এক সিপিএম কর্মী ও তাঁর ছেলেকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ মহম্মদ বেলাল হোসেন ও তাঁর ১৩ বছরের ছেলে নাজমাত হোসনকে চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আগুনে সিপিএম কর্মী বেলালবাবুর পা পুড়ে গিয়েছে। আর তাঁর ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে নাজমাতের পিঠ পুড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার রাত আড়াইটা নাগাদ চাঁচল থানার ওলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজীনগর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। |
আহত বাবা ও ছেলে। —নিজস্ব চিত্র। |
মহম্মদ বেলালের বাবা হাজি সইদুল হকের অভিযোগ, “জানলা দিয়ে পেট্রোল ছিটিয়ে আমার ছেলে ও নাতিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়। কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করতে পারে।” জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “লিখিত অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।” যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “ওলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার পর কংগ্রেস দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গভীররাতে বাড়ির জানালা দিয়ে কংগ্রেসিরা পেট্রল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে আমাদের এককর্মী ও তাঁর ছেলেকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল। অল্পের জন্য তাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।” কংগ্রেসের এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ইনতাজ হোসেন বলেন, “ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত গোলমাল বলে মনে হচ্ছে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি বলেন, “সিপিএম নেতারা যা ইচ্ছে তাই বলছেন।”
এ বার পঞ্চায়েত নিবার্চনে ওলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়। পঞ্চায়েত দখল করেছে সিপিএম। চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মহম্মদ বেলাল হোসেন জানান, স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল। ছেলেকে নিয়ে ঘরে একাই ঘুমিয়ে ছিলাম। পায়ের দিকে জানালা খোলা ছিল। সারা রাত বৃষ্টিও হচ্ছিল। হঠাৎ শরীরে জলের মতো কিছু পড়তেই ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম বৃষ্টির জল পড়েছে। পরে গন্ধে বুঝতে পারি পেট্রল। খাট থেকে নামার আগেই জানালা গিয়ে কে বা কারা একটি জলন্ত দেশলাই মশারির উপর ছুঁড়ে ফেলে। মশারি দাউদাউ করে জ্বলে উঠল। কোনওক্রমে দরজা খুলে ছেলেকে নিয়ে বার হয়ে প্রাণে বেঁচেছি। তাঁর কথায়, “আমি কাউকে দেখিনি। তবে আমার সন্দেহ কংগ্রেসিরা একাজ করেছে।” |