ছাত্রী ধর্ষণে পাঁচ যুবকের যাবজ্জীবন
দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল আগেই। এ বার খড়্গপুরে আদিবাসী স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। বুধবার এই রায় দিয়েছেন মেদিনীপুরের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক কমল দে।
মাত্র ১১ মাসের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল। মেদিনীপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী রাজকুমার দাস বলেন, “এই ধরনের মামলায় এত কম সময়ে সাজা ঘোষণা মেদিনীপুরে সাম্প্রতিক অতীতে হয়নি।” এই মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী ছিলেন দেবাশিস মাইতি। তিনিও বলেন, “খুব কম সময়ের মধ্যেই সাজা ঘোষণা হল। এ দিন রায় ঘোষণার সময় বিচারক জানান, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করেই যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেওয়া হল।” গত বছর সেপ্টেম্বরের এই ঘটনার তদন্তে প্রথম থেকেই পুলিশ বাড়তি সক্রিয় ছিল। মামলার তদন্তকারী অফিসার (আই ও) ছিলেন খড়্গপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। তদন্ত করতে রেলশহরে এসেছিলেন তৎকালীন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহও। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছিল বিভিন্ন মহল। ওই ছাত্রীর সহপাঠিরা মিছিল করে। প্রতিবাদে সামিল হয় খড়্গপুরের বিভিন্ন ক্লাবও। তদন্তে নেমে ৮ জন যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হল কালীদাস পট্টনায়েক, প্রবীণ কুমার, ওয়াই বিজয় ভাস্কর, গৌতম দাস, সোমনাথ চক্রবর্তী, তুলসিপ্রসাদ বদ্রী, প্রতীক দেব এবং কৌশিক দাস। তথ্যপ্রমাণের অভাবে প্রতীক এবং কৌশিক বেকসুর খালাস পেয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কালীদাস পট্টনায়েক, প্রবীণ কুমার, ওয়াই বিজয় ভাস্কর রেলকর্মী। পলাতক তুলসিপ্রসাদ বদ্রীও রেলে কাজ করে। মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “বাকি এক অভিযুক্তকে ধরতে সব রকম চেষ্টা হচ্ছে।”

সাজা ঘোষণার পর। মেদিনীপুর আদালতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খড়্গপুরের মথুরাকাটিতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। বান্ধবীর বাড়ি থেকে সাইকেলে ফেরার পথে ঘটনাটি ঘটে। পরে মেয়েটির বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। শুরু হয় মামলা। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনায় মোট ৮ জন যুবক জড়িত। গত বছর ৭ ডিসেম্বর এই ৮ জনের নামেই আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। একে একে ৬ জনকে ধরে পুলিশ। অন্য দুই অভিযুক্ত ওয়াই বিজয় ভাস্কর এবং তুলসিপ্রসাদ বদ্রী দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়ায়। আদালতের নির্দেশে তাদের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়। পরে বিজয় ভাস্কর আদালতে আত্মসমর্পণ করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপহরণ, গণধর্ষণ-সহ মোট ৪টি ধারায় মামলা হয়েছিল। মামলাটি দায়রা সোপর্দ করেন মেদিনীপুরের সিজেএম কল্লোল দাস। পরে মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক সমর রায় নির্দেশ দেন, মেদিনীপুরের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে বিচার চলবে। সেই মতো গত ৩০ জানুয়ারি মেদিনীপুরের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক কমল দের এজলাসে মামলার চার্জগঠন হয়। মঙ্গলবারই ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।
বুধবার মেদিনীপুর আদালতে সাজা ঘোষণার দিন নির্দিষ্ট ছিল। গোলমাল এড়াতে সকাল থেকেই আদালত চত্বরে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনার পর দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল আদিবাসী ছাত্রীটি। তবে সে দিনের ঘটনা বা অভিযুক্তদের শাস্তি নিয়ে সে বা তার পরিবারের লোকজন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এ দিন আদালতেও কেউ আসেননি।

পুরনো খবর:
মেয়েদের স্কুলে ঢুকে ধৃত যুবক

ভরদুপুরে স্কুল ক্যাম্পাসে ঢুকে অশোভন আচরণ করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম তীর্থপ্রতিম চৌধুরী। বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বক্সীবাজারে। বুধবার ঘটনাটি ঘটে মিশন গার্লস স্কুলে। শুরুতে ক্যাম্পাসের মধ্যে ওই যুবককে ধরে ফেলেন শিক্ষিকারা। যুবকটি ক্যাম্পাসে ঢুকে শৌচাগারের মধ্যে লুকিয়ে ছিল বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। স্কুল কর্তৃপক্ষ মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। স্কুল সূত্রে খবর, এই প্রথম নয়, আগেও এ ভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে অশোভন আচরণ করে যুবকটি। মাঝেমধ্যে বাইরে মোটর বাইক রেখে সীমানা প্রাচীর টপকে ক্যাম্পাসের মধ্যে এক বা একাধিক যুবক ঢুকে পড়ে। ফলে, ছাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যাহত হয়। দুপুরে ওই স্কুল ক্যাম্পাসে প্রাথমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক, দু’টি স্তরেরই পঠনপাঠন হয়। এক শিক্ষিকার কথায়, “এ ভাবে যুবকেরা অস্বাভাবিক অবস্থায় ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়লে যে কোনও সময় অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটতে পারে। ক’দিন আগে এক যুবক ছাত্রীদের প্রতি অশালীন ইঙ্গিতও করে। পুলিশের উচিত, এলাকায় নজরদারি বাড়ানো।” পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রয়োজনে ওই এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। ঘটনার জেরে অভিভাবকদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.