|
|
|
|
চোট নিয়ে ময়দানি কর্তাদের বিদ্রূপের জবাব |
ক্রিকেট থেকে কোনও দিন পালাইনি, বলছেন অনুষ্টুপ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
গত বছর দলীপজয়ী পূর্বাঞ্চল টিমে যদি সবচেয়ে বেশি কাউকে নিয়ে হইচই পড়ে থাকে, তো ইনি।
কিন্তু মাঝের একটা বছর তাঁকে বলতে গেলে পাওয়াই যায়নি। আবার আবির্ভাব ঘটল যখন,
বুচিবাবু টুর্নামেন্টে
বাংলা অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে। মাঝের একটা বছর, নতুন দায়িত্ব
নিয়ে
অনুষ্টুপ মজুমদার আনন্দবাজারকে যা বললেন... |
প্রশ্ন: ২০১২-র অনুষ্টুপ মজুমদার দলীপে ট্রফিতে দুর্ধর্ষ ব্যাট করেছে, ফাইনালে চারটে উইকেট নিয়েছে। লোকে বলেছে, ছেলেটা এত দিন ছিল কোথায়? ২০১৩-র অনুষ্টুপ মজুমদার বুচিবাবুতে বাংলা অধিনায়ক। কিন্তু লোকে দু’রকম কথা বলছে। একদল বলছে ভাল হল। কামব্যাক হবে। আর এক দল বলছে, পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা। লক্ষ্মী-ঋদ্ধি নেই তাই ক্যাপ্টেন।
মাঝের একটা বছর কোথায় হারিয়ে গেলেন?
অনুষ্টুপ: আমি কোথাও হারিয়ে যাইনি। এটা ঠিক যে, গত এক বছর আমার ধারাবাহিকতা ছিল না। দলীপে যে ভাবে খেলছিলাম, সে ভাবে খেলতে পারিনি। ক্রিকেটারের জীবনে এ রকম তো হয়েই থাকে। আর পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা বা কামব্যাক ও সব নিয়ে না বলে একটা কথা বলব। বুচিবাবুর ক্যাপ্টেন্সি করছি তাই বিরাট কেউকেটা হয়ে গেলাম, এ রকম নয়। বুচিবাবু প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট আমার জন্য। রঞ্জি ট্রফিটা আসল।
প্র: কিন্তু উধাও হলেন কেন? শুধুই কি ফর্মের অভাব?
অনুষ্টুপ: ক্রিকেটারদের জীবনে ও রকম হয়। কিন্তু সাহসী তারাই, যারা ফিরে আসতে পারে। আমি অতীত নিয়ে বিশেষ ভাবি না। ভবিষ্যৎ নিয়ে প্ল্যান করি। কিন্তু বেঁচে থাকি শুধু বর্তমানে। প্লাস গত বার আমার একটা চোটও ছিল।
প্র: আপনার চোটটা নিয়ে কথা হয়েছে জানেন? কেউ জানত না কী হয়েছে। একটা বিরূপ মনোভাবও তৈরি হয়েছিল ময়দানে।
অনুষ্টুপ: জানি। সবই কানে এসেছে।
প্র: চোটটা কী?
অনুষ্টুপ: বাঁ পায়ে লেগেছিল। রঞ্জির দু’তিনটে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারিনি। এখন ঠিক আছি। আর লোকে যা বলেছে শুনেছি। কিন্তু আমি জানি কী হয়েছিল। সিএবি কর্তারাও জানেন।
প্র: কে বলল? সিএবি কর্তাদেরই কেউ কেউ আপনাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছিলেন, বোর্ডের ডাক্তার অনন্ত যোশীও বুঝতে পারছেন না আপনার চোটটা কোথায়? বলেছিলেন, চোটটা আপনার মনে। মানে বুঝছেন?
অনুষ্টুপ: বুঝতে পারছি।
প্র: মানে, রঞ্জিতে টিম বারবার বেকায়দায় পড়ছে দেখে আপনি আর কলঙ্কের ভাগিদার হতে চাননি। পালিয়ে গিয়েছেন।
অনুষ্টুপ: (শুষ্ক হাসি) পালিয়ে গিয়েছি? পালিয়ে ক্রিকেট খেলা যায়?
অনন্ত জোশীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমার ফিজিও-র হয়েছে। রিপোর্ট আমার কাছেও আছে। একটা কথা বলতে পারি। ফর্ম পড়তে পারে, কনসিস্টেন্সি হারাতে পারি, কিন্তু আমি কখনও পালিয়ে যাব না।
প্র: সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনি অসম্ভব ট্যালেন্টেড। কিন্তু ব্যাটিং অর্ডারের মিউজিক্যাল চেয়ার আপনার বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।
অনুষ্টুপ: কিছুটা ক্ষতি তো হয়েছে। চার দিনের ম্যাচে নির্দিষ্ট ব্যাটিং অর্ডার দরকার। সেটা পেলে আমার কেরিয়ার অন্য রকম হত না কে বলতে পারে? ওপেনিং থেকে শুরু করে তিন, চার, ছয়, সাত সব খেলেছি। টিমের কেউ ইন্ডিয়ার হয়ে খেলতে গেলেই আমার স্লট ওলটপালট হয়ে যেত।
প্র: কোন স্লটে সবচেয়ে কমফর্টেবল?
অনুষ্টুপ: ওয়ান ডাউন।
প্র: আপনাকে নিয়ে আরও বলা হয়, আপনার প্রতিভা বেরলো অনেক পরে। আঠাশ বছরে। মনোজ, ঋদ্ধিদের দেখে আফসোস হয় না যে, বাইশ-তেইশে উত্তরণটা ঘটলে ইন্ডিয়া খেলতে পারতাম?
অনুষ্টুপ: আমি আর ঋদ্ধি প্রায় একই সময়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু তখন টিমটা এমন ছিল যে ঢোকার জায়গা ছিল না। নিজের চেষ্টাকে দোষ দিই না। কপাল বলেও একটা ব্যাপার আছে। বয়সটা ফ্যাক্টর নয়। উনত্রিশেও আমি এমন কিছু করতে পারি যাতে লোকে আমাকে মনে রাখে।
প্র: আগে ক্যাপ্টেন্সি করেছেন?
অনুষ্টুপ: মইন-উদ-দৌল্লায় করেছি। বাংলার অনুর্ধ্ব ২২ টিমের ক্যাপ্টেন ছিলাম তিন বছর।
প্র: স্পিন বোলিংটা আছে না ছেড়ে দিয়েছেন?
অনুষ্টুপ: আছে। প্র্যাক্টিস করি তো।
প্র: এ বারও চার-পাঁচ উইকেট আসবে?
অনুষ্টুপ: ক্যাপ্টেন যদি দেয়, চেষ্টা করে দেখতে পারি (হাসি।) |
|
|
|
|
|