নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে জলপাইগুড়ির কর্পোরেশন রোড এলাকার বাসিন্দা, এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ছাত্রীর পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়েরের পরেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। অন্য দিকে, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়েরের আগের দিন, অর্থাৎ গত সোমবার ধৃত শিক্ষকও তাঁর সম্মানহানি করার উদ্দেশ্যে অভিযোগকারিণী ছাত্রীর পরিবার চক্রান্ত করছে বলে থানায় একটি অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত শিক্ষকের নাম শৌভিক কুণ্ডা। তিনি শহর লাগোয়া একটি হাইস্কুলের শিক্ষক। শৌভিকবাবুর বাড়িতে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীটি প্রাইভেট টিউশন জন্য নিয়মিত যেত। গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রীটি কর্পোরেশন রোডের শৌভিকবাবুর বাড়িতে পড়তে যায়। সেই সময় তিনি একাই বাড়িতে ছিলেন। পুলিশকে অভিযোগে বলা হয়েছে, বাড়িতে ওই শিক্ষক ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে প্রথমে তার শ্লীলতাহানি করেন। এর পরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। মেয়েটি চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করায়, ঘটনার কথা গোপন রাখার শাসানি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে ছাত্রীটি জানিয়েছে। তার বাবা-মা অভিযুক্ত শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে উল্টে তাঁদের হুমকি দেওয়া শুরু হয় বলে অভিযোগ। জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটনাটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। গত মার্চ মাসে পথ দুর্ঘটনায় জখম হওয়ার পরে শৌভিকবাবুর দুটি হাতে চোট লাগে। তাঁর বাঁ হাতটি ঝোলানো অবস্থায় রয়েছে। ডান হাতের তালুতেও ব্যান্ডেজ বাঁধা। এ দিন জেলা আদালতে দাঁড়িয়ে শৌভিকবাবু বলেন, “আমার দুই হাতে চোট। এই পরিস্থিতিতে আমি কীভাবে কাউকে জড়িয়ে ধরব বা কাউকে ধরে টানাহেঁচড়া করতে পারব? আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” ছাত্রীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রীকে একাই বাড়িতে ডাকেন ওই শিক্ষক। ঘটনার পরে ছাত্রীটি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। আতঙ্কে ভুগছে সে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমাদের সন্দেহ কোনও আক্রোশের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।” অভিযুক্ত শিক্ষকের আইনজীবী সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শৌভিকবাবুর কিছুদিন আগে বড় দুর্ঘটনা হয়েছিল। এখনও তার দু’হাত স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। তাকে খাইয়ে দিতে হয়, এই পরিস্থিতিতে তিনি কী ভাবে ওই কাজ করলেন সেটাই বোধগম্য নয়। আমরা আদালতে সব জানাচ্ছি।” |