যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে মাসখানেক আগে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের দু’পাশের অনেকটা জায়গায় পার্কিং নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। মল্লিকবাজার ও ইলিয়ট রোড এলাকায় শুরু হয়েছে জোর নজরদারিও। অথচ, সেখানেই রাস্তা আটকে চলছে সার দিয়ে দাঁড়ানো পুলিশের গাড়ি ধোয়া, রং ও মেরামতির কাজ।
বহু দিন ধরেই মল্লিকবাজার এলাকায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মেরামতির কাজ হয়। ওই রাস্তার পাশে আর গাড়ি রাখা যাবে না বলে মাসখানেক আগেই ফরমান জারি করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশি টহলদারি রয়েছে সেখানে। রাস্তায় গাড়ি দাঁড়ালেই জরিমানা করা হচ্ছে। কখনও ৮০০ টাকা তো কখনও ১০০০ টাকা। মল্লিকবাজার এলাকায় আর কোনও গাড়িই দাঁড়াতে পারছে না। এই ব্যবস্থায় এলাকার যানজট অনেকটাই কমেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। কিন্তু তাঁদেরই আবার অভিযোগ, যেখানে অন্যেরা গাড়ি রাখলে জরিমানা করা হচ্ছে, সেখানেই নিজেদের গাড়ি সার দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখছে পুলিশ। এটি বন্ধ হওয়া দরকার।
এলাকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বহু দিন ধরেই ওই অঞ্চলে গাড়ি মেরামতির কাজ করা হয়। আগে সেখানে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করানোর জন্য পার্কিং ফি-ও নেওয়া হত। ওই অঞ্চলে মেরামতির কাজ করাতে হলে রাস্তার উপরে গাড়ি দাঁড় করানো ছাড়া আর কোনও উপায়ও নেই বলে জানান গাড়ি মেরামতির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। |
মল্লিকবাজার এলাকায় রাস্তার ধারে পুলিশের গাড়ি। ছবি: রণজিৎ নন্দী |
নতুন এই নিয়মের জেরে তাঁদের ব্যবসায় খুবই ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ। সঙ্গে তাঁদের আরও অভিযোগ, পার্কিং নিষিদ্ধ করে সেই অঞ্চলে নিজেরাই সার দিয়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মেরামতি করাচ্ছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ‘কলকাতা পুলিশ’ লেখা একাধিক গাড়ি সার দিয়ে রাস্তার পাশে ও ফুটপাথে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কয়েকটি গাড়ি রং করা হচ্ছে। কিছু গাড়ির নীচে শুয়ে মিস্ত্রিরা মেরামতি করছেন। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপো থেকে একটু দূরে একটি গ্যারাজের সামনে সার দিয়ে প্রায় ২০-২৫টি গাড়ি মেরামতি চলছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু দিনে নয়, রাতেও বেশ কিছু গাড়ি ওই এলাকায় দাঁড় করিয়ে রাখে পুলিশ। প্রায় দিন তিনেক ধরে এক-একটি গাড়ি রাস্তার উপরে বা ফুটপাথে রেখে রং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসীদের আরও অভিযোগ, সকালবেলায় পুলিশের গাড়ি রাস্তার উপরে দাঁড় করিয়ে ধোয়া হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, বিষয়টি একাধিক বার লালবাজারে পুলিশকর্তাদের নজরে আনা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি।
মল্লিকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির তরফে শ্যামসুন্দর সিংহ বলেন, “আমরা লালবাজার-সহ সব জায়গায় প্রায় ১৫০০ মানুষের স্বাক্ষর করা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। তবুও পুলিশ নির্বিকার।”
এ নিয়ে কী বলছেন লালবাজারের কর্তারা? কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ আদক বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” |