এক গ্রিন পুলিশকর্মীর লাঠির আঘাতে চালকের কেবিনে থাকা ‘লুকিং গ্লাস’ ভেঙে আহত হন বাসচালক ও এক যাত্রী। ভাঙা কাচ ঢুকে যায় চালকের গালে ও যাত্রীর হাতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র হল হাওড়া সেতু চত্বর। ভাঙচুর করা হল একটি ট্রাফিক বুথ। আক্রান্ত হন কয়েক জন ট্রাফিক ও গ্রিন পুলিশকর্মী। আড়াআড়ি ভাবে বাস দাঁড় করিয়ে অবরোধ হল হাওড়া সেতু। বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা। লাঠি চালায় পুলিশ। ভাঙচুর ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে দুই চালক গ্রেফতার হন।
পুলিশ জানায়, এ দিন হাওড়া সেতুর মুখে একটি ৫৫ নম্বর রুটের বাস মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল। অভিযোগ, বারবার বলার পরেও চালক বাস না চালানোয় কর্তব্যরত এক গ্রিন পুলিশকর্মী লাঠি দিয়ে চালকের ডান দিকে থাকা আয়নায় আঘাত করেন। আয়না ভেঙে কাচে চালকের গাল কেটে যায়। এক যাত্রীর হাতে কাচ ঢুকে যায়। উত্তেজিত হয়ে অন্য যাত্রীরা বাস থেকে নেমে ওই গ্রিন পুলিশকর্মীকে মারধর করেন। বাধা দিতে এসে আক্রান্ত হন অন্য পুলিশকর্মীরাও। ভাঙচুর করা হয় সেতুর মুখে সদ্য হওয়া একটি ট্রাফিক বুথ। |
পুলিশ জানায়, এই ঘটনা চলাকালীন উত্তেজিত যাত্রীদের সঙ্গে যোগ দেন হাওড়া বাসস্ট্যান্ডে থাকা অন্য বাসকর্মী এবং হাওড়া সাবওয়েতে বসা কিছু হকার। সেতুর মুখে আড়াআড়ি ভাবে বাস দাঁড় করিয়ে অবরোধ করে দেওয়া হয়। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট ছড়িয়ে পড়ে ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুল পর্যন্ত। ফলে বন্ধ হয়ে যায় কলকাতা ও হাওড়ার দিকের সমস্ত যানচলাচল।
খবর পেয়ে এসিপি (উত্তর) জয়িতা বসু ও এসিপি ট্রাফিক (২) সৌমিক সেনগুপ্তের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। অবরোধ তুলতে গেলে বাসকর্মীরা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠি চালায়। পরে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয় পুলিশ।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বাপ্পা ঘোষ নামে এক বাসমলিক বলেন, “কোনও দোষ না করলেও ওই গ্রিন পুলিশ অযথা লাঠি মেরে কাচ ভেঙে দিয়েছে। চালক ও এক যাত্রী তাতে আহত হয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় বিনা কারণে পুলিশ লাঠিও চালিয়েছে।”
পুলিশের বক্তব্য, চালকের কেবিনের আয়না ভাঙার কথা ঠিক নয়। ওই বাসচালক দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলায় বাসটির গায়ে লাঠি দিয়ে মেরে চলে যেতে বলা হয়েছিল। তা না করে উল্টে বাসকর্মী ও কিছু হকার পুলিশকেই আক্রমণ করে ট্রাফিক বুথ ভাঙচুর করে। পুলিশ জানায়, হাওড়া সাবওয়েতে থাকা কিছু হকারও উত্তেজিত যাত্রীদের সঙ্গে যোগ দেয়।
হাওড়ার ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “বাসগুলো প্রতিদিন সেতুর মুখে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে। এমনই এক বাস চালককে চলে যেতে বলায় স্থানীয় বাসকর্মী ও হকাররা মিলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ব্যাপারে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।” |