|
|
|
|
পুঞ্চে ফের পাক সেনার গুলি, পাল্টা জবাব ভারতেরও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভেঙে ফের নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি চালাল পাকিস্তানি সেনা। সোমবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চে পাক বাহিনীর গুলিতে পাঁচ ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর ক্ষত এখনও টাটকা। শুক্রবার বেশি রাতে সেই পুঞ্চেই ভারতীয় সেনা চৌকি লক্ষ করে প্রায় সাত হাজার রাউন্ড গুলি চালাল পাক সেনা। যাকে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সবথেকে বড় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভঙ্গ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পাক হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও।
সোমবার রাতে ভারতীয় জওয়ানদের উপর হামলা থেকে কাল রাতের গুলিবৃষ্টি গোটা ঘটনাকে এক সূত্রে বেঁধে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার কর্তারা মনে করছেন, সবটাই আসলে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সেপ্টেম্বরের প্রস্তাবিত বৈঠকের আগে পাক-সেনার ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা। সোমবারের ঘটনায় প্রথমে নয়াদিল্লি সরাসরি পাক সেনাকে না দুষলেও পরে বিরোধীদের চাপে সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি সরাসরি পাক সেনার দিকেই আঙুল তুলেছেন। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পাক সেনার আচরণ অনুযায়ীই ভারত নিয়ন্ত্রণরেখায় এবং কূটনৈতিক স্তরে আচরণ করবে। এতেই পাক সেনা অশান্তি বাধানোর মরিয়া চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন সেনা-কর্তারা। |
|
নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সীমান্তরক্ষীবাহিনীর টহলদারি। শনিবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে। ছবি: পিটিআই |
জম্মু থেকে সেনার মুখপাত্র এস এন আচার্য জানান, শুক্রবার রাত ১০টা ২০ থেকে পুঞ্চের দুর্গা ব্যাটেলিয়ন এলাকার একাধিক ভারতীয় চৌকির উপর গুলিবৃষ্টি শুরু করে পাক বাহিনী। ভোর সাড়ে চারটে পর্যন্ত গুলি চলে। রাতভর গুলিবৃষ্টি থেকে স্পষ্ট, ভারতের দিকে যত বেশি সম্ভব প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতিই পাক সেনার একমাত্র লক্ষ্য ছিল। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতীয় জওয়ানরাও। মাঝারি পাল্লার মেশিনগান ও ইনসাস থেকে সাড়ে চার হাজার রাউন্ডেরও বেশি গুলি চালান ভারতীয় জওয়ানরা। ছোড়া হয় রকেট, রকেট-প্রপেল্ড-গ্রেনেড এবং মর্টারও।
কেন এত মরিয়া হয়ে ক্ষমতা জাহির করতে চাইছে পাক সেনা?
সরকারি সূত্রের খবর, কিয়ানির পরে নতুন সেনাপ্রধান বেছে নেওয়ার কঠিন পরীক্ষা নওয়াজের সামনে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগের দু’বারের মেয়াদে তিন জন সেনাপ্রধানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। প্রথম দফায় সেনার চাপে মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাঁকে গদি ছাড়তে হয়। পরের দফায় পারভেজ মুশারফের নেতৃত্বে তাঁর বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। কিন্তু কিয়ানি সেনাপ্রধান হিসেবে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়াননি। অনেকেই মনে করছেন, উত্তরসূরি হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল রশদ মাহমুদকে পছন্দ কিয়ানির। যিনি বর্তমানে ‘চিফ অফ জেনারেল স্টাফ’ পদে রয়েছেন। কিন্তু কিয়ানির পছন্দকেই নওয়াজ বেছে নেবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মুশারফের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এ বার নওয়াজ এমন কাউকে সেনাপ্রধান বাছতে চাইবেন, যিনি নির্বাচিত সরকারের উপরে ছড়ি ঘোরাবেন না। সেই বাছাই-পর্ব শুরু হওয়ার আগেই পাক সেনার কট্টরপন্থী অংশ সক্রিয় হয়ে উঠে এ ভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলেই মত দিল্লির সরকারি কর্তাদের।
|
পুরনো খবর: সীমান্তে ফের সংঘর্ষ, আহত দুই পাক সেনা |
|
|
|
|
|