|
|
|
|
সিএজি-রিপোর্ট |
এবিজি-কে পণ্যে বঞ্চনায় বন্দরকেই দোষারোপ
জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় • কলকাতা |
এবিজি বহাল থাকাকালীন তাদের জন্য নির্দিষ্ট বার্থে জাহাজ না-ঢুকিয়ে হলদিয়া বন্দর-কর্তৃপক্ষ পরিচালনগত অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। এবং রিপোর্টে তাদের দাবি, পরিচালনায় এ হেন অদক্ষতার মাসুল হিসেবে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে বন্দরের ৮৭ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে!
মাল খালাসের জন্য এবিজি’র সঙ্গে চুক্তি করার পরেও ২ ও ৮ নম্বর বার্থে পর্যাপ্ত সংখ্যক জাহাজ না-ভেড়ায় বন্দরের পরিচালন ব্যবস্থাকে দোষারোপ করে সিএজি-রিপোর্ট বলেছে, চুক্তি যথাযথ ভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন হলদিয়া বন্দর-কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, ২০১২-র সেপ্টেম্বরে হলদিয়া ছেড়ে যাওয়ার আগে এবিজি অভিযোগ করেছিল, তাদের জন্য বরাদ্দ দু’টি বার্থের পরিবর্তে বেশি জাহাজ ঢোকানো হচ্ছে অন্য বার্থে, যেখানে যন্ত্রের বদলে হাতে-হাতে মাল খালাস হয়।
তাই পর্যাপ্ত সংখ্যক জাহাজ না-পাওয়ায় এক বছর ধরে তারা টানা লোকসান করেছে বলে অভিযোগ তুলেছিল এবিজি। বস্তুত গত বছরের জুলাইয়েই তারা হলদিয়া বন্দরকে জানিয়ে দেয়, খালাসযোগ্য যথেষ্ট পণ্য না-পাওয়ায় তাদের ফি মাসে গড়ে দু’কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ ভাবে যে তারা হলদিয়ায় টিকে থাকতে পারবে না, সংস্থার তরফে সেটাও পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। বন্দর-সূত্রের খবর: চুক্তিতে বলা ছিল, যন্ত্র বসিয়ে পণ্য খালাসের যাবতীয় কাজ করবে এবিজি। মাল ওঠানো-নামানোর প্রক্রিয়ায় গতি আনতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রতি বার্থে দিনে ২০ হাজার টন পণ্য নামানো হবে। “ব্যবস্থাটি কার্যকর হলে প্রতিটি বার্থে মাসে ছ’লক্ষ টন মাল খালাস করা যেত। বাস্তবে একটা বার্থে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ ১২ হাজার টনের বেশি পণ্য নামানোর সুযোগই পায়নি এবিজি।” আক্ষেপ করেছেন হলদিয়া বন্দরের এক কর্তা।
এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য বন্দর-কর্তৃপক্ষের ‘গাফিলতি’র দিকে আঙুল তোলার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের ‘অসহযোগিতাকেও’ খানিকটা দায়ী করেছে সিএজি। রিপোর্ট বলছে, ‘কর্তৃপক্ষের নানা অসহযোগিতার দরুণ সংস্থাটি কাজে নামে যখন, তখন চুক্তির ২৬০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এই বিলম্বের ফলে বন্দরের প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে।’ সিএজি এ-ও জানাচ্ছে, শ্রমিক-নির্ভর বার্থে যেখানে দিনে সাকুল্যে ৬ হাজার টন পণ্য ওঠানো-নামানো হতো, সেখানে এবিজি যন্ত্রচালিত ব্যবস্থায় প্রতি দিন ১৫ হাজার টন পণ্য খালাস শুরু করে। তাদের দৈনিক ৪০ হাজার টন মাল খালাসের ক্ষমতা থাকলেও সে ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করা যায়নি। ‘কারণ, বন্দর-কর্তৃপক্ষের অদক্ষ পরিচালনার জেরে যন্ত্রনির্ভর দুই বার্থে জাহাজ নোঙর করেনি। তাতে বন্দরের লোকসান হয়েছে।’ রিপোর্টে মন্তব্য করেছে সিএজি।
বন্দরের এক কর্তা বলেন, এবিজি চলে যাওয়ায় হলদিয়ায় লোকসানের বহর কতটা বাড়ল, তা মালুম হবে পরের বছরের অডিট-রিপোর্টে। কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক হিসেবে, এবিজি হলদিয়া ছাড়ার পরে অন্তত ৯০-১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। যা পুষিয়ে নেওয়ার মতো বিকল্প ব্যবস্থা করে ওঠা যায়নি। কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহালোঁর বক্তব্য, “২০১১-১২ সালের হিসেব পরীক্ষা করে সিএজি কী ভাবে লোকসানের কথা বলছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এখনই কিছু বলব না।” |
পুরনো খবর: জরিমানা বন্দরেরই, যন্ত্র সরাতে বাধা নেই এবিজি-র |
|
|
|
|
|