প্রশ্ন উঠল পুনর্বাসন নিয়ে
মূক-বধির অন্তঃসত্ত্বাকে উদ্ধার স্বাস্থ্যকর্মীদের
চাঁদপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের বারান্দায় বসেছিল মেয়েটি। জামাকাপড় নোংরা, অনেক দিন তেল পড়েনি চুলে। দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছিল, বেশ কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা সে। কথা বলতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা বুঝতে পারলেন, মেয়েটি মূক-বধির। মানসিক প্রতিবন্ধীও। খবর পাঠানো হল বনগাঁ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মহুয়া সরকারকে। তাঁর নির্দেশে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে নেওয়া হল মেয়েটিকে। শিশুর জন্মানোর আগে অবধি মেয়েটির চিকিৎসার খরচের দায়িত্ব নিয়েছে গাইঘাটা থানার চাঁদপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ও রোগীকল্যাণ সমিতি এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মহুয়াদেবী জানিয়েছেন, নাম ঠিকানা বলতে পারছে না মেয়েটি। তবে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের দিকে। তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ হিসেবেই সরকারি খাতায় নথিবদ্ধ করা হয়েছে মেয়েটিকে।
তবে শিশুর জন্মের পরে মা ও সন্তানকে কোথায় রাখা হবে, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মহুয়াদেবী বলেন, “গত ২৬ জুন মেয়েটিকে স্বাস্থকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করে আমরা বুঝতে পারি, মেয়েটি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। হয়তো ওকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। প্রথমে মেয়েটি খুব ভয় পেয়েছিল। পরে স্বাভাবিক হয়। শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওকে বনগাঁ হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, মা ও গর্ভস্থ শিশু স্বাভাবিক রয়েছে।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিশুর জন্মের পরে ওই প্রসূতিকে শ্রীরামপুরের একটি হোমে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শিশু ও তার মায়ের জন্যে ইতিমধ্যে বারাসতের একটি আশ্রমেও জেলাশাসকের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে। গাইঘাটা ব্লক প্রশাসনের তরফেও মেয়েটির দেখভালের যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গাইঘাটার বিডিও পার্থ মণ্ডল বলেন, “বাচ্চা জন্মানোর পরেই আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মা ও সন্তানকে হোমে পাঠাতে ব্যবস্থা নেব।”
কিন্তু এখনই মেয়েটিকে হোমে পাঠানো হচ্ছে না কেন? বিডিও জানান, মহিলা অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর চব্বিশ ঘণ্টা চিকিৎসার প্রয়োজন। হোমে চিকিৎসক থাকলেও চব্বিশ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পরিকাঠামো নেই।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “সাধারণভাবে এই মহিলাদের কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। তবে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হোমে রাখা যেতে পারে।” তবে রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মেয়েদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে আদালত যেখানে বলবে, সেখানে রাখাই নিয়ম। কিন্তু সমস্যা হল, বনগাঁ মহকুমায় কোনও সরকারি হোম নেই। বনগাঁ মহকুমার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিমাদ্রি মৈত্র জানিয়েছেন, “জেলা সমাজ কল্যাণ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহিলাকে শ্রীরামপুরের হোমে পাঠানোর চেষ্টা হবে।”
রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, কোনও জেলায় সরকারি হোম না থাকলে কাছাকাছি জেলার সরকারি হোমেই এই মেয়েদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। অনেক জেলাতেই হোমের বন্দোবস্ত নেই। আমরা চেষ্টা করছি, জেলায় যাতে আরও হোম বাড়ানো যায়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.