ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে সুপার থার্সডে, বলছেন পাড়ুকোন
চিনে বিপ্লব থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের
বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে ভারতের অন্যতম উজ্জ্বল দিন। প্রকাশ পাড়ুকোন যাকে বলছেন, “ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের সুপার থার্সডে!” যে দিন গুয়াংঝৌয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে সাইনা নেহওয়াল-সহ তিনজন ভারতীয় সিঙ্গলস কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন। যার মধ্যে দু’জন পি ভি সিন্ধু এবং পারুপল্লি কাশ্যপ নিজেদের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক উঁচু, হটফেভারিট প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে রীতিমতো সোরগোল ফেলে দিয়েছেন।
‘হায়দরাবাদের নতুন সাইনা’ সিন্ধু তো গতবারের চ্যাম্পিয়ন, লন্ডন অলিম্পিকে রুপোজয়ী, চলতি টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় বাছাই চিনের ইহান ওয়াংকে এক ঘণ্টার ভেতর স্ট্রেট গেমে ২১-১৮, ২৩-২১ হারিয়ে কার্যত ব্যাডমিন্টন দুনিয়াকে স্তম্ভিত করে দেন। পুরুষ বিভাগে কাশ্যপ বিশ্বের ছ’নম্বর হংকংয়ের ইউন হু-কে হারাতে আরও কম সময় নেন। ৩৭ মিনিটে বিশ্বের ১৭ নম্বর ভারতীয় জেতেন ২১-১৩, ২১-১৬। আর চিনের মাটিতে ভারতের সেরা বাজি সাইনা এক গেম পিছিয়ে পড়েও তাইল্যান্ডের প্রন্তিপ বুরানাপ্রসার্তসুক-কে ৫২ মিনিটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ১৮-২১, ২১-১৬, ২১-১৪।

পি ভি সিন্ধু।
প্রকাশ পাড়ুকোন কিংবা পুল্লেলা গোপীচন্দ ‘ব্যাডমিন্টনের উইম্বলডন’ অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন অতীতে। সাইনা ব্যাডমিন্টনে প্রথম ভারতীয় হিসেবে অলিম্পিক পদক জিতেছেন। কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ আটে তিনজন ভারতীয়ের ওঠার নজির অভূতপূর্ব। বিশ্ব ব্যাডমিন্টন থেকে কমপক্ষে তিনটি ব্রোঞ্জ পদক জেতার বিরল রেকর্ড গড়ার থেকে সাইনা-সিন্ধু-কাশ্যপরা আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে!
‘সুপার থার্সডে’ নিয়ে প্রকাশ বললেন, “সিন্ধুর মতো বাচ্চা মেয়ে আজ প্রমাণ করে দিল, চিনা মেয়েরা আর অপ্রতিরোধ্য নয়। তবে এই ভয়টা কাটাতে সাইনার অলিম্পিক মেডেলটা দারুণ কাজে লেগেছে। ওই একটা পদক ভারতীয় ব্যাডমিন্টন প্লেয়ারদের মানসিকতা যে কতটা পাল্টে দিয়েছে তা এ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সিন্ধু, কাশ্যপ, জয়রামদের দেখেই বোঝা যায়। আজ সাইনারও আগে রাখব সিন্ধুকে, ওর অসাধারণ জয়ের জন্য।”
প্রাক্তন জাতীয় কোচ বিমল কুমারও আজকের দিনটার জন্য গর্বিত। বললেন, “গোটা দেশ এই তিনজনের লড়াইকে সেলাম জানাবে নিশ্চয়ই। মজার ব্যাপার, তিনজনই হায়দরাবাদের। হায়দরাবাদই এখন ‘হোম অফ ইন্ডিয়ান ব্যাডমিন্টন’। আর তার জন্য গোপীচন্দের অ্যাকাডেমির আসল কৃতিত্ব।”

সাইনা নেহওয়াল

পারুপল্লি কাশ্যপ।
সেই গোপীচন্দ এখন সাইনা-সিন্ধুদের সঙ্গে গুয়াঝৌয়ে। সেখানে জাতীয় কোচ বলেন, “সেমিফাইনালে উঠে কমপক্ষে ব্রোঞ্জ পদক পাকা করাটাই আমাদের লক্ষ্য। আশা করি কাল সেই লক্ষ্য পূরণ করে ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে নতুন নজির গড়বে আমাদের ছেলেমেয়েরা। সিন্ধু আজ যে ভাবে দ্বিতীয় গেমে পেছন থেকে এসে জিতেছে সেটা ওর মাত্র কুড়ি বছর বয়সেই অসাধারণ মনের জোরের প্রমাণ। বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে তিন-তিনজনের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠাটাও ভারতের ব্যাডমিন্টনে নতুন ইতিহাস!”
স্বয়ং সিন্ধু বলছেন, “বলে বোঝাতে পারব না এই মূহুর্তে আমার কী মনে হচ্ছে! এটুকু বলতে পারি ১০০ শতাংশ দেওয়ার জন্য পুরো তৈরি ছিলাম। মাস তিনেক আগেই সুদিরমান কাপে ইহানের থেকে একটা গেম কেড়ে নিয়েছিলাম। তাই আজ ওকে নিয়ে মনে অন্তত ভয় ছিল না।” কাশ্যপের কথায়, “লন্ডন অলিম্পিকে আমার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা। অল ইংল্যান্ডও শেষ আটে খেলাটেলাই আমার ব্যাডমিন্টনে পরিবর্তনের কারণ। গুয়াংঝৌয়ে আমি আরও বড় সাফল্যের দিকে তাকিয়ে আছি।”
তবে দিনের তিন নায়ক-নায়িকার মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ সাইনা অবশ্য সতর্কিত মন্তব্য করেছেন। “এই পর্যায়ের টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনাল মানেও প্রচণ্ড কঠিন লড়াই। যেমন আমার প্রতিপক্ষ বায়ে দুর্দান্ত র্যালি করে। সুতরাং কালকের লড়াই কঠিন হবে,” বলেছেন তিনি।

ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের ত্রিমূতি: আজ গুয়াংঝৌয়ে ব্রোঞ্জ পদকের খোঁজে তিন ভারতীয়
সাইনা নেহওয়াল ইয়ন জু বায়ে


পি ভি সিন্ধু শিজিয়ান ওয়াং
• ১৩তম বাছাই কোরীয়র বিরুদ্ধে
সাইনা ৫-২ এগিয়ে। শেষ সাক্ষাতেও
২০১২ ডেনমার্ক ওপেনে জেতেন।
• এশিয়াড চ্যাম্পিয়ন, সপ্তম বাছাই
চিনার বিরুদ্ধে একমাত্র সাক্ষাতে
সিন্ধু জয়ী। এপ্রিলে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে।
পারুপল্লি কাশ্যপ পেংইউ ডু
• তৃতীয় বাছাই চিনার কাছে কাশ্যপ তিন বছর আগে ডেনমার্ক ওপেনে হেরেছিলেন।

*
বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন নিয়মে সেমিফাইনাল উঠলেই ব্রোঞ্জ নিশ্চিত।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.