আজ ঈদ-উল-ফিতর। মাস’ভর প্রস্তুতির পর আজ মিলনের উৎসব। মসজিদ বা ঈদগাগুলি সেজে উঠেছে আলোকমালায়। কোথাও কোথাও রঙিন ফুল, কাগজ আর বেলুনও চোখে পড়েছে।
কেমন হল ঈদের প্রস্তুতি? জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্যে কেনাকাটার হালটাই বা কেমন?
বসিরহাটের বাদুড়িয়ায় রাস্তা জুড়ে আলোর তোরণ তৈরি করা হয়েছে। শুখপুকুরিয়ায় একটি মসজিদ সাজানোর পাশাপাশি রাখা হয়েছে রঙিন ফোয়ারা। কেনাকাটার জন্য ভিড় উপচে পড়েছে বাজারগুলিতে। ভিড় খাবারের দোকান আর জামাকাপড়ের দোকানেও। মনোহারি দোকানেও মহিলাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় এ বার ব্যবসা তেমন জমেনি বলে জানালেন দোকানিরা। একই অবস্থা ক্রেতাদেরও। ইচ্ছে থাকলেও মনের মতো জিনিস কিনতে পারছেন না অনেকেই। বসিরহাট শহরের দোকানি খগেন কর্মকার, ইয়াসিন গাজি বললেন, “ঈদের জন্য দোকানে ভিড় হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু মানুষ হাত ছোঁয়াতে পারছেন না। সামান্য জামাকাপড় কিনছেন। বেশিরভাগই দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন।” |
বাদুড়িয়ার নুরুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম জানালেন, “ঈদের আগের রাতকে বলে চাঁদ রাত। সারা রাত মানুষ জেগে থাকে, আতসবাজি ফাটিয়ে আনন্দ করে। কিন্তু জিনিসপত্র থেকে জামাকাপড়ের যা আগুন দাম তাতে বিশেষ কিছু কেনার অবস্থা নেই। ছোট ছেলেমেয়েদের জামাকাপড় কিনতেও তিন থেকে চারশো টাকা লাগছে। ইচ্ছে থাকলেও তাই আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের সামান্য কিছু কেনা ছাড়া আর উপায় নেই।”
পবিত্র এই উৎসবে অনেকেই দরিদ্রদের দান করেন। কিন্তু দামের খাঁড়া কোপ মেরেছে সেখানেও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের গৃহবধূ রিজিয়া বেগম, আরেফুন বেগম বললেন, “প্রতি বছর যত লোককে জাকাতের জামাকাপড় দিতাম, এ বার তা দিতে পারিনি। গত বার লুঙ্গি কিনেছিলাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। এ বার সেটাই বেড়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা হয়েছে। শাড়ি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কিনতাম। এ বার দেখি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। জিনিসপত্রের বেশি দামের জন্য খাওয়া থেকে জামাকাপড় সবেতেই খরচ কমাতে হয়েছে।”
শুধু চড়া দামই নয়, বৃষ্টিও থাবা বসিয়েছে ঈদের বাজারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের বস্ত্র বিক্রেতা পরিতোষ সাহা, উত্তম সাহারা জানালেন, “গত বছর থেকে এ বার বিক্রি অনেক কম। জিনিসপত্রের দাম তো বেড়েইছে। বৃষ্টির জন্যও বিক্রিবাটার ক্ষতি হয়েছে।” তবে এর মধ্যেও আনন্দে মেতেছে উলুবেড়িয়ার নিমদিঘির ছাত্র হুমায়ুন রসিদ মোল্লা। তাঁর কথায়, “আজ চাঁদ রাত। সন্ধে থেকেই আমাদের অনুষ্ঠান হবে। ফিস্ট হবে।” আর এক গৃহবধূ লালবানু বেগম বলেন, “ এই দিনটা তো আর পাঁচটা দিনের মতো নয়। তাই একটু নতুন রান্না হবে। পরিবারের সকলের জন্য এটুকু তো করতেই হবে।”
|
বাড়ির পাশের দিঘি থেকে উদ্ধার হল এক বালকের মৃতদেহ। বৃহস্পতিবার অশোকনগর থানার বড় বামুনিয়া এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানায়, তার নাম তামিম হোসেন (৭)। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, তামিমের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে। বড় বামুনিয়ায় মামার বাড়িতে থাকত সে। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ খেলতে যায়। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। দেড়টা নাগাদ মামা মাহাবুব হোসেন বাড়ির পাশে দিঘিতে গিয়ে দেখেন একটি বাঁশের পাটাতন ভাঙা। সন্দেহ হওয়ায় জলে নেমে খুঁজতে থাকেন তিনি। তখনই তামিমের দেহ উদ্ধার হয়। |