মোর্চার ডাকা বন্ধে আর্থিক সঙ্কটে পাহাড়ের শ্রমিকেরা। দিনমজুরির কাজ করা ওই সমস্ত শ্রমিক কী করে সংসার চালাবেন তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন। বন্ধ শুরুর আগেই পাহাড়ের মানুষ নিজেদের সোনা বন্ধক রেখে খাবার মজুত করেছিলেন। কুলি শ্রমিকেরা সে ভাবে খাবার মজুত করতে পারেননি। লাগাতার বন্ধ চললে কী করবেন তাঁরা তা বুঝতে পারছেন না। রোজ সমতল থেকে যাওয়া পর্যটকদের ব্যাগ সুটকেস টেনে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনও রকমে সংসার চালান তাঁরা। পাহাড় বন্ধ থাকায় সমতল থেকে কোনও গাড়ি যাচ্ছে না। তাই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাঁরা। |
বনধে কাজ নেই। বসে আছেন শ্রমিকেরা। দার্জিলিঙে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
মুটে-মজুরের কাজ করা রাজকুমার ছেত্রী বলেন, “আমার বেশি টাকা ছিল না। তাই বেশি খাবার মজুত করতে পারিনি। কিছু গয়না বন্ধক রেখে কিছু খাবার কিনে রেখেছি। কিন্তু তা দিয়ে আর বেশি দিন চলবে না। আমার কয়েক বছরের যেটুকু সম্পত্তি ছিল তা দিয়েই খাবার মজুত করে রেখেছি।” তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ ২৫ বছর থেকে আমি এখানে কুলির কাজ করছি। আমার আসল বাড়ি নেপালে, এ ভাবে বন্ধ চলতে থাকলে আমাকে বাড়ি ফিরে যেতে হবে।” বাড়িতে পাঁচ জন রয়েছে। যা খাবার মজুত রয়েছে তা দিয়ে জোর এক সপ্তাহ চলবে। তারপর কী করবেন জানেন না তিনি।
রাজকুমারের অবস্থা পাহাড়ের বহু শ্রমিকেরই। নাম বলতে নারাজ এক শ্রমিক বললেন, “কাজ করে ৫০০ টাকা আয় হয়। কিন্তু এখন কোনও পর্যটক নেই। তাই মাল টানার কাজও নেই। কী করে দিন চলবে বুঝতে পারছি না। এ ভাবে চলতে থাকলে আমাকে পরিবার নিয়ে নেপালে ফিরে যেতে হবে। কিন্তু বাড়ি ফিরে যাওয়ার মত টাকাও কাছে নেই।” স্কুলে মিড ডে মিলের কাজে নিযুক্ত থাকা শ্রমিক সাঁচি মায়া থামি বলেন, “বন্ধ চলায় সব স্কুল বন্ধ, তাই কাজও নেই। কী করে চলব জানি না।” |