জন্মের সময়ে মাথার উপরে ছোট একটি সিস্ট ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সিস্ট বাড়তে থাকে। আর দশটা শিশুর মতো চাইলেও হামা দিতে পারত না তোফাজ্জেল। বসতে গেলে টলে পড়ে যেত।
আট মাস বয়স হতে হতেই সেই সিস্ট এতটাই বড় হয়ে ওঠে যে, দেখে মনে হত মাথার উপরে যেন আরও একটি মাথা রয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসকেরা জানান, অস্ত্রোপচার করে ওই সিস্ট বাদ দিতে গেলে জীবন সংশয় হতে পারে শিশুটির। আগরতলা থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরের যাত্রাপুর গ্রামের শাহলাম মিয়াঁ ও রাবিয়া খাতুন তাঁদের প্রথম সন্তানের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন। |
বাইপাসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসক শিশির দাস অস্ত্রোপচার করে সিস্টটি বাদ দেন। ঈদের আগে ছেলে সুস্থ হওয়ায় খুশি শাহলাম-রাবিয়া। তবে শিশিরবাবুর দাবি, দেশে এমন অস্ত্রোপচার আগে হয়নি। কলকাতার শল্য চিকিৎসক মহলও স্বীকার করেছেন যে এমন অস্ত্রোপচার যথেষ্ট বিরল। নিউরো সার্জন পরিমল ত্রিপাঠী বলেন, “নাক বরাবর মাথার পিছনে বা মাঝখানে এই ধরনের সিস্ট হতে পারে। মস্তিষ্কের অংশ কতটা বাদ গিয়েছে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অস্ত্রোপচারের পরেও নিয়মিত নজরদারি দরকার।”
জানা গিয়েছে, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় প্রায় পাঁচ হাজার শিশুর মধ্যে এক জনের ক্ষেত্রে এই ধরনের সিস্ট দেখা যায়। সেটি দেখা যায় মাথার পিছন দিকে। আবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, রাশিয়া ও মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে এই ধরনের সিস্ট হয় মাথার সামনের দিকে। ভারতে এ ধরনের ঘটনা বেশ বিরল। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘এনকেফ্যালোমেনিঙ্গোসেল’ বলা হয়। |