|
|
|
|
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরের জের |
ফুটবলের জন্য এ বার উজাড় করব
নিজেকে,
বলছেন উচ্ছ্বসিত বিপ্লব
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
ফিফা প্যানেলের সহকারী রেফারি বিপ্লব পোদ্দারকে অবশেষে চাকরি দিল রাজ্য সরকার।
গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আই লিগ-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলিয়েছেন তিনি। লিওনেল মেসি সমৃদ্ধ আর্জেন্টিনা বনাম ভেনেজুয়েলা ম্যাচে সহকারী রেফারির দায়িত্ব সামলেছেন হুগলির শ্রীরামপুরের ছিপছিপে যুবক। সোয়ারজেনেগারের বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে ভারতের ম্যাচেও (ভাইচুং ভুটিয়ার ফেয়ারওয়েল ম্যাচ) সহকারি রেফারির দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ম্যাচ খেলাতে বিদেশেও গিয়েছেন।
এত কিছুর পরেও নিজের রাজ্য থেকে তেমন কোনও সম্মান পাননি বিপ্লব। সোমবার আনন্দবাজার পত্রিকায় তাঁর অভাবের খবর প্রকাশিত হয়। এর পরেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিপ্লবকে মহাকরণে ডেকে পাঠান রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। জেলার মন্ত্রী বেচারাম মান্না বিপ্লবকে সঙ্গে নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রীর ঘরে যান। পরে ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “বিপ্লবের জন্য আমরা গর্বিত। বিপ্লবকে রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদে চাকরি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছিলাম।” |
বিপ্লব পোদ্দার। |
গত শুক্রবার বিপ্লবকে দেশের বর্ষসেরা সহকারী রেফারি বলে ঘোষণা করেছে এআইএফএফ। আর তিন দিনের ব্যবধানে রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি। জোড়া সাফল্যের পরে বিপ্লবের প্রতিক্রিয়া? তিনি বলেন, “আমি অসম্ভব খুশি। এ বার থেকে ফুটবলের জন্য নিজেকে আরও উজার করে দেব।” রেফারি সংস্থার ভাইস-চেয়ারম্যান, প্রাক্তন রেফারি প্রদীপ নাগ বলেন, “রেফারি মহলের পক্ষে এটা একটা বিরাট খবর। সম্ভবত এই প্রথম রেফারিং করে কেউ চাকরি পেলেন।” নিজের এলাকায় যথেষ্ট পরিচিতি আছে বিপ্লবের। রাজ্য সরকার তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ফুটবলের সঙ্গে জড়িত লোকজন সকলেই খুশি।
শ্রীরামপুরের মাহেশের মাসির বাড়ি এলাকায় ছোট্ট একটি ঘরে বৃদ্ধা মা কল্যাণীদেবীকে নিয়ে থাকেন বিপ্লব। এই ঘর থেকেই তাঁর বেড়ে ওঠা। এই ঘর থেকেই বাঁশি হাতে প্রত্যেক দিন নিজেকে ছাপিয়ে ওঠা এই মুহূর্তে বাংলা থেকে ফিফার একমাত্র প্যানেলভুক্ত রেফারির। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই এক দিকে মাছ বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। তবে খেলাধুলো ছাড়েননি। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই রেফারি হওয়ার জন্য লড়াই শুরু। এ ভাবেই জাতীয় স্তর ছাড়িয়ে ২০১১ সালে বিপ্লব পেয়ে যান ফিফার সহকারী রেফারির স্বীকৃতি। মেসি-ম্যাচ তাঁকে প্রচারের আলোতে এনে দেয়। ফিফা ব্যাজ পাওয়ার পরেও অভাবের সংসারে মাছ বিক্রি চালিয়ে যেতে হচ্ছিল। ম্যাচ খেলানো আর নিজেকে যথাসম্ভব ফিট রাখার তাড়নায় বেশ কিছু দিন মাছ বিক্রি বন্ধ করে দেন। বিপ্লব জানাচ্ছেন, সরকার চাকরি দেওয়ায় আর বাজারে বসে মাছ বিক্রি করতে হবে না।
মঙ্গলবার মহাকরণে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “এ বার থেকে শুধু ফুটবল আর চাকরি।” |
|
|
|
|
|