কার্যকাল শেষ হতে বাকি ছিল এক বছর। তার আগেই ইস্তফা দিলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়। ব্যক্তিগত কারণে অবিলম্বে অব্যাহতির আর্জি জানিয়ে এ দিন শিক্ষামন্ত্রী ও স্কুলশিক্ষা সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। মুক্তিবাবুর পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে বলেই সরকারি সূত্রের খবর।
নানা বিষয়ে সংসদ-সভাপতির কাজের ধারাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু দিন ধরেই সরকারি দফতরের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। আগে দু’-এক বার ইস্তফাও দিতে চেয়েছিলেন মুক্তিবাবু। পাঠ্যবই ছাপার বরাত নিয়ে বিতর্কে জল এতটাই ঘোলা হয় যে, দু’পক্ষের বনিবনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই মুক্তিবাবুর পদত্যাগকে অস্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখছেন না স্কুলশিক্ষা দফতরের অনেকে। বরং সরকারি এক সূত্রে বলা হয়, মুক্তিবাবুকে এ দিন ইস্তফা দিতেই বলা হয়েছিল।
সংসদ-সভাপতি এবং শিক্ষামন্ত্রী এ কথা অস্বীকার করেছেন। মুক্তিবাবু বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কলেজে ফিরতে চাই। জায়গাটা চেনা। চাপও তুলনায় কম।” আর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “উনি অসুস্থতার জন্য অব্যাহতি চেয়েছেন। এর পরে তো আর কোনও কথা থাকতে পারে না!”
মুক্তিবাবুকে ঘিরে লাগাতার বিতর্কের কথা তবু থাকছেই। সর্বোচ্চ কমিশন দিতে চাওয়া সংস্থার বদলে অন্য সংস্থাকে পাঠ্যবই ছাপার বরাত দেন তিনি। তা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংসদের সচিব অচিন্ত্য পাল স্কুলশিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠান। সর্বোচ্চ কমিশন দিতে চাওয়া সংস্থাটিও মামলা করে। চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ-পদে ইস্তফা না-দিয়েই মুক্তিবাবু ২০১১-এ সংসদ-সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ায় শুধু বিতর্ক নয়, মামলাও হয়েছিল। সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টে ফেল করা ছাত্রীদের মূল্যায়ন ঠিক হয়েছে কি না দেখতে সংসদ খাতা তলব করায় বিতর্ক বাধে। উচ্চ মাধ্যমিকের আগের রাতেও অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া নিয়েও বিতর্ক হয়। তার পরে বই-বিতর্ক। এবং সেটাকেই ইস্তফার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অনেকে।
যদিও ইস্তফার পিছনে এই সব বিতর্কের প্রভাবের কথা মানতে চাননি মুক্তিবাবু। মানতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রীও।
|