পঞ্চায়েত নির্বাচনে সার্বিক ভাবে হুগলিতে জিতলেও পাণ্ডুয়া ব্লকে তৃণমূল পর্যুদস্ত হয়েছে সিপিএমের কাছে। এই পরিস্থিতিতে পাণ্ডুয়ার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বচসা-মারপিটের ঘটনা শুরু হয়েছে। গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে পার্টি অফিসে ঢুকে মারধর করা হয়েছে দলেরই এক কর্মীকে। জখম হয়েছেন দলের আরও কয়েক জন সমর্থক। বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দাবি, ওই তৃণমূল কর্মীই হামলা চালানোর ঘটনায় যুক্ত।
পুলিশ সূত্রের খবর, মণ্ডলাই গ্রামে তৃণমূলের এক বিক্ষুদ্ধ সদস্য নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে যান। সেই প্রার্থীর হয়ে ভোটের প্রচারে নেমেছিলেন স্থানীয় এক যুবক। ভোটে না জিতলেও এর জেরে তৃণমূল সমর্থকদের রোষে পড়েন তিনি। রবিবার রাতে তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী বিপ্লব বসুর বাড়ি-লাগোয়া পার্টি অফিসে টিভি দেখছিলেন ওই যুবক। অফিসে ছিলেন বিপ্লবও। অভিযোগ, রড-লাঠি-বাঁশ নিয়ে পার্টি অফিসে হামলা করে তৃণমূলের কিছু লোক। নির্দল প্রার্থীর হয়ে কাজ করা লোককে কেন পার্টি অফিসে ঢুকে টিভি দেখতে দেওয়া হল, সে ব্যাপারে বিপ্লববাবুর কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ঝগড়া বাধে। হামলাকারীরা কার্যালয়ে থাকা লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ।
কার্যালয়টিতেও যথেচ্ছ ভাঙচুর করা হয়। বিপ্লববাবু গুরুতর জখম হন। তাঁকে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পাঠানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। বিপ্লববাবু বসু ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্য পক্ষও গোলমালের অভিযোগ করেছে থানায়।
জামগ্রাম-মণ্ডলাই অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ মিত্র রাখঢাক না করেই বলেন, “দলেরই অন্য গোষ্ঠীর লোকেরা যে ভাবে হামলা করল, তা অকল্পনীয়। গোষ্ঠীকোন্দলই যে পাণ্ডুয়ায় ভোটে আমাদের হারের জন্য দায়ী, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।” তাঁর অভিযোগ, “আমাদের দলের ব্লক সভাপতির গোষ্ঠীর লোকেরাই এমন কাণ্ড করেছে।”
দলের ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম অবশ্য বলেন, “একটা পরিবারের সঙ্গে আমাদের দলের কিছু ছেলের বিবাদের জেরে একটা ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কোনও দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তের কথায়, “মারপিটের ঘটনায় যারা যুক্ত পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক। দলের মধ্যে কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।” |