যোগাযোগের প্রধান ব্যবস্থা মূলত জলপথের উপরেই নির্ভরশীল। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার গোসাবা, বাসন্তী প্রভৃতি ব্লকে বিভিন্ন নদীর জেটিঘাটগুলির অবস্থা এতই শোচনীয় যে ওই সব এলালার মানুষকে নিত্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা থেকে যাত্রী সকলরেই অভিযোগ, বছরের পর বছর কেটে গেলেও জেটিঘাটগুলির কোনও সংস্কার হয় না। এমনি সময় কোনওরকমে যাতায়াত করা হলেও বৃষ্টি হলে বা বর্ষায় সময় পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক হয়ে দাঁড়ায়। তার উপর বর্ষায় নদীগুলিতে জল বেড়ে যাওয়ায় বস্তুত জীবন হাতে নিয়েই যাতায়াত করতে হয়। মহকুমার গোসাবা ব্লকে গদখালি, বাসন্তী ব্লকের সোনাখালি, ঝড়খালি এলাকার জেটিঘাটগুলি অবস্থা বিপজ্জনক। |
বিপজ্জনক। ঝড়খালি জেটিঘাট (পাশে)। গদখালি। ছবি: সামসুল হুদা। |
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মহকুমায় বিভিন্ন নদীতে ৪০টিরও বেশি জেটিঘাট তৈরি করেছিল সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ। কিন্তু তৈরির পর সেগুলির দীর্ঘদন ধরে কোনও সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। কোথাও ঘাটের কংক্রিটের স্ল্যাব ভেঙে গিয়ে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যা দিয়ে যে কোনও সময় হলে নদীতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা। কোথাও স্ল্যাবে দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও ঘাটের অবস্থা এতটাই বেহাল যে লঞ্চ বা ভুটভুটি এসে ঘাটে লাগলে গোটা জেটিঘাটটাই কেঁপে ওঠে। গোসাবার গদখালি জেটিঘাট দিয়ে নিত্য যাতায়াত করেন নীলিমা সাঁপুই। তাঁর কথায়, “ঘাটের যা অবস্থা তাতে প্রতি মুহূর্তে ভয় হয় এই বোধহয় গোটা ঘাটটাই হুড়মুড় করে নদীতে ভেঙে পড়ল। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে অফিস যাত্রী, রোজ কয়েক হাজার মানুষ এই ঘাটে পারাপার করেন। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তার দিকে প্রশাসনের কারও হুঁশ নেই। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার পরে হয়তো নড়ে বসবে প্রশাসন।”
ঝড়খালি জেটিভাটের নিত্যযাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দা রমাপদ মণ্ডল, চন্দন মাইতি বলেন, “জেটিঘাটগুলি প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকায় ডাক হয়। যারা লিজ নেয় তারা শুধু লাভ হচ্ছে কি না তা নিয়েই ব্যস্ত। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা কেউ ভাবে না। অধিকাংশ জেটিঘাটেই সন্ধ্যার পরে ওঠানামায় প্রচণ্ড সমস্যা হয়। কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কি কোনও দায় নেই?” বেশ কয়েকটি জেটিঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু জেটিঘাটের অবস্থাই বেহাল নয়, ঘাটগুলির অ্যাপ্রোচ রাস্তার অবস্থাও শোচনীয়।
ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় জেটিঘাটগুলির যে খুবই খারাপ অবস্থা তা আমার নজরে এসেছে। আমি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে।”
ক্যানিং মহকুমার জেটিঘাটগুলির খারাপ অবস্থার কথা জানেন সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী মণ্টুরাম পাখিরাও। তিনি বলেন, “সুন্দরবন এলাকার সমস্ত জেটিঘাট এবং ওই সব ঘাট সংলগ্ন অ্যাপ্রোচ রাস্তাগুলি শীঘ্রই সংস্কার করা হবে। বর্ষার পরেই যাতে কাজ শুরু হয় তার ব্যবস্থা হচ্ছে।”
অস্বাভাবিক মৃত্যু যুবকের। অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক যুবকের। বুধবার ভোরে গোপালনগর থানার বেলঘরিয়া এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানায়, তাঁর নাম কৃষ্ণ দাস (২৪)। বাড়ি ওই এলাকাতেই। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে সন্তোষপুরে বনগাঁ-চাকদহ সড়কে টহলদারির সময় কয়েক জন পুলিশ কর্মী ওই যুবককে জখম অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। বনগাঁ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। বুধবার সেখানে মারা যান তিনি। |