|
|
|
|
নির্বাচন-বিতর্কের পর এ বার ‘গর্দান’ গেল বাংলা ট্রেনারের
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • কলকাতা |
কখনও নির্বাচকদের সঙ্গে কথা না বলেই দিব্য বাংলা টিম তৈরি করে ফেলা। কখনও বা টিমে ‘নতুনত্ব’ আনতে হবে বলে দীর্ঘ দিন ধরে বাংলার ট্রেনারেরই ‘গর্দান’ উড়িয়ে দেওয়া!
যত দিন যাচ্ছে, তত দিন খামখেয়ালিপনা যেন বেড়েই চলেছে সিএবি-র যুগ্ম সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়ের!
এবং সচিবের খামখেয়ালি আচরণের সর্বশেষ সংযোজন ঘটল মঙ্গলবার। যে দিন গত আট বছর ধরে বাংলার ফিটনেস ট্রেনার চিন্ময় রায়কে তিনি সরিয়ে দিলেন, বিনা নোটিশে। কোনও পূর্বাভাস না দিয়ে।
চিন্ময়ের অপরাধ কী?
সাদা চোখে, মায়ের শরীর খারাপ। এবং নতুন মরসুমে নতুনত্ব আমদানি। বাংলা ট্রেনারের মায়ের দু’হাঁটুতেই অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে কর্নাটকে সদ্যসমাপ্ত টুর্নামেন্টে টিমের সঙ্গে যেতে পারেননি তিনি। ভেবেছিলেন, আসন্ন বুচিবাবু টুর্নামেন্টে যাবেন। সিএবি সচিবের কাছে মঙ্গলবার জানতে গিয়েছিলেন, কবে নাগাদ যেতে হবে তাঁকে। জবাব? চিন্ময়কে পরিষ্কার বলে দেওয়া হল, বাংলা টিমের ফিটনেস ট্রেনারের দায়িত্বে থাকার আর দরকার নেই। বরং তিনি অনূর্ধ্ব পঁচিশ টিমটাকে দেখুন! কারণ জানতে চাওয়ায়, সিএবি সচিব সুজন নাকি কোনও উত্তর দেননি। অপরাধ কোথায়, সেই প্রশ্নেও নীরব থেকে যান সিএবি সচিব। শুধু জানানো হয়, চিন্ময়ের জায়গায় দায়িত্ব নেবেন গৌতম দেব। |
চিন্ময়: হঠাৎ বরখাস্ত |
এবং মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত ঘটনাটার কথা কেউ জানতেনও না। কোচ অশোক মলহোত্র চিন্ময়-অপসারণের খবর শুনে আকাশ থেকে পড়লেন। সিএবি-র অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্তা বা বাংলার সিনিয়র ক্রিকেটারদের কেউ কেউ শুনে রীতিমতো স্তম্ভিত।
চিন্ময় নিজে এতটাই বিপর্যস্ত যে কিছু বলতে চাইলেন না। শুধু বললেন, “আমাকে আজ ছেড়ে দিন।” আর সুজন? তাঁকে ধরা হলে অবাক করা মন্তব্য পাওয়া গেল। বলে দিলেন, “এ বার নতুন কোচ। নতুন অধিনায়ক। সব কিছুই নতুন হচ্ছে। ট্রেনার নির্বাচনেও তাই নতুনত্ব আনা হচ্ছে!” কিন্তু কারণটা কী? এ বার আরও অদ্ভুত জবাব, “কারণ আবার কী? চিন্ময় আট বছর ট্রেনার ছিল। এখন অনূর্ধ্ব পঁচিশে কাজ করুক। পরের বছর আবার সিনিয়র টিমের সঙ্গে থাকবে। অসুবিধেটা কোথায়? আর ওর মায়ের অসুস্থতার জন্য কর্নাটকে যেতে পারেনি। সিএবি ওঁর মায়ের শরীর নিয়ে চিন্তিত। তাই ওকে হাল্কা কাজ দেওয়া হচ্ছে।”
যা শুনে বাংলার ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ অবাক হয়ে যাচ্ছেন। প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন, নতুন ক্যাপ্টেন, নতুন কোচের কথা বলছেন সিএবি সচিব। তা হলে নতুন সচিবও বা আনা হবে না কেন? যখন বারবার বিতর্ক বাঁধছে সুজনকে নিয়ে? বলা হচ্ছে, চিন্ময়কে যদি সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছেই ছিল, তা হলে আগে কেন সেটা বলা হল না? চিন্ময়ের কাছে তো অন্য রাজ্য থেকে প্রস্তাব ছিল। জানা গেল, সুজনকে এ দিন সেটা বলেওছিলেন চিন্ময়। কিন্তু সিএবি সচিব তাতে কর্ণপাত করলে তো? ক্রিকেটমহলের বক্তব্য, অহেতুক এই অপমানের কোনও দরকার ছিল না। ব্যাপারটা ভাল ভাবেও মেটানো যেত।
রাতে পুরো ঘটনা শুনে এক সিএবি কর্তা বলেও দিলেন, “রোজ লোকে গালিগালাজ করছে সচিবের জন্য। আমরা কী করব? প্রেসিডেন্ট যদি কিছু করেন। তবে কপাল ভাল, আর মাত্র একটা বছর ওর মেয়াদ বাকি!” |
|
|
|
|
|