হওয়া যায়। ঘটনা হল, ব্র্যাকেট ফিক্সিংয়ের ঘটনা এখনও সে ভাবে মিডিয়ায় উঠে আসেনি। আইসিসি-ও এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি।
স্টিভ তাঁর বইয়ে আরও লিখেছেন যে, ২০০০ সালের শুরুর দিকে কিছু তারকা ক্রিকেটার গড়াপেটার দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পরেও তাদের দেশের বোর্ড গভীর ভাবে তদন্ত করতে চায়নি। তাদের ভয় ছিল পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলে আরও বড় বড় নামের গায়ে গড়াপেটার কালো দাগ পড়তে পারে।
স্টিভ মনে করেন, ক্রিকেটবিশ্বে এখন বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগ প্রচণ্ড জনপ্রিয় হয়ে পড়ায় গড়াপেটার বিপদ বেশি করে ছড়িয়ে গিয়েছে। এ সব লিগে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকেরা এতই প্রভাবশালী হন যে, তাঁরা চাইলে পছন্দের অধিনায়ক বাছতে পারেন, যে তাঁর নির্দেশে গড়াপেটা করে যেতে পারবে।

ব্র্যাকেট ফিক্সিং কী
সীমিত ওভারের ম্যাচের ছোট ছোট অংশ বা ব্র্যাকেটে ফিক্সিং করা। যেমন, টানা তিন বা পাঁচ ওভার। বুকিরা ওই সময় ঠিক করে দেয়, কতটা রান উঠতে পারে। বা কেউ আউট হবে কি না।

সন্দেহের তিরে
পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পঞ্চম ওয়ান ডে। যেখানে ক্যারিবিয়ান ইনিংসের ২৯-৩৪ ওভারে মাত্র ২ রান ওঠে। তার পরের ওভারেই ওঠে ১৬।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.