তিনিই কোচ। অথচ সমস্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক।
চার্চিল ব্রাদার্সের মডেলে এ বারের সন্তোষ ট্রফির কোচিং টিম সাজিয়েছে আইএফএ। তাতে অবশ্য কোনও ক্ষোভ নেই কোচ শিশির ঘোষের। রবিবার বিকেলে যুবভারতী থেকে জর্জ টেলিগ্রাফ-ডালহৌসি ম্যাচ দেখে বাড়ি ফেরার পথে বললেন, “সুভাষ দা’র ওপর ফোকাস থাকা ভাল। তা হলে আমার মতো কোচিংয়ে নতুন আসা লোকের ওপর চাপ কমে যায়।”
এ দিনই টিডি সুভাষ ভৌমিকের মতো বাংলা কোচ শিশির ফুটবলারের খোঁজে গিয়েছিলেন কলকাতা লিগের খেলা দেখতে। জর্জের সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার ১৬ নম্বর জার্সিকে পছন্দ হয়েছে তাঁর। আইএফএ এই ম্যাচের কোনও টিমলিস্ট না দিতে পারায় প্লেয়ারটির নাম জানা হয়নি শিশিরের!
এক সময়ের সেরা বাঙালি স্ট্রাইকার মনে করছেন, সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে তাঁর কোনও ইগোর লড়াই নেই। ময়দানে একদা ‘হাতে টাকা পায়ে বল’ মন্তব্য করে হইচই ফেলে দেওয়া ঠোঁটকাটা শিশির বললেন, “সুভাষদা’র কাছে তো আমি শিখব। ওঁর কোচিংয়ে একানব্বই সালে মোহনবাগানে খেলেছি। উনি অনেক বড় মাপের কোচ। তবে চেষ্টা করছি নিজের মতটা সব সময় দিতে। আমি যতটা সুভাষদাকে চিনি তার ভিত্তিতে বলতে পারি, আমার সিদ্ধান্ত সঠিক হলে তিনি নেবেনই।” |
কোচেদের দিনভর

শুরু হয়ে গেল ফুটবলার স্পটিংয়ের কাজ। রবিবার সল্টলেক স্টেডিয়ামে
কলকাতা লিগ ম্যাচে বাংলার কোচ শিশির ঘোষ। ছবি: উৎপল সরকার |
গত দু’বছর কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে পুলিশ এসি-র কোচ ছিলেন সফল বাঙালি স্ট্রাইকারদের শেষ প্রজন্মের অন্যতম প্রতিনিধি। পুলিশে কোচিং করে হারিয়েছেন মোহনবাগান ও মহমেডান স্পোর্টিংকে। অনুশীলন ম্যাচে হারিয়েছিলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গলকে। সন্তোষ ট্রফিতে কোচিংও শিশিরের কাছে নতুন নয়। সুব্রত ভট্টাচার্যের সহকারী হয়ে ২০০২-এ মণিপুরে গিয়েছিলেন বাংলা দল নিয়ে। সে বার বিদায় নিতে হয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। “আমরা যখন সন্তোষ ট্রফি খেলতাম তখন সব ফুটবলার পাওয়া যেত। তারকা, জুনিয়র... সব। এখন সেই সুযোগ নেই। তবু যে ফর্মুলায় আমরা টিম বাছার কথা ভেবেছি তাতে আশা করছি একটা ভাল দলই তৈরি হবে।” কথা বললেই বোঝা যায়, টিডি সুভাষ ভৌমিকের মতোই রীতিমতো হোমওয়ার্ক করে নেমেছেন শিশির। বললেন, “প্রিমিয়ার লিগে গত দু’বছর কোচিং করানোর সুবাদে প্রায় সব ফুটবলারকে চিনি। সুভাষদা গোয়াতে কোচিং করাচ্ছিলেন। তাই তিনি সবাইকে না-ও চিনতে পারেন। ওঁকে সেই ফুটবলারদের চিনিয়ে দেওয়াটাই আমার অন্যতম কাজ।”
এখনও জানেন না এ বারের সন্তোষ ট্রফি কোথায় হবে। এ বার পুলিশ টিমে কর্তা বদলের পরে সেখানেও কোচিং করাচ্ছেন না। ফলে চার্চিলকে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে সুভাষ যেমন বেকার, শিশিরও তেমনই। বলছিলেন, “আইএফএ-র অনূর্ধ্ব দলগুলো আর ক্লাব পর্যায়ে কোচিং করিয়েছি। এখন আমার লক্ষ্য নিজেকে আরও প্রতিষ্ঠিত করা। বাবলুদার সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি। এ বার সুভাষদার কাছ থেকেও খুঁটিনাটি শিখতে চাই।”
হাতে নোটবই নিয়ে আগামী একমাস তিনি ছুটে বেড়াবেন মাঠ থেকে মাঠ। রবিবার সেই নোটবইতে একটাই নম্বর উঠেছে। আগামী দিনে সেখানে আরও নাম উঠবে। শিশির ঘোষ বলছেন, “কোনও কাজেই পরিশ্রম না করলে সাফল্য আসে না।” বাংলা কোচের মনের কোণে সুপ্ত ইচ্ছে, তিনবারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন কোচ সুভাষের আলোয় আলোকিত হয়েও নিজের কোচিং দক্ষতাকেও শান দেওয়া। তীক্ষ্ণ করা। |