|
|
|
|
প্রশাসনের বৈঠক |
ভোট মিটতেই উন্নয়নে গতি আনার নির্দেশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ টালাবাহানার জেরে প্রায় তিন মাস থমকে ছিল নানা উন্নয়ন প্রকল্প। এ বার দ্রুত গতিতে উন্নয়নের কাজ শেষ করতে সার্কিট হাউসে বৈঠক করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। পঞ্চায়েতের পর উন্নয়ন নিয়ে এটাই ছিল প্রথম বৈঠক। বুধবারের এই বৈঠকে হাজির ছিলেন বিডিও, মহকুমাশাসক ও অতিরিক্ত জেলাশাসক থেকে জেলার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরাও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় কী ভাবে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি গঠন করতে হয় সে বিষয়ে বিডিওদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়। দ্বিতীয় দফায়, জেলার উন্নয়নের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সকলের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তারপর কী ভাবে সেই সমস্ত কাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরে জেলাশাসক বলেন, “পঞ্চায়েত গঠন ও উন্নয়নের কাজে গতি আনতেই এ দিন বৈঠক করা হয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সব থেকে বড় সমস্যা ইন্দিরা আবাস যোজনা। বিগত দু’টি আর্থিক বছরে বরাদ্দ টাকার অর্ধেকও খরচ করতে না পারায় ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে জেলা তার প্রাপ্য বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখনও যেখানে এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি, সেখানে দ্রুত কাজ শেষ করার উপর এ দিন বৈঠকে জোর দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে প্রকল্পে যে নতুন শর্ত এসেছে, তাতে উপভোক্তা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে প্রথম ধাপের কাজ করিয়ে তা ‘আওয়া সফট’ এ আপলোড করতে হবে। এ বার এই কাজগুলি যাতে দ্রুত ও নিখুঁত ভাবে করা যায় সে ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলা অঙ্গনওয়াড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে। এখনও বহু অঙ্গনওয়াড়ি গাছতলায় চলে। কিছু অঙ্গনওয়াড়ি নির্মাণের জন্য আইএপি, বিআরজিএফ-সহ অন্য প্রকল্প থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হলেও তা রূপায়ণের গতি অনেক ক্ষেত্রেই মন্থর বলে অভিযোগ। সেই সব কাজও দ্রুত করতে বলা হয়েছে। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটেছে। থাকায় ও এখনও পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি গঠন না হওয়ায় বৃক্ষরোপণ নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। যাতে বৃক্ষরোপণ প্রকল্পটি একেবারেই ধাক্কা না খায় সে বিষয়েও আলোচনা করা হয়। সেক্ষেত্রে এলাকার গরিব মানুষেরা বঞ্চিত হবেন। এখন বর্ষাকাল। এই সময় একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর খনন বা রাস্তা নির্মাণের কাজ করা যায় না। তাহলে কি এই সময় গরিব মানুষ কাজ পাবেন না? সমস্যা যাতে তা না হয় সে জন্যই বর্ষায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয়। এই প্রকল্পটি যাতে ধাক্কা না খায় সে জন্য বিডিওদের যথাযথ পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও নানা ব্লকে বেশ কিছু কাজ শুরু হয়েছিল। নির্বাচনের আগে কাজ শুরু হলে তা নির্বাচনের সময়েও করা যায়। কিন্তু করা গেলে কী হবে? প্রশাসনিক কর্তারা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আদৌ কী সেই সব কাজ হয়েছে? সেই সব কাজ সম্বন্ধে বিডিওদের আরও বেশি করে নজর রাখতে বলা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন দফতর, তা সেচ, কৃষি, মৎস্য বা স্বাস্থ্য এই সব বিভাগও নানা কাজ করছে। এতদিন সেই সব কাজ দেখভালেরও দায়িত্ব ছিল বিডিওদের। ওই সব দফতরগুলির উন্নয়নের কাজ কতটা এগিয়েছে, কোথাও সমস্যা রয়েছে কিনা, তা থাকলে সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত রূপায়ন করতেও উদ্যোগ গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “নির্বাচনের কারনে জেলার সমস্ত আধিকারিকেরা এতদিন একটা অন্য ‘মোড’এ চলছিলেন। এবার তা ফিরিয়ে সকলের নজর উন্নয়নের দিকে ফেরাতেই এই বৈঠক।” |
|
|
|
|
|