আনন্দ নেই রিয়াবাড়ি চা বাগানে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বানারহাট |
একসঙ্গে ছয় জন চা বাগানের বাসিন্দা সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে মারা গিয়েছেন। তাই খুশির ইদ পুরোপুরি ফিকে হল বানারহাটের রিয়াবাড়ি চা বাগানে। শুক্রবার ইদ উপলক্ষে বাগানের মসজিদকে কেন্দ্র করে ফি বছর বড় ধরনের মেলা বসে। নমাজ পড়ার পর এ দিন দুপুরে প্রায় ৫ হাজার মানুষজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হত এলাকায়। এবার তা বন্ধ। নমাজ ছাড়া সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল।
রিয়াবাড়ি বাগানের বহু বছরের প্রাচীন মসজিদে ইদের দিন রিয়াবাড়ি ছাড়াও আশেপাশের কাঁঠালগুড়ি, কারবালা চা বাগান থেকে বহু মানুষ আসেন। মেলা বসে এলাকায়। দিনভর আনন্দে উল্লাসে সকলে আনন্দ করেন। এক দিনেই ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। বাগানের মসজিদের ইমাম জাভেদ আখতার বলেন, “প্রস্তুতি সব ছিল। প্রায় ৫ হাজার মানুষের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। মসজিদে রঙের প্রলেপ দেওয়া-সহ সাজানোর কাজ চলছিল। দুর্ঘটনার পর সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চা বাগানের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি।” বৃহস্পতিবার বিকালে জলপাইগুড়িতে ছয়জনের দেহ ময়না তদন্ত করানোর পর সন্ধ্যায় গুদাম লাইনে দেহগুলি নিয়ে আসা হয়। কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা বাগান। রাতে বাগানে কবর দেওয়া ছ’জনকে। |
|
শোকে ফিকে উৎসব। এখানেই ঈদ উপলক্ষে অনুষ্ঠান ও মেলা হওয়ার কথা ছিল।—নিজস্ব চিত্র। |
বৃহস্পতিবার রিয়াবাড়ি বাগানের নৈশপ্রহীর সুভান মিঁয়ার নির্মীয়মাণ সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে সুভানবাবুর তিন ছেলে সহ প্রতিবেশী আরও তিন জন মারা যান। বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুভান বাবু-সহ তাঁর এক প্রতিবেশী। পাঁচ ছেলের মধ্যে যে তিন ছেলে মারা গিয়েছেন জানানো হয়নি সুভানবাবুকে। স্ত্রী সফিরন দেবী সন্তানদের হারিয়ে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বাগানের গুদাম লাইনের অপর তিন বাসিন্দার পরিবারের সদস্যদেরও একই অবস্থা।
সুভান মিয়াঁর মৃত ছেলে জামালের স্ত্রী নাসিরিন এই দিন বলেন, “ইদের জন্য বাড়ির সকলের জন্য তিন ভাই জামা কাপড় কিনে এনেছিল। একসঙ্গে আনন্দ করব বলে ঠিক করেছিলাম। ২৪ ঘণ্টায় সব পাল্টে গেল।” বাগানের বাসিন্দা তওসিব আলি বলেন, “ইদের দিন, তাও আমরা এলাকার কেউ নতুন জামা পরিনি। কারও মন ভাল নেই।”
|
পুরনো খবর: সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে ছ’জনের মৃত্যু বানারহাটে |
|