পুরসভায় পালাবদল হয়ে গিয়েছে। নতুন পুরপ্রধান হয়েছেন কংগ্রেসের রবিশঙ্কর পাণ্ডে। এখন প্রশ্ন বিরোধী দলনেতা কে হবে? পদটি কি বামফ্রন্টের দখলেই থেকে যাবে? নাকি নতুন সমীকরণে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর ওই পদে বসবেন? এই নিয়েই জোর আলোচনা চলছে রেলশহর খড়্গপুরে।
এই পরিস্থিতিতে দলের পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে জরুরি বৈঠকে বসছে তৃণমূল। কাল, বৃহস্পতিবার দলের খড়্গপুর শহর কমিটির ওই বৈঠকে থাকবেন দলীয় কাউন্সিলররা। বিরোধী দলনেতার পদ কি তৃণমূল নেবে? দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “এ নিয়ে আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত হবে।”
তৃণমূল সূত্রে অবশ্য খবর, অধিকাংশ কাউন্সিলর চাইছেন, বিরোধী দলনেতার পদটি তৃণমূল নিক। তাহলে পদাধিকার বলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য হতে পারবেন পুরসভার বিরোধী
দলনেতা। এতে পুরসভার কাজকর্মে নজর রাখা সম্ভব হবে। তৃণমূলের এক কাউন্সিলরের কথায়, “পালাবদলের পর পদটি আমাদেরই প্রাপ্য। এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়ার কোনও প্রশ্ন নেই।”
২০১০ সালে পুর-নির্বাচনে জিতে তৃণমূল যখন বোর্ড গড়েছিল, তখন বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। ফলে হিসেব মতো বিরোধী দলনেতার পদটি পেয়েছিল বামেরা। ফ্রন্টের সিদ্ধান্তে এই পদে বসেছিলেন সিপিএম কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডল। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পুরবোর্ডের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে কংগ্রেস। তারপরও বিরোধী দলনেতার পদে ছিলেন অনিতবরণবাবুই। কারণ, সংখ্যায় এগিয়ে থাকলেও কংগ্রেস পদটির জন্য দাবি করেনি।
কেন? দলীয় সূত্রে খবর, কংগ্রেসের লক্ষ্য ছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরের সমর্থন নিয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করা। তাই বিরোধী দলনেতার বিষয়টি তারা গুরুত্ব দেয়নি। সোমবারের ভোটাভুটির পর ফের রেলশহরের পুরসভা কংগ্রেসের দখলে এসেছে। ১৬ জন কাউন্সিলরের সমর্থন রয়েছে নতুন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডের প্রতি। এর মধ্যে ১৪ জন কংগ্রেসের, এক জন বিজেপির ও এক জন নির্দল। আর তৃণমূলের রয়েছে ১৪ জন কাউন্সিলর। হিসেব মতো বিরোধী দলনেতার পদটি তাদেরই পাওয়ার কথা। তৃণমূল চাইলে এই পদ ছাড়তে বামেরাও রাজি। অনিতবরণবাবু বলছেন, “এখানে আমাদের চাওয়া, না চাওয়ার কিছু নেই। আসন সংখ্যার নিরিখে তৃণমূলেরই পদটি প্রাপ্য। তৃণমূল আবেদন করলেই আমি ওই পদ ছেড়ে দেব।”
এখন প্রশ্ন, তৃণমূল যদি পদটি নেয়, তাহলে বিরোধী দলনেতা কে হবেন? দলীয় সূত্রে খবর, দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী। সোমবারের ভোটাভুটিতে তাঁকেই পুরপ্রধান পদপ্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তাছাড়া, আদালতের নির্দেশে গত দশ মাস তিনিই ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। শেষমেশ কী হয় তা জানতে তৃণমূলের বৃহস্পতিবারের বৈঠকের দিকেই নজর রেলশহরের।
|