‘পাগড়ি সচেতনতা দিবস’ নিয়ে প্রচারকার্যের জন্যই ইতালিতে গিয়েছিলেন। সে দেশের নিয়মের ফেরে পাগড়ি খুলেই তল্লাশি করা হল দিল্লির শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটির প্রধান মনজিৎ সিংহ ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গীকে। মঙ্গলবার বিকেলে রোম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে শিখ সম্প্রদায়।
ইতালিতে প্রায় ৪০টি গুরুদ্বার আছে। সেখানে ‘পাগড়ি সচেতনতা দিবস’ সম্পর্কে প্রচারকার্যের জন্য গিয়েছিলেন মনজিৎ সিংহ। সেই কাজ সেরে ফেরার সময়েই এই ঘটনা ঘটে।
মনজিৎ সিংহের অভিযোগ, তাঁরা নিরাপত্তারক্ষীদের অনুরোধ করেছিলেন যাতে পাগড়ি না খুলে উপর থেকেই তল্লাশি করা হয়। কারণ, পাগড়ি খোলা তাঁদের ধর্মবিরুদ্ধ। তার পরেও তাঁদের জোর করে পাগড়ি খোলানো হয়। ওই রক্ষীদের ব্যবহারও অত্যন্ত খারাপ ছিল। রোমের ভারতীয় দূতাবাসেও এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন মনজিৎ।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। গত কাল সকাল থেকেই বহু মানুষ নয়াদিল্লিতে ইতালীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। ঝড় ওঠে লোকসভাতেও। অধিবেশনের ‘জিরো আওয়ার’-এ প্রসঙ্গটি তোলেন অকালি দল সদস্য হরসিমরত কৌর। তাঁর দাবি, ৯/১১-এর জঙ্গি হানার পর থেকেই শিখদের বিতৃষ্ণার চোখে দেখা হয়। তাঁর কথায়, “বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার শিখ এই বিতৃষ্ণার দায় নিয়ে চলতে বাধ্য হন।”
হরসিমরত সম্প্রতি আমেরিকার উইসকনসিনে গুরুদ্বারে জঙ্গি হানার ঘটনাও উল্লেখ করেন। খেলোয়াড় মিলখা সিংহের প্রশিক্ষককেও মিলান বিমানবন্দরে পাগড়ি নিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল বলে জানান হরসিমরত। কংগ্রেসকে বিঁধে তাঁর অভিযোগ, “প্রায় দশ বছর ধরে এই অনাচার চলছে। ভারত সরকার কিছুই করেনি। শিখদের উপর সরকারের কীসের বিরূপতা?”
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলও। শিখদের পাগড়ির কারণে এই হেনস্থা বন্ধ করতে বিভিন্ন দেশকে চাপ দেওয়ার জন্য বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও আবেদন জানান তিনি। তিনি বলেন, “এটা শিখ ধর্মকে সরাসরি অপমান করা। এই অপমান সহ্য করা যায় না। আমি খুব তাড়াতাড়িই প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাব।”
গত এক বছরের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বার ইতালির বিমানবন্দরে পাগড়ির কারণে হেনস্থার মুখে পড়লেন শিখেরা। |