গুরুঙ্গের জামিন বাতিলে উদ্যোগী রাজ্য
মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গের ওপরে চাপ বাড়াতে এ বার তাঁর পুরনো মামলাগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করল রাজ্য সরকার। বিভিন্ন মামলায় তাঁর জামিন বাতিল করা এবং পুরনো অভিযোগগুলির নতুন করে তদন্ত শুরুর পথে হাঁটতে চলেছে মমতা-প্রশাসন। ডুয়ার্সের শিপচুতে ২০১১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ-মোর্চা সংঘর্ষের পর পুলিশ খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখার মতো গুরুতর অভিযোগে বিমল গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ২২ জন নেতা-কর্মীও ওই মামলায় অভিযুক্ত। রাজ্য সরকার নিশ্চেষ্ট থাকায় এ বছর ৯ জুলাই ওই মামলায় জামিন পান গুরুঙ্গ। কিন্তু তার পরে পরিস্থিতি বদলেছে। রাজ্য সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে লাগাতার হরতালের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন মোর্চা নেতা গুরুঙ্গ। এমনকী পাহাড়ে অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে ২৭ দিন পরে সেই জামিন বাতিল করার জন্য আদালতে আবেদন করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সিআইডি-র ডিআইজি (স্পেশাল) শংকর চক্রবর্তী স্বীকার করেছেন, “অভিযুক্তদের জামিন বাতিল করার আবেদন করা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মামলাটি ছাড়াও আরও ১৮টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে মোর্চা প্রধানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে চারটিতে জামিন পেয়েছেন গুরুঙ্গ। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, বকেয়া মামলাগুলিতেও তিনি যাতে জামিন না পান, সে চেষ্টা এ বার করা হবে। পুলিশ জানায়, ২০১১ সালে শিপচুতে মোর্চার ডুয়ার্স অভিযানকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। মোর্চা কর্মীদের আক্রমণে গুরুতর জখম হন দুই মহিলা পুলিশ। অবস্থা আয়ত্তে আনতে পুলিশ গুলি চালালে দুই মোর্চা সমর্থকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর বিমল গুরুঙ্গ-সহ ২৩ জন মোর্চা নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মোট কুড়িটি ধারায় মামলা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে মোর্চা বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারিকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। চম্প্রমারি অবশ্য এখন মোর্চা ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিবেচনা রাই নামে মোর্চার এক মহিলা সমথর্ককে এ বছর মে মাসে ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেন।
রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর সরকার ওই মামলার তদন্তভার দেয় সিআইডি-কে। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, মোর্চা নেতৃত্বের ইন্ধনেই সে দিন ওই সংঘর্ষ ঘটে। সিআইডি কর্তারা জানিয়েছিলেন, ওই দিন ঘটনাস্থলে হাজির থেকে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। সঙ্গে ছিলেন বিনয় তামাং, উইলসন চম্প্রমারির মতো শীর্ষ নেতারা।
এর মধ্যে এক দফা পট পরিবর্তন হয়। মোর্চা নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। একাধিক অনুষ্ঠানে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে থেকেছেন বিমল গুরুঙ্গ। কেন্দ্রকে নিয়ে ত্রিপক্ষ চুক্তির পরে তৈরি হয়েছে জিটিএ। এর মধ্যে রাজ্য সরকার চোখ বন্ধ রাখার কৌশল নেওয়ায় ৯ জুলাই জলপাইগুড়ি জেলা আদালত থেকে শিপচু মামলায় জামিন পান মোর্চা প্রধান। জামিন পেয়েছেন আরও পাঁচ অভিযুক্তও।
ওই সময়ে সিআইডি কেন গুরুঙ্গ ও অন্য মোর্চা নেতাদের জামিনের বিরোধিতা করেনি? সিআইডি-র এক পদস্থ কর্তার যুক্তি, “ওই মামলায় অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার খবর আমরা পরে জানতে পারি। তাই বিরোধিতা করার সুযোগ মেলেনি। এখন সেই জামিন বাতিল করার জন্য আদালতে আবেদন করা হচ্ছে।” সন্দেহ নেই গুরুঙ্গকে চাপে রাখতেই ২৭ দিন পরে সরকারের এই অবস্থান বদল।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.