বাংলা শিখছেন, ইলিশ রাঁধছেন। ফালোপা পরিবার মজেছে কলকাতার রসগোল্লাতেও!
এক মাস হল সপরিবার ব্রাজিল থেকে এসেছেন লাল-হলুদের নতুন কোচ মার্কোস ফালোপা। এরই মধ্যে পুরোদস্তুর বাঙালিয়ানা ঢুকে পড়েছে মার্কোসের সল্টলেকের ফ্ল্যাটে।
ব্রাজিলীয়ের বাড়িতে এখন প্রায় দিন ইলিশ মাছের পদ থাকছে। বিরিয়ানি, চিকেন তন্দুরিও মন জয় করেছে ফালোপা পরিবারের। আর শেষ পাতে তো রসগোল্লা আমেরিকো ফালোপার চাই-ই। “আমি এমনিতেই মোটা। তার ওপর কলকাতার আসার পর থেকে এখানকার অসাধারণ সব খাবার খেয়ে আরও ওজন বাড়িয়ে ফেলেছি।” দক্ষিণ কলকাতার এক শপিং মলের কফি শপে বসে রসিকতার মেজাজে বলছিলেন আমেরিকো।
ভাষা-সমস্যা দূর করার পাশাপাশি এখানকার ফুটবলারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে বাংলা শিখছেন মার্কোস আর আমেরিকো। ‘ডান-দিকে যেতে হবে।!’ ‘বাঁ দিকে ঘুরতে হবে।’ ‘সহজ ভাবে খেলো’। ‘ধন্যবাদ’--- এ রকম কিছু কথা এখন গড়গড় করে বলছেন বাবা-ছেলে। স্ত্রী অ্যানি শিখে ফেলেছেন ‘রেড’ আর ‘ইয়েলো’র বাংলা। “রেড আর ইয়েলো মানে তো লাল-হলুদ। ইস্টবেঙ্গলের কালার,” বলছিলেন মিসেস ফালোপা। শাড়ি পরতে এখনও না শিখলেও সালোয়ার-কামিজে বেশ স্বচ্ছন্দ তিনি। “সুতির সালোয়ার এখানকার আবহাওয়ায় বেশ আরামদায়ক। আমি তো এখন বেশির ভাগ সময় সালোয়ার পরছি।” |
কোচেদের দিনভর
ছুটির দিন, শপিংয়ের মেজাজ। রবিবার ছেলেকে পাশে নিয়ে স্ত্রী-র জন্য কেনাকাটা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
স্ত্রী-পুত্র সঙ্গে করে রবিবারের ছুটিতে শপিং করতে বেরিয়েছিলেন মার্কোস ফালোপা। সেখানে খোলামেলা মেজাজে পাওয়া গেল লাল-হলুদ কোচকে। আমেরিকোর বাবার সঙ্গে হালকা আলাপচারিতার মাঝে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল টিমের প্রসঙ্গও। মার্কোস কিন্তু মেহতাব-খাবরাদের একাগ্রতায় মুগ্ধ। সুয়োকার চোটটাই যা একটু চিন্তায় রেখেছে। নইলে বাকি দল নিয়ে খুশিই ফালোপা। বলেও দিলেন, “আমার দল ভাল জায়গায় রয়েছে। মেহতাব-খাবরা-বলজিৎ-লালরিন্দিকা-লোবোরা খুব ভাল ফুটবলার। আশা করছি এই টিম নিয়ে এএফসি কাপ সেমিফাইনাল পৌঁছতে পারব।”
আমেরিকো আবার খুশি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা শেষমেশ এটা উপলব্ধি করায় যে, মোটা মানুষও ভাল ফিটনেস ট্রেনার হতে পারে। নিজের ওজন কমানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করলেও লাল-হলুদের খাদ্যরসিক ফিজিক্যাল ট্রেনার ডায়েট মেনে চলতে পারেন না। এ নিয়ে অবশ্য তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। হাসতে হাসতেই বলে দিলেন, “এই চেহারায় আমি ফিটনেস ট্রেনার, এ কথা জানার পর সবাই-ই প্রথমে চমকেই ওঠে। কলকাতার আগেও এ রকম অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। পরে অবশ্য আমার কাজ দেখার পর সবাই উপলব্ধি করেছে, মোটা মানুষও ভাল ট্রেনার হতে পারে।’’ ইস্টবেঙ্গলে আসার পর তাঁর যে নতুন নামকরণ হয়েছে ‘বাবাই’ সেটা স্বভাবতই আমেরিকো-র কানে গিয়েছে। রাগ করার বদলে, বিষয়টা উপভোগই করছেন তিনি। “বাবাই নামটা তো ভালই। ভালবেসে কেউ আমাকে এই নামে ডাকতেই পারে। ব্যাপারটা বেশ মজার!” |