বনবাংলোর জমি আসলে কার, নয়া বিতর্ক তাকদায়
তাকদার বনবাংলোয় আগুন দিলেন আন্দোলনকারীরা। আগুন জ্বলে উঠল কলকাতায় আইএসআই-এর মাথায়! সেই আগুনের আঁচ গিয়ে পৌঁছল রাইসিনা হিলে!
দার্জিলিংয়ের তাকদা বাজারের কাছে জীর্ণ একটি বাড়ি দেখে সেটি সাজিয়ে গুছিয়ে পর্যটকদের থাকার উপযুক্ত বনবাংলো তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন দফতর তাঁর প্রস্তাবকে বাস্তবে রূপায়িত করেছিল। গত বছর অগস্ট মাসে সেই বনবাংলোর উদ্বোধন করে সেখানে এক রাত কাটিয়েও আসেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনের বছর না ঘুরতেই বৃহস্পতিবার মাঝরাতে তাকদার সেই বনবাংলোর ভিভিআইপি ঘর এবং তার লাগোয়া হল ঘর পুড়ে গেল। সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি দেখে চমকে উঠলেন এ বছর পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী তথা ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই)-এর প্রাক্তন অধিকর্তা শঙ্কর পাল। এ তো আইএসআই-এর সম্পত্তি! এখানেই তো গবেষণাকেন্দ্র গড়ার কথা ছিল আইএসআই-এর! দিল্লি গিয়ে শঙ্করবাবু রাইসিনা হিলে দেখা করেছেন আইএসআই-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং অধুনা
দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁকে জানিয়েছেন নিজের বিস্ময়াহত ‘আবিষ্কার’-এর কথা। শঙ্করবাবুর কথায়, “রাষ্ট্রপতিও বললেন, ওটা আইএসআই-এরই সম্পত্তি। আইএসআই-এর চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনিও সে রকমই জানতেন। তার এই পরিণতিতে তিনিও অবাক!”
তাকদার পুড়ে যাওয়া বনবাংলো। —ফাইল চিত্র
যদিও দার্জিলিঙের ডিএফও-র দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ওই জমিটি তাকদা ক্লাবকে লিজ দিয়েছিল বন দফতর। মূলত সেনাবাহিনীর অফিসাররা সেখানে যাতায়াত করতেন। সেনা ছাউনি অন্যত্র সরে যাওয়ায় অব্যবহারে ক্লাব ভবনটি জীর্ণ হয়ে যায়। পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষ জমিটি আইএসআই-কে সাব লিজ দিয়েছিলেন কি না, তা বন দফতরের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। বন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, কয়েক দশক আগে তাকদা ক্লাবের পক্ষ থেকে জমিটি আইএসআইকে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে বন বিভাগের সম্মতি প্রয়োজন। পুরনো দিনের নথিপত্র কী বলছে? ওই বনকর্তা জানান, পাহাড়ে বন্ধ চলছে। অফিস পুরোপুরি সচল না হলে পুরনো নথিপত্র দেখা সম্ভব নয়।
আইএসআই-এর কর্মীদের দাবি, সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ তাকদা বাজারের কাছে ওই জমিটি রাজ্যের বন দফতরের কাছ থেকে লিজে নিয়েছিলেন। সেই লিজের মেয়াদ ফুরোয়নি। লিজ বজায় রাখার জন্য যে সমস্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়, সবই আইএসআই করেছে। পরে ওই অঞ্চল দিয়ে যেতে যেতে মুখ্যমন্ত্রীর জায়গাটি পছন্দ হয় এবং সেখানে বনবাংলো গড়ে ওঠে। যা এ বার পুড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে অনির্দিষ্ট কালের বন্ধ শুরুর আগে মোর্চাই ওই বাংলোয় আগুন লাগিয়েছে। শঙ্করবাবু অবশ্য এ সব বিতর্কে ঢুকতে চান না। তিনি চান, আইএসআই সম্পত্তি ফিরে পাক এবং সেখানে গবেষণাকেন্দ্র গড়ে উঠুক। যদিও মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাং বলেন, “আইএসআইয়ের পক্ষ থেকে কালিম্পঙে গবেষণাগার তৈরির ব্যাপারে বৈঠকের কথা আমার জানা নেই। কিছু বলতে পারব না।”
মুখ্যমন্ত্রী যখন ওখানে বনবাংলো গড়ে তুলতে চাইলেন, তখন আইএসআই প্রকৃত তথ্য তাঁকে জানাল না কেন? সংস্থার মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক এস কে আইয়ার বলেন, “এ বিষয়ে কিছু জানি না। ১২ তারিখের পরে খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।” ঘনিষ্ঠ মহলে আইএসআই-এর কর্মীরা বলছেন, মোর্চা এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরাগভাজন হওয়ার ঝুঁকি নিতে চাননি বলেই সময়মতো বিষয়টি নিয়ে তৎপর হননি সংস্থার কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন এবং পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে বিতর্কটি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
হিতেনবাবু বলেন, “আইএসআই-এর দাবি নিয়ে কিছু জানি না। ওরা জানালে খোঁজ নেব।” কৃষ্ণেন্দুবাবুর কথায়, “দফতরের সচিবের সঙ্গে কথা বলে তথ্য জেনে বলব।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.