ভোটে জিতেও গ্রামে ফিরতে পারছেন না প্রার্থীরা, মঙ্গলবার এক মহিলা-সহ তিন জয়ী পঞ্চায়েত প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে এমনই অভিযোগ জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। ওই প্রার্থীদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
কংগ্রেসের ওই তিন প্রার্থী হলেন কুলিয়া-নূরপুরের বাসিন্দা মিনতি মান্ডি, বনগ্রামের বাসিন্দা নবকুমার মালিক ও খুঁইয়ের পাড়ের বাসিন্দা শেখ সালাম আলি। মিনতিদেবী নাড়ুগ্রাম ও অন্য দু’জন নতু গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য। |
এসপি-র সঙ্গে দেখা করার পরে মানসবাবু সাংবাদিকদের বলেন, “তৃণমূলের অত্যাচারে আমাদের তিন জয়ী প্রার্থী ও আরও কুড়ি জন ঘরছাড়া। তাঁদের গ্রামে ফিরলে প্রাণে মেরে ফেলা এবং ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পদত্যাগ করতেও চাপ দেওয়া হচ্ছে।” রায়নার জেলা কংগ্রেস (গ্রামীণ) ব্লক সভাপতি শেখ কুতুবুদ্দিনও এ দিন এসপি অফিসে দাঁড়িয়ে বলেন, “মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে ফল বেরোনো পর্যন্ত আমাদের নেতা, কর্মী, সমর্থক মিলিয়ে প্রায় ২৫-৩০ জন ঘরছাড়া। যাঁরা ভোটে জিতেছেন তাঁদেরও প্রতিদিন পদত্যাগ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, “বারবার থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েও আমরা ঘরে ফিরতে পারিনি। তাই মানসবাবুর আসার খবর পেয়ে তাঁকে নিয়েই এসপির সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।”
জয়ী মিনতিদেবীর অভিযোগ, “মনোনয়ন পেশ করার পরেই আমাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল তৃণমূলের লোকেরা। ফল বের হবার পরে পদত্যাগ করতেও হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে গ্রামে ঢুকতে পারছি না।” অন্য দুই প্রার্থী নবকুমার ও শেখ সালামও মিনতিদেবীর সুরেই তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, “শুধু পুলিশই নয়। ব্লক প্রশাসনও আমাদের কথায় কান দিচ্ছে না।” সরাইটিকর পঞ্চায়েতে ভোটে দাঁড়ানো কংগ্রেস প্রার্থী সোমনাথ রায় বলেন, “বর্ধমান ১ ব্লকে তৃণমূলের লোকেরা আমাকে বাড়ি ফিরতে দিচ্ছে না। ভোট মিটে যাবার পরেও তাই বাড়ির বাইরে থাকতে বাধ্য হচ্ছি।”
তৃণমূলের রাজ্য নেতা তথা জেলার অন্যতম অবজার্ভার অলোক দাস অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের লোকেরা বিরোধী বিজয়ী প্রার্থীদের গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না, এই অভিযোগ ঠিক নয়। আসলে ওঁদের এলাকার মানুষই গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না। ওঁদের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যাও রয়েছে। আমরা ঘটনার দিকে নজর রাখছি।”
পুলিশ সুপার সৈয়দ হোসেন মির্জা বলেন, “মানসবাবু এসেছিলেন। তিন জন কংগ্রেসের নির্বাচিত প্রার্থী গ্রামে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগও করেছেন। আমি রায়না থানাকে ঘটনাটির খবর নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” |