|
|
|
|
হাজারিবাগের জঙ্গলে উষ্ণ প্রস্রবণ, মন্দির জীর্ণ সরকারি উপেক্ষায় |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • হাজারিবাগ |
হাজারিবাগের জঙ্গলে শিকারে গিয়েছিলেন পাতিয়ালার রাজা নরেন্দ্র সিংহ। ঘন জঙ্গলের মধ্যে হঠাৎ একটি জলাশয়ে নজর পড়ে মহারাজার। তিনি দেখেন, গলগলিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে জল থেকে। উষ্ণ প্রস্রবণই যে উত্তাপের উৎস তা বুঝতে পারেন পাতিয়ালা-রাজ। শিকার থেকে ফিরেই জঙ্গলের ওই এলাকায় একটি মন্দির স্থাপনের উদ্যোগ নেন তিনি।
তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। সংস্কারের অভাবে এখন জীর্ণ হাজারিবাগের সূর্যকুণ্ড, সেই মন্দিরও।
গ্র্যাণ্ড ট্যাঙ্ক রোডের লাগোয়া বড়কঠ্ঠা এলাকায় রয়েছে গরম জলের পাঁচটি কুণ্ড। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মকর সংক্রান্তিতে সেখানে মেলা বসে। ভক্ত সমাগম হয়। বছরের অন্য সময় কার্যত ফাঁকা থাকে ওই মন্দির। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রচারের জন্যই পর্যটকরা ছুটছেন রাজগিরের উষ্ণ প্রস্রবণে। কিন্তু ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছে সূর্যকুণ্ড। এ জন্য প্রশাসনিক উদাসীনতার দিকেই আঙুল তুলছেন তাঁরা। পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা ওই গরম জলের কুণ্ডগুলিকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করে কয়েকটি মহলও। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার উদ্যোগী হলেই ভিড় জমবে ওই এলাকায়। |
|
সূর্যকুণ্ডের পাশে পর্যটন দফতরের ভবনের কাজ বন্ধ। ছবি: ইন্দ্রজিৎ সামন্ত। |
সূর্যকুণ্ডে পৌঁছেই তা টের পাওয়া যায়। উষ্ণ প্রস্রবণ তো রয়েছেই, বাড়তি পাওনা পাহাড়, জঙ্গলের হাতছানি। কয়েক কদম দূরের জি টি রোড ধরে সহজেই পৌঁছনো যায় হাজারিবাগ শহর, কোডারমায়। মন্দিরের পুরোহিতরা জানান, সূর্যকুণ্ডের পাশাপাশি সেখানে রয়েছে ব্রহ্মাকুণ্ড, সীতাকুণ্ড, লক্ষ্মণকুণ্ড। তাঁদেরই একজন মুরলীধর পাণ্ডের কথায়, “কালেভদ্রে পর্যটকরা আসেন। তখন কিছু রোজগার হয়। মেলা ছাড়া অন্য সময় স্থানীয় মানুষ এখানে আসেন না।” পরিবার বাঁচাতে তা-ই পুজো-অর্চনার সঙ্গে জমির দালালিও করতে হয় তাঁদের অনেককেই।
মন্দিরে সংস্কারের অভাবের ছবিটা স্পষ্ট। দেওয়াল থেকে টালি খসে পড়ছে। পুরোহিতরা জানান, বছর তিনেক আগে এলাকার উন্নয়নের কাজ শুরু করে পর্যটন বিভাগ। কিন্তু মাঝপথেই তা বন্ধ হয়ে যায়। রাজ্য পর্যটন দফতরের অধিকর্তা সিদ্ধার্থ ত্রিপাঠী সে কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতার জেরে অনেক পর্যটন কেন্দ্রেরই উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। তবে সূর্যকুণ্ডের কাছে ট্যুরিস্ট-কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|