|
|
|
|
নির্বাচিতেরা অনভিজ্ঞ, কাজ দেখভালে কমিটি
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জয়ী প্রার্থীদের অনেকেরই প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। ফলে, যে কোনও সময়ই তাঁদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে। পরিস্থিতি দেখে দলীয় ভাবে জেলা পরিষদের কাজকর্ম দেখভালের জন্য একটি ‘মনিটরিং কমিটি’ গঠন করতে চলেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যে দলীয় স্তরে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, জেলা পরিষদ গঠনের পর দলীয় স্তরে আলোচনার পর তা গঠিত হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন কয়েকজন প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকবেন। কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ১৫-র আশপাশে। মাসে অন্তত একবার এই কমিটি বৈঠকে বসবে। দলের অন্দরে এমন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মানছেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। তাঁর কথায়, “নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করতে গিয়ে কোনও সমস্যায় পড়লে, প্রস্তাবিত কমিটির সদস্যদের জানাবেন। কমিটির সদস্যরা তাঁদের পরামর্শ দেবেন।”
চলতি বছরের জানুয়ারির গোড়ায় মেদিনীপুরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় এসে তিনি দলের বিধায়ক এবং নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকও করেন। ছিলেন মুকুল রায়ও। বৈঠক থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য একটি ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হয়। যেখানে সব মিলিয়ে ১৫ জন নেতা ছিলেন। কিন্তু এই ‘টাস্ক ফোর্স’ সে ভাবে সক্রিয় ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে দলের অন্দরে। শুধু কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, ‘টাস্ক ফোর্সের’ ধাঁচেই এ বার দলীয় ভাবে জেলা পরিষদের কাজ দেখভালে একটি ‘মনিটরিং কমিটি’ গঠন করার তোড়জোড় চলছে। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, এমন কমিটি হলে নির্বাচিত সদস্যরাও আর ইচ্ছে মতো কাজকর্ম করতে পারবেন না। তাঁদের উপরও নজর রাখা সম্ভব হবে। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “জেতার পর একাংশ সদস্য নিজেদের দলের উর্ধ্বে ভাবেন। দলের নির্দেশ উপেক্ষা করেন। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।”
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এই প্রথম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদে ক্ষমতায় বসতে চলেছে তৃণমূল। এ বারের নির্বাচনে জেলা পরিষদের ৬৭টি আসনের মধ্যে ৬৪টিই এসেছে শাসক দলের নিয়ন্ত্রণে। তা ছাড়া ৫০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরেই নতুন মুখের ছড়াছড়ি। জেলা পরিষদের মতো আসনেও এমন অনেকে জিতেছেন, যাঁরা কোনও দিন সক্রিয় রাজনীতি করেননি। গত সপ্তাহেই জেলা পরিষদ আসনের জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে মেদিনীপুরে এক সভা করে তৃণমূল। সভায় দলের জেলা সভাপতি নির্বাচিত সদস্যদের সতর্ক করে জানান, ক্ষমতা পাওয়া যতটা কঠিন, ক্ষমতা ধরে রাখা তার থেকেও বেশি কঠিন। তাঁর কথায়, “আমরা পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ। কেশপুর, গড়বেতা থেকে লালগড়। জেলায় কত সন্ত্রাস হয়েছে। কত কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। ফলে, ক্ষমতা পাওয়া যে কতটা কঠিন, তা আমরা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি।” দলীয় নেতৃত্বের মতে, জয়ী প্রার্থীদের অনেকেরই যেখানে প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই, সেখানে তাঁদের ‘গাইড’ করাটা জরুরি। ‘মনিটরিং কমিটি’ সেই কাজই করবে। প্রয়োজনে নির্বাচিত সদস্যদের কাজের পর্যালোচনা করা হবে। সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের কাজের উপরও নজর রাখা হবে। |
|
|
|
|
|