স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হলেই স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড! এমনটাই সাজা শোনাল ব্রিটেনের আদালত।
অপরাধী এক ভারতীয় তরুণী। জন্ম ভারতের গোঁড়া শিখ পরিবারে। বিয়ের আগে সেখানে ছেলে-মেয়ের মেলামেশা একেবারে নিষিদ্ধ। অতএব বরের সঙ্গে মেয়েটির প্রথম দেখা হয় বিয়ের পরেই। সে শুধু এটুকুই জানত, পাত্র জন্মসূত্রে ব্রিটিশ। কয়েকশো মাইল পেরিয়ে বিদেশ-বিভুঁইয়ে গিয়ে তরুণী জানতে পারলেন তাঁর বর মানসিক ভারসাম্যহীন।
২০০৯ সালের সেই ঘটনা পাকেচক্রে আদালতের দোরগোড়ায় পৌঁছয়। সম্প্রতি বার্মিংহ্যাম আদালতের বিচারপতি হলম্যান জানালেন, মেয়েটির স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর মনটা এখনও একটি শিশুর মতোই রয়ে গিয়েছে। যৌন সম্পর্ক কী, সে সম্পর্কে কোনও বোধই তৈরি হয়নি তাঁর। অতএব আর পাঁচ জন পুরুষের মতো ব্যবহার তাঁর কাছ থেকে আশা করা অর্থহীন। সে দিক থেকে মেয়েটি যদি জোর করে তাঁর স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে যান, আদালতের চোখে তিনি অপরাধী। সাজা যাবজ্জীবন জেল।
ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের একটি হোম এখন মধ্য তিরিশের ওই যুবকের ঠিকানা। আদালতের সাজা শোনার পরও কিন্তু এতটুকু ক্ষোভ-দুঃখ উগরে দেননি তরুণী। বরং হলম্যানকে অনুরোধ করেন, “দয়া করে বিয়ের স্বীকৃতিটুকু কেড়ে নেবেন না।” রাজি হয়েছেন বিচারপতি। জানালেন, মেয়েটি একেবারেই পরিস্থিতির শিকার। যা হয়েছে, তার পিছনে ওর কোনও হাত নেই। মাঝেমধ্যে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন তিনি। এর থেকে বেশি নয়। তাঁর কথায়, “ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক। এবং সেটাও খুব সাহস এবং সম্মানের সঙ্গেই মেনে নিয়েছেন তরুণী... যেখানে বিয়ের পর সহবাস ও স্বামী-স্ত্রী শারীরিক সম্পর্কটাই স্বাভাবিক।”
আদালতের এই রায়ে হইচই পড়ে গিয়েছে খোদ ব্রিটেনেও। সে দেশে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্ক না থাকলে, আইনত সেটা বিয়েই নয়। সেখানে আদালত আইনের বাইরে গিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে যুগান্তকারী বলেই আখ্যা দিচ্ছে রানির দেশ। |