ফিরে পেলেন হারানো মুকুট
বোল্টই বিদ্যুৎ
ট্র্যাকে নাম ঘোষণার পরই অদ্ভূত একটা অঙ্গভঙ্গি। কাল্পনিক একটা ছাতা খোলার। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামের বৃষ্টিতে ছাতার আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা। ঠিক ১০ সেকেন্ড পরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটারের খেতাবটা আবার পুরনো মালিকের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে চলে গিয়েছে। ৯.৭৭ সেকেন্ডে আবার একটা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সোনা উসেইন বোল্টের। সম্রাটকে কুর্নিশ করতে কি না জানা নেই, ততক্ষণে সত্যি সত্যিই টিপ টিপ বৃষ্টি নেমে এসেছে স্টেডিয়ামে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিন গ্যাটলিন (৯.৮৫) পেলেন রুপো। আর বোল্টের সতীর্থ নেস্তা কার্টার (৯.৯৫) জিতলেন ব্রোঞ্জ। সতর্ক ভাবে শুরু করলেও শেষ ২০ মিটারে স্টেডিয়ামের জায়েন্ট স্ক্রিন থেকে চোখ সরাননি বোল্ট। স্বভাব সিদ্ধ অনায়াস ভঙ্গিতে সব রেকর্ড তছনছ করে দেওয়ার ঝাঁঝ ছিল না। যেটা চার বছর আগে বার্লিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দেখিয়েছিলেন (৯.৫৮)। তবে ষষ্ঠ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সোনা জয়ের দৌড়ে নিজেকে আবার বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠা করার তৃপ্তি ছিল পুরোমাত্রায়।

অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্ব রেকর্ড সহ পাঁচটি সোনার মালিককে এ বার ১০০ মিটারে কে থামাতে পারবে? মস্কোয় প্রশ্নটা টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ঘোরাফেরা করছিল। বোল্টের প্রতিদ্বন্দ্বী ও সতীর্থ আসাফা পাওয়েল আর যুক্তরাষ্ট্রের টাইসন গে ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পর জামাইকার চ্যাম্পিয়ন অ্যাথলিটের দিকেও সন্দেহের আঙুল তুলেছিলেন অনেকে। চোটের জন্য মস্কোয় না নামা সতীর্থ ইয়োহান ব্লেক দায়েগুতে জিতেছিলেন ১০০ মিটারের খেতাব। বোল্টের সামনে তাই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আবার আধিপত্য কায়েম করাই শুধু নয় এই সমালোচকদের জবাব দেওয়ার তাগিদটাও ছিল। বোল্ট শুধু জবাবই দিলেন না, অ্যাথলেটিক্স দুনিয়ার উপর হঠাৎ নেমে আসা ডোপ কেলঙ্কারির দুর্যোগও যেন মুছে দিলেন স্বমহিমায়।
একটাই ভয় ছিল। ফলস স্টার্ট। যা ২০১১ দায়েগু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জামাইকার সুপারস্টারকে ছিটকে দিয়ে কেরিয়ারে কালো দাগ ফেলে দিয়েছিল। বোল্ট নিজেও অনেক বারই স্বীকার করেছেন এই একটা ব্যাপারে তাঁকে আরও উন্নতি করতে হবে। তবে মস্কোয় বোল্টকে দায়েগুর ভূত তাড়া করছে বলে মনে হয়নি। শুরুতে বরং অনেক সাবধানী দেখাল খেতাব জয়ের সবথেকে বড় দাবিদারকে। সেই কারণেই হয়তো হিটে বোল্টকে পিছনে ফেলে দিতে পেরেছেন অন্য স্প্রিন্টাররা। বোল্টের সমর্থকরা অবশ্য নিশ্চিত ছিলেন ফাইনালে ‘জামাইকান বিদুৎ’ স্বমেজাজে চলে আসবেন। সেটাই হল।
দ্রুততম মানব এখন
বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে সর্বাধিক পদক জেতার তালিকায় দু’নম্বরে থাকা মাইকেল জনসনকে ছুঁলেন বোল্ট। মস্কোয় ১০০ মিটারে সোনা জেতার সুবাদে আট নম্বর পদক পেয়ে। আটটার মধ্যে ছ’টা সোনা।
২০০৯ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটারে বোল্টের ৯.৫৮ সেকেন্ড এখনও বিশ্বরেকর্ড।
২০০ মিটারে ২০০৯ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বোল্টের ১৯.১৯ সেকেন্ড বিশ্বরেকর্ড।
জামাইকার বিশ্বরেকর্ড গড়া (২০১২ অলিম্পিকে ৩৬.৮৪ সেকেন্ড) ৪০০ মিটার রিলে দলের সদস্য বোল্ট।
প্রথম অ্যাথলিট যিনি পরপর দু’টি অলিম্পিকে (২০০৮ ও ’১২) ১০০ মিটার, ২০০ মিটার এবং ৪X১০০ মিটার রিলেতে সোনা জিতে ডাবল হ্যাটট্রিক করেছেন।
২০০৭ ওসাকা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ‘স্প্রিন্ট কিং’-এর শুরু হওয়া যাত্রাপথে মস্কোয় নতুন পালক যোগ হল। চার বছর আগে বোল্ট ১০০ মিটারে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে। ‘অলিম্পিকে ট্রিপল’ এর পর বার্লিনের মতো এ বারও বিশ্বরেকর্ড হল না, কিন্তু ছ’ফুট পাঁচ ইঞ্চির সুঠাম শরীরের মসৃণ দৌড়ে একটা কথা স্পষ্ট করে দিলেন স্প্রিন্ট কিং, বোল্টই বিদ্যুৎ।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.