দলের দক্ষিণের জানলা খুলতে আসছেন নরেন্দ্র মোদী।
দক্ষিণে একমাত্র কর্নাটকে সরকার গড়েছিল বিজেপি। আজ তাও হাতছাড়া। বাকি রাজ্যগুলিতেও বিজেপি-র তেমন উপস্থিতি নেই। ভরসা ছিল অন্ধ্রপ্রদেশ। কেন্দ্রে সরকারে এলেই তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। এখন সেই পালের হাওয়াও কেড়ে নিয়েছে কংগ্রেস।
লোকসভা ভোটে বিজেপি-র প্রধান মুখ হয়ে মোদীর কাঁধে এখন দু’শোর বেশি আসন আনার দায়। ভোটের আগে একশো জনসভা করতে চান। তার প্রথমটিই শুরু হচ্ছে আগামিকাল। উত্তপ্ত হায়দরাবাদে।
কিন্তু মোদীর এই চেষ্টার পথটি আর ততটা সহজ নয়। হায়দরাবাদের এই সভাকে ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি। উত্তরাখণ্ডের ত্রাণের কথা মাথায় রেখে এই সভায় আসার জন্য পাঁচ টাকা করে চাঁদা নেওয়াকে ঘিরে সমস্যা আছে। তা ছাড়া মোদীর সভার আগে কংগ্রেস তড়িঘড়ি তেলঙ্গানা গঠনের কথাও ঘোষণা করে দিয়েছে। এখন অন্ধ্রের উপকূল ও রায়লসীমার বিজেপি কর্মীরাই প্রশ্ন তুলছেন, রাজ্য ভাগে কী লাভ হবে অন্ধ্রের বাকি অংশের? কেন বিজেপি এত দিন শুধু তেলঙ্গানার কথাই ভেবে এসেছে? বাকি অংশের প্রতি সমব্যথী নয় কেন দল?
রাজ্য বিজেপি সভাপতি কিষাণ রেড্ডি এখন রায়লসীমা ও উপকূল অন্ধ্রে দলের কর্মীদের সামলাচ্ছেন। তাঁদের আশ্বাস দিচ্ছেন, তেলঙ্গানা গঠন কংগ্রেসের স্রেফ নির্বাচনী ভাঁওতা। আর সত্যিই পৃথক রাজ্য হয়ে গেলেও চিন্তা নেই। আগামিকাল বিজেপি-র যে প্রধান কাণ্ডারী হায়দরাবাদ আসছেন, তাঁর নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার হলেই বাকি অন্ধ্রও সমান উন্নত হবে। উন্নতি হবে তেলঙ্গানারও। কারণ, গুজরাতের মতোই গোটা দেশে যিনি উন্নয়ন করতে পারেন, তাঁর নাম নরেন্দ্র মোদী। উন্নয়নের চাবিকাঠি তাঁর হাতেই।
তাই সভার আগে হায়দরাবাদ ছেয়ে গিয়েছে মোদীর পোস্টারে। স্লোগান, ‘নতুন ভাবনা, নতুন ভরসা।’ মোদীর ছবি আর নতুন স্লোগানের পোস্টার দিল্লিতেও। মোদীই যে দলের প্রধান কাণ্ডারী, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ‘দেওয়াল লিখনে’। দিল্লিতে এই পোস্টার নিয়ে দলে কম বিতর্ক হচ্ছে না। অনেক নেতা বলছেন, এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে ঠিক হয়নি কে নেতা, কী স্লোগান। কিন্তু হায়দরাবাদের সভায় মোদীকে মুখ করে জল মাপার কাজও শুরু করে দিল সঙ্ঘ ও বিজেপি।
মোদীর সভার তদারকি করতে আজই শহরে এসে পৌঁছেছেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু। দক্ষিণের রাজ্যে দলের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে সঁপেছেন স্বয়ং মোদীই। মোদীর সভার আগে যুবকদের আকৃষ্ট করতে অনলাইন নথিভুক্তির কাজও শুরু হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে ত্রাণের কাজে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে যুবকদের জাতীয়তাবাদের আবেগে সামিল করতেই এই উদ্যোগ।
এ পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ যুবক নাম লিখিয়েছেন। দলের নেতাদের মোদীই জানিয়েছেন, এমন সাড়ায় আপ্লুত তিনি। ত্রাণের কাজে প্রথম হাত বাড়িয়েছেন কানাডা প্রবাসী এক শিখ। তাঁর মা মোদীকে দেখতে চান। মোদী বলেছেন, তাঁর উদ্যোগে সাড়া পড়তেই ভয় পেয়েছে কংগ্রেস। তাই তড়িঘড়ি তেলঙ্গানার ঘোষণা। অতীতে তিনি যত বার কোনও বিষয়ে সরব হয়েছেন, তত বার কংগ্রেস তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছে। সে আফজল গুরুই হোক বা আজমল কসাবের ফাঁসি।
মোদীকে ঘিরে কংগ্রেসের কপালে ভাঁজই এখন শক্তি জোগাচ্ছে বিজেপির কাণ্ডারীকে।
|