অপরিণত মাছ বিক্রি করতে না পারলে ধরার প্রবণতা কমবে মৎস্যজীবীদের। তাই মৎস্য ব্যবসায়ীদের ছোট মাছ না কেনার পরামর্শ দেওয়া হল মৎস্য সংরক্ষণ কর্মশালায়।
বিশ্বায়নের যুগে নির্বিচারে মৎস্যশিকার চলছে। উন্নত প্রযুক্তির দুনিয়ায় সমুদ্র দূষণও বাড়ছে দিন দিন। মাঝে পড়ে মাছেদের অস্তিত্ব সঙ্কটে। জাতিসঙ্ঘের ‘ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (ফাও)-এর এক সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। কিছু প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। এই অবস্থায় দেশ জুড়ে সমুদ্রে মাছ সংরক্ষণ ও সুষম মাছ শিকার পদ্ধতির প্রচারে উদ্যোগী হয়েছে ভারত সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের অধীনস্থ সামুদ্রিক পণ্য রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমপিইডিএ) ও নেট ফিশ। এদের উদ্যোগে এবং মৎস্য দফতরের সহযোগিতায় মঙ্গলবার কাঁথিতে একটি কর্মশালা হয়। মৎস্য দফতরের মীনভবনে আয়োজিত ‘চিরস্থায়ী মৎস্যায়ন কর্মশালা” শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমপিইডিএ-র ডেপুটি ডিরেক্টর কে ভি প্রেমদেভ, নেটফিশের রাজ্য কো-অর্ডিনেটর অতনু রায়, ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনীর কমান্ড্যান্ট অভিজিৎ দাশগুপ্ত, মৎস্য দফতরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ প্রমুখ। |
কর্মশালায় সুরজিৎবাবু বলেন, “ইলিশের ব্যাপারটা বলতে পারি। খোকা ইলিশ ধরতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মৎস্যজীবীরা তা মানছেন না। এমনকী ছোট ইলিশ বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে লাভ হয়নি।” কর্মশালায় উপস্থিত মৎস্যজীবী ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে কে ভি প্রেমদেভ বলেন, “লোভে পড়ে মৎস্যজীবীরা ছোট ইলিশ বা ছোট পমফ্রেট ধরলেও মৎস্য ব্যবসায়ীরা যেন তা না কেনেন। ছোট আকারের মাছ বিক্রি করতে না পারলে মৎস্যজীবীদের মধ্যে ধরার প্রবণতা অনেকটাই কমবে।” দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণবকুমার কর ও সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস প্রস্তাব দেন, “সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য ও তাদের বাসস্থান সুরক্ষিত করার জন্য সমুদ্রে মৎস্যশিকার নিষিদ্ধ করার সময়সীমা (১৫ মার্চ থেকে ৩১ এপ্রিল) বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হোক।” সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক লক্ষ্মীনারায়ণ জানা দাবি করেন, “ওই ৯০ দিনে মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।” নেটফিশের রাজ্য কো-অর্ডিনেটর অতনু রায় জানান, কর্মশালার সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামী ১৬ অগস্ট কলকাতায় রাজ্যস্তরে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর কেন্দ্রীয়স্তরে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন নীতি তৈরি হবে। |