|
|
|
|
স্ত্রীর দেহ নিয়ে ট্রেনে ২৪ ঘণ্টা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
ট্রেনে অসুস্থ স্ত্রী মারা যাওয়ার পর রেল কর্মীদের অনুরোধ করেও দেহ নামাতে পারেননি এক যাত্রী। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে ট্রেনেই কাটাতে হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করলেন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা সুর্দশন চৌহান। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে বুধবার গভীর রাতে তাঁর সহযাত্রীরা রেলের গার্ডকে বলায় মৃতদেহটি নামানো হয়। মহিলার মৃত্যু ওড়িশায় হলেও দেহটি কেন এত দূরে এনে নামানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দেহে পচন শুরু হয়েছিল বলে মৃতার পরিবারের অভিযোগ।
আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনের রেল পুলিশের ওসি প্রদীপ পাল জানান, গত বুধবার রাত ২টোর সময় চেন্নাই-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস থেকে জ্যোতি চৌহান (৩৬) নামে এক রেল যাত্রীর মৃতদেহটি নামানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উঃপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিনিয়র কমার্শিয়াল ম্যানেজার অলোকানন্দ সরকার এই প্রসঙ্গে বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে ওই ট্রেনে দায়িত্বে থাকা রেল কর্মীদের দেহ সম্পর্কে জানানো হয়েছিল কি না তা দেখছি। ”
সুর্দশন চৌহানের বাড়ি উত্তর প্রদেশের আজমগঢ় জেলা সালেপুরে। কর্মসূত্রে তিনি সপরিবার চেন্নাইয়ে থাকেন। সেখানকার একটি লোহার কারখানায় কাজ করেন। তাঁর এবং জ্যোতিদেবীর চার ছেলেমেয়ে। এর মধ্যে ছোট মেয়ে অঞ্জলি বাবা-মায়ের সঙ্গে ট্রেনে ছিল। ৫ অগস্ট রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ গুয়াহাটির হোজাইতে শ্বশুরবাড়ির যেতে সুদর্শনবাবু স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ওই ট্রেনে চেন্নাই থেকে রওনা দেন। তাঁরা এস-২ কামরায় ছিলেন। সুর্দশন জানান, “স্ত্রীর কিডনি ও হার্টের সমস্যা ছিল। ওড়িশার ব্রহ্মপুর স্টেশনের আগে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ট্রেনে রেলের কর্মীদের বিষয়টি জানাই। স্টেশনে ট্রেন থামলে চিকিৎসক আসেন। তিনি স্ত্রীকে ওষুধ দেন। রাত ১২টা নাগাদ দেখি ও মারা গিয়েছে।” কিছুক্ষণের মধ্যে রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান ও টিকিট পরীক্ষককে তিনি বিষয়টি জানান। তাঁর কথায়, “সেখানে কোনও স্টেশনে দেহ-সহ নামিয়ে দিতে বলেছিলাম। কেউ কিছু শোনেননি। দেহটি চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টা দেহটি এই ভাবেই ছিল। পচনও ধরে যায়। যাত্রীদের নিয়ে আলিপুরদুয়ারে গার্ডকে বললে দেহ নামানোর ব্যবস্থা হয়।” শ্বশুরবাড়ির লোকজন এলে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি ভাবা হবে বলে সুদর্শন জানান। |
|
|
|
|
|