রোগীর লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে রক্ত-সহ বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। চিকিৎসক বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষা ‘স্লিপ’-এ করে দিলেই তা নিয়ে রীতিমতো টানাটানি শুরু হয়ে দেন ওই কর্মীরা। বৃহস্পতিবার রোগীর আত্মীয়র কাছ থেকে সেই স্লিপ নেওয়া নিয়ে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির দুই কর্মীর সঙ্গে শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির গাড়ির চালকের বচসা এমনকী হাতাহাতির ঘটনা ঘটল।
জ্বরের কারণে শনিবার পুরুষ মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন মাটিগাড়ার বাসিন্দা বলাই সরকার। এ দিন রক্ত পরীক্ষার জন্য চিকিৎসক একটি স্লিপ লিখে দেন। তাঁর স্ত্রী পম্পা সরকার ওয়ার্ড থেকে বার হওয়ার সময় সেই স্লিপ তাঁর হাত থেকে নিয়ে একটি ল্যাবরেটরির দুই কর্মী তাদের জায়গায় পরীক্ষার করে নিতে জোরজার করতে শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, নিবেদিতা মার্কেটের ল্যাবরেটরির দুই কর্মী ওই মহিলার থেকে স্লিপ নিয়ে তাঁদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার কথা বলেন। শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির গাড়ির এক জন চালক ওই মহিলাকে তাদের সংস্থায় অল্প খরচে সেই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। ওই কর্মীর কথায়, “বাইরের ওই সব ল্যাবরেটরিতে বেশি টাকা লাগবে। আপনি চাইলে ওয়েলফেয়ার থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।” তাদের খদ্দের ছিনিয়ে নিচ্ছে দেখে এরপরেই ল্যাবরেটরির দুই কর্মীর সঙ্গে চালকের বচসা বাঁধে। প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে হাতাহাতি শুরু হয়। গাড়ির চালক ওই ব্যক্তিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গাড়ির চালক মহম্মদ গিন্নার চোখের নীচে আঘাত লাগে। বিষয়টি তাঁরা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপারকে জানান। কী করে বাইরের প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির কর্মীরা হাসপাতালের ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জীব মজুমদার বলেন, “সব শুনেছি। কী ভাবে এঁরা ঢুকছেন তা দেখা হবে। বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি বা অন্য কোনও সংস্থা এ ভাবে কোনও হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে রোগীদের জোর করতে পারেন না।” হাসপাতাল লাগোয়া ওই ল্যাবরেটরির কর্মী মোহন্ত মিত্রর দাবি, রক্ত পরীক্ষার জন্য তিনি অনেক কম টাকার কথা বলেছিলেন। অথচ ওয়েলফেয়ারের ওই চালক এসে ভুল বুঝিয়ে ঝামেলা বাঁধায়। এ দিন শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কার্যকরী সভাপতি দীপঙ্কর চক্রবর্তী জানান, তিনি ঘটনা শুনেছেন। দু’পক্ষের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে দ্রুত আলোচনা করবেন। তবে ল্যাবরেটরির লোকেরা হাসপাতালে কী ভাবে ঢুকে পড়ছে তা কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত। |